
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) অন্দরে চলছে নীরব আলোচনার ঝড়। শারজায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের পর থেকে এই ঝড় আরও জোরালো হয়েছে। কারণ, দলের সেরা উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহান দলে থাকা সত্ত্বেও কিপিং করতে পারেননি। না সেই সিরিজে, না এশিয়া কাপে। এখন গেল এক বছরের সব বিতর্কিত সিদ্ধান্ত খতিয়ে দেখছে বোর্ড। কোচ, অধিনায়ক ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে যুক্তি খোঁজা হবে বলে জানা গেছে। শারজা টি-টোয়েন্টিতে সোহান দলে, কিন্তু কিপিং করেন জাকের আলী অনিক (ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক)। একই দৃশ্য এশিয়া কাপে। প্রাথমিক অভিযোগ আসে সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের সিদ্ধান্ত। কিন্তু জাকের নিজেই সিদ্ধান্ত নেন- ‘স্টাম্পের পেছন থেকে দল ভালো পরিচালনা করব’। সালাউদ্দিন বিরোধিতা করেন, প্রধান কোচ ফিল সিমন্সকে বলেন সোহানকে দিতে। সিমন্স ‘অধিনায়কের সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ নয়’ নীতিতে অটল। সোহানের ক্ষোভ কোচিং স্টাফকে বলেন, ‘আমি ২৬০ ম্যাচ খেলেছি, কোনোদিন কিপিং করতে দেখেননি?’ সিরিজ জিতলেও প্রশ্ন রয়ে গেল সেরা কিপারকে বাদ দেওয়ার যুক্তি কী? এদিকে ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে পার্টটাইমারের ভরসা, সুপার ওভারে হার দ্বিতীয় ওয়ানডে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের দরকার ৫ রান, ১ ওভার। মিরপুরের স্পিন উইকেটে ৪ বিশেষজ্ঞ স্পিনারের ওভার শেষ! শেষ ওভার পার্টটাইমার সাইফ হাসানকে। অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ মুস্তাফিজের ওভার হিসাবে ভুল করেন। সুপার ওভারে হার। ব্যাটার নির্বাচনেও প্রশ্ন। উল্টো উদাহরণ, আবুধাবিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সাইফ ৪ ওভারে ৬ রানে ৩ উইকেট। ৩৮তম ওভারের পর আর বোলিং পাননি! ঠিক এমনই প্রশ্ন উঠেছে রিশাদ হোসেনকে ৯ নম্বরে নামানো নিয়েও। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেই ম্যাচে রিশাদ ঝড় তুলেছিলেন ১৪ বলে ৩৯ রানে। অথচ তাকে যদি নাসুম আহমেদের আগে নামানো হতো, ফলটা হয়তো ভিন্ন হতে পারত। নাসুম সেদিন ২৬ বল খেলে ১৪ রান করেন। এসব সিদ্ধান্তের পেছনে থাকা যুক্তি জানতে এখন আগ্রহী বিসিবি। কারণ বোর্ডের ভেতরে বিশ্বাস করা হচ্ছে, জাতীয় দলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় এখন দরকার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি। জানা যায়, এ প্রসঙ্গে এক অলিখিত সিদ্ধান্ত হয়েছে জাতীয় দলের সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়গুলোতে সরাসরি নজর রাখবেন চারজন সাবেক ক্রিকেটার। এতে বোর্ডের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল ছাড়াও রয়েছেন সহ-সভাপতি ফারুক আহমেদ, খালেদ মাসুদ পাইলট ও আব্দুর রাজ্জাক। তারা দলের ভেতরের বিতর্ক ও সিদ্ধান্ত প্রক্রিয়া পর্যালোচনা করবেন। বিসিবি এখন দেখবে, এই পদক্ষেপ কতটা কার্যকর হয় জাতীয় দলের সিদ্ধান্তের স্বচ্ছতা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে।