মেসির নৈপুণ্যে বছরের শেষ জয় আর্জেন্টিনার
প্রকাশ : ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
ক্রীড়া ডেস্ক

৩৮ বছর বয়সেও তারুণ্যে ভরপুর লিওনেল মেসি। এখনও তার পায়ের যাদুতে মোহিত গোটা ফুটবল বিশ্ব। আরও একবার তার সেই চিরচেনা ম্যাজিক দেখালেন মহাতারকা। নিজে একটি গোল করলেন, আরেকটি করালেন। তাতে বছরের শেষ আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে জয় পেয়েছে আর্জেন্টিনা। গত শুক্রবার লুয়ান্ডায় আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে নামেভারে অনেক পিছিয়ে থাকা স্বাগতিক অ্যাঙ্গোলাকে ২-০ গোলে হারিয়েছে বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। প্রথমার্ধের শেষদিকে মেসির পাস ধরে জাল কাঁপান লাউতারো। আর দ্বিতীয়ার্ধের শেষদিকে লাউতারোর কাছ থেকে বল পেয়ে লক্ষ্যভেদ করেন মেসি। এই প্রীতি ম্যাচ খেলে ২০২৫ সাল শেষ করল আলবিসেলেস্তেরা। অ্যাঙ্গোলার স্বাধীনতা প্রাপ্তির ৫০তম বার্ষিকী উদযাপনের অংশ হিসেবে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়। ১৯ বছর আগে একবার আফ্রিকার দেশটির মুখোমুখি হয়েছিল আর্জেন্টিনা। ২০০৬ সালের মে মাসে ইতালির সালের্নোয় হওয়া সেই প্রীতি ম্যাচেও একই ব্যবধানে জিতেছিল তারা।
বেশিরভাগ সময় বল দখলে রাখলেও খেলার নাটাই ধরতে বেশ সময় লাগে আর্জেন্টিনার। গোছানো আক্রমণে গড়ে ধীরে ধীরে আক্রমণে উঠলেও বেশ অচেনা দেখায় তিনবারের বিশ্বকাপজয়ীদের। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের ৮৯ নম্বরে থাকা অ্যাঙ্গোলাও একপেশে হতে দেয়নি লড়াইটি। ম্যাচের ২১তম মিনিটে সুবর্ণ সুযোগ আসে ৩৮ বছর বয়সি মেসির সামনে। লাউতারোর কাছ থেকে ডি-বক্সে যখন পাস পান, তখন তার সামনে বাধা কেবল অ্যাঙ্গোলার গোলরক্ষক। তবে ফাঁকি দিতে পারেননি তিনি। তার বাঁ পায়ের কোণাকুণি শট ঝাঁপিয়ে কর্ণারের বিনিময়ে রক্ষা করেন হুগো মার্কেস। ৩৮তম মিনিটে আবার অভিজ্ঞ ফরোয়ার্ড মেসি পৌঁছে যান বিপজ্জনক জায়গায়। নিজেদের অর্ধ থেকে আক্রমণে ওঠার পর ডি-বক্সে ফাঁকায় তাকে বল দেন থিয়াগো আলমাদা। কিন্তু বেশ কাছ থেকে তার ডান পায়ের দুর্বল শট চলে যায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে।
হতাশা সামলে রেকর্ড আটবারের ব্যালন ডি-অর জয়ী মেসির মুখে হাসি ফোটে পাঁচ মিনিট পর। মাঝবৃত্তের কাছ থেকে তাকে পাস দেন জিওভানি লো সেলসো। তিনি দেখেশুনে গড়ানো বল বাড়ান সামনে। দ্রুত ডি-বক্সে ঢুকে ডান পায়ের শটে গোল করেন স্ট্রাইকার লাউতারো। মার্কেসের দুই পায়ের ফাঁক দিয়ে বল জড়ায় জালে। আর্জেন্টিনা লিড নিয়ে বিরতিতে যাওয়ার আগে অ্যাঙ্গোলাও ছেড়ে কথা বলেনি। ম্যাচের প্রথম ভালো সুযোগটি তৈরি করে তারাই। দ্বাদশ মিনিটে কর্নারের পর চিকো বানজার শট ঝাঁপিয়ে রুখে দেন জেরোনিমো রুলি। ২৮তম মিনিটে মেসি বল হারানোর পর জিটো লুভুম্বোর দূর থেকে নেওয়া শট আর্জেন্টিনার গোলরক্ষকের মাথাব্যথার কারণ হয়নি। আট মিনিট পর ডি-বক্সের ভেতর থেকে টো কার্নেইরোর প্রচেষ্টা চলে যায় ক্রসবারের উপর দিয়ে। ম্যাচের ৬৬ শতাংশ সময় বল পায়ে রাখা আর্জেন্টিনা গোলমুখে আটটি শট নিয়ে লক্ষ্যে রাখে তিনটি। অন্যদিকে, গোলপোস্টে অ্যাঙ্গোলার নেওয়া সাতটি শটের দুটি ছিল লক্ষ্যে।
বিরতির পরও একই ধাঁচে খেলা চলে। আর্জেন্টিনা গুছিয়ে আক্রমণে যেতে চেষ্টা করে এবং অ্যাঙ্গোলা পাল্টা আক্রমণের ওপর নির্ভর করে এগোতে থাকে। ৫২তম মিনিটে মেসি আরেকবার ব্যর্থ হন সুযোগ কাজে লাগাতে। তার ভলি নিশানার ধারে কাছেও ছিল না। ৮২তম মিনিটে অবশ্য মেসিকে আর আক্ষেপ করতে হয়নি। আর্জেন্টিনার হয়ে ১১৫তম গোলের দেখা পান তিনি। অ্যাঙ্গোলার রক্ষণভাগ তার পায়ে থাকা বল পুরোপুরি বিপদমুক্ত করতে ব্যর্থ হলে পেয়ে যান লাউতারো। তিনি ডি-বক্সে খুঁজে নেন মেসিকেই। প্রথম ছোঁয়ায় বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে জায়গা বানিয়ে জোরাল শটে লা পুল্গা পরাস্ত করেন বদলি গোলরক্ষক নেবলুকে। চার মিনিট পর মেসিকে উঠিয়ে নেওয়া হয়। ২০২৬ বিশ্বকাপ সামনে রেখে স্কালোনির পরীক্ষা নিরীক্ষার অংশ হিসেবে তার বদলি হিসেবে নামা হোয়াকিন পানিচেলির পাশাপাশি এই ম্যাচে আর্জেন্টিনার জার্সিতে অভিষেক হয়েছে মোট চারজনের। বাকিরা কেভিন মাক আলিস্তার, মাক্সিমো পেরোনে ও জিয়ানলুকা প্রেস্তিয়ানি।
ডিফেন্ডার কেভিন হলেন মিডফিল্ডার আলেক্সিস মাক আলিস্তারের ভাই। তিনি নামেন ৫৯তম মিনিটে। ৮৫তম মিনিটে আলেক্সিস বদলি হওয়ার আগে দুজন একসঙ্গে ছিলেন মাঠে।
