অভিমান ভুলে নাজমুলই থাকছেন টেস্ট অধিনায়ক

প্রকাশ : ০২ নভেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া প্রতিবেদক

গত বছরের জুনে কিছুটা অভিমানে বাংলাদেশ টেস্ট দলের অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এরপর আজ অবধি টাইগাররা আর টেস্ট ম্যাচ খেলেনি। ঘটনাপ্রবাহের পর শান্তর অভিমানের মেঘ গলাতে পেরেছে বিসিবি। ফলে সিদ্ধান্ত পাল্টে টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যেতে রাজি হয়েছেন তিনি। গতকাল শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বিসিবি। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চলমান ২০২৫-২৭ সালের চক্রের শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়কের ভূমিকায় দেখা যাবে ২৭ বছর বয়সি শান্তকে। এই ঘোষণার মাধ্যমে টেস্ট দলের নেতৃত্ব ঘিরে সাম্প্রতিক জল্পনা-কল্পনারও অবসান ঘটল।

২০২৩ সালে প্রথমবারের মতো টেস্ট দলের নেতৃত্ব পান শান্ত। এখন পর্যন্ত তিনি ১৪টি টেস্ট ম্যাচে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার অধীনে বাংলাদেশ দল পাকিস্তানের বিপক্ষে ওদেরই মাঠে দুটি টেস্ট জিতেছে। সব মিলিয়ে নাজমুলের নেতৃত্বে ৪ টেস্টে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ, ড্র করেছে ১টি, হেরেছে ৯টি। গত বছর তিন সংস্করণেই বাংলাদেশের অধিনায়ক ছিলেন নাজমুল। টি-টোয়েন্টিতে ব্যাট হাতে সময় ভালো না যাওয়ায় এ বছরের শুরুতে সেই সংস্করণের নেতৃত্ব থেকে নিজেই সরে যান। এরপর গত জুনে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের আগে হুট করেই নাজমুলকে ওয়ানডে নেতৃত্ব থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়। যথাযথভাবে না জানিয়ে তার কাছ থেকে ওয়ানডে দলের অধিনায়কত্ব কেড়ে নেওয়ায় অভিমান থেকেই পদত্যাগ করেছিলেন তিনি। তবে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে শান্ত ও বোর্ডের মধ্যে সেই অস্বস্তি কেটে গেছে। দুই পক্ষই একমত হয়েছে যে, তিনি ক্রিকেটের সবচেয়ে কুলীন সংস্করণে বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দিতে থাকবেন। অধিনায়কত্ব নেওয়ার পর থেকে শান্ত এখন পর্যন্ত বাংলাদেশকে ১৪টি টেস্টে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এই সময়ে বাংলাদেশ টেস্ট ক্রিকেটে ধীরে ধীরে উন্নতির পাশাপাশি প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব দেখিয়েছে। চারটি জয়ের সঙ্গে একটি ড্র করেছে তারা, হেরেছে বাকি নয়টিতে।

বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, এই সিদ্ধান্ত শান্তর নেতৃত্বগুণ ও বাংলাদেশের লাল বলের ক্রিকেট নিয়ে তার দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি বিসিবির আস্থার প্রতিফলন, ‘শান্ত টেস্ট ক্রিকেটে স্থির মনোভাব, প্রতিশ্রুতি ও গভীর বোঝাপড়া দেখিয়েছে। তার নেতৃত্বে আমরা দলের মধ্যে উন্নতি ও আত্মবিশ্বাস লক্ষ করেছি। এই বোর্ড বিশ্বাস করে, নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্রে আমাদের জন্য ইতিবাচক হবে।’ নিজের অনুভূতি জানিয়ে শান্ত বলেন, ‘বাংলাদেশ টেস্ট দলের নেতৃত্ব ধরে রাখার সুযোগ পেয়ে আমি সত্যিই সম্মানিত বোধ করছি। আমার অধিনায়কত্বে যে আস্থা ও বিশ্বাস বোর্ড দেখিয়েছে, সেজন্য আমি গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। টেস্ট ক্রিকেটে নিজের দেশকে নেতৃত্ব দেওয়া আমার জীবনের সবচেয়ে বড় গর্ব। আমার ওপর যে দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে, তা যথাসাধ্যভাবে পালনের চেষ্টা করব।’ তিনি যোগ করেন, ‘এমন একটি দলকে নেতৃত্ব দেওয়া আনন্দের, যাদের মধ্যে এত প্রতিভা ও সম্ভাবনা আছে। আমি বিশ্বাস করি, সামনে আমাদের জন্য একটি দারুণ ও ইতিবাচক মৌসুম অপেক্ষা করছে। আমরা কয়েক দিন পর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের জন্য মুখিয়ে আছি, যা বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটের জন্য ব্যস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ সূচির সূচনা করবে।’

সিলেট টেস্ট দিয়ে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শুরু হতে যাচ্ছে। টেস্টে দলের সত্যিকারের ব্যস্ততা আগামী বছর। মার্চ-এপ্রিলে দেশের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ, জুলাই-অগাস্টে জিম্বাবুয়ে সফর, অগাস্টে অস্ট্রেলিয়া সফর, অক্টোবর-নভেম্বরে দেশের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ ও নভেম্বর-ডিসেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর। সব মিলিয়ে আগামী বছর ১০ টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ।