ইমন-লিটনের ব্যাটে সমতায় ফিরল বাংলাদেশ
প্রকাশ : ৩০ নভেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
ক্রীড়া প্রতিবেদক

টি-টোয়েন্টি সংস্করণে আজ-কাল ১৭১ রানের টার্গেট খুব কঠিন কিছুনা। কিন্তু সিরিজের প্রথম ম্যাচে ব্যাটিং ব্যার্থতায় হেরেছিল লাল সবুজ দল। তাই শঙ্কাও ছিল টাইগার শিবিরে। তবে অধিনায়ক লিটন দাস ও ও পারভেজ হোসেন ইমনের ব্যাটে সব শংসয় উড়িয়ে দারুন এক জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। ৪ উইকেটের এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-১ সমতা ফিরিয়েছে স্বাগতিকরা।
আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৭০ রানের চ্যালেঞ্জিং পুঁজি পায় আয়ারল্যান্ড। জবাবে ১৭১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৬ উইকেট হারিয়ে দুই বল হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছে বাংলাদেশ।
বাঁচা-মরার ম্যাচে আইরিশ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে নেমে শুরুটা দারুন করেছিল বাংলাদেশ দল। ইনিংসের প্রথম ওভারের শেষ দুই বলে চার ও ছক্কা হাঁকান ওপেনার পারভেজ হোসেন। পরের ওভারে মার্ক অ?্যাডায়ারের ওভারে তিনি মারলেন আরেকটি চার। তবে ভালো শুরুটা বড় করতে পারলেন না তানজিদ হাসান। ১০ বলে ৭ রান করে রান আউটে কাটা পড়েন তিনি।
এরপর পারভেজ হোসেন ইমনের সঙ্গে জুটি গড়েন অধিনায়ক লিটন দাস। তাদের ব্যাটে লক্ষ্যে এগোচ্ছিল স্বাগতিকরা। কিন্তু ১০ম ওভারে পঞ্চম বলে দ্বিতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। দারুণ খেলতে থাকা পারভেজ হোসেনকে ফিরিয়েছেন গ্যারেথ ডেলানি। তার বলে দলীয় ৮৬ রানে জর্জ ডকরেলের তালুবন্দি হয়ে মাঠ ছাড়েন ইমন। তার আগে ২৮ বলে ৪৩ রান করেন তিনি। এরপর সাইফ হাসানকে নিয়ে দারুন জুটি গড়েন লিটন দাস। ক্যারিয়ারের ১৬ তম টি-টোয়েন্টি ফিফটি তুলে নেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। তবে আর বেশি দুর এগোতে পারেননি তিনি। ৩৭ বলে ৫৭ রান করে মার্ক অ্যাডাইরের বলে এলবিডব্লু হন লিটন। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি বাংলাদেশ অধিনায়ক। এরপর বিদায় নেন সাইফ হাসান। ১৭ বলে ২২ রান করেন তিনি।
লিটন-সাইফের বিদায়ের পর নতুন করে জুটি গড়েন তাওহীদ হৃদয় ও নুরুল হাসান সোহান। তবে আগের ম্যাচে প্রতিরোধ গড়ে ৮৩ রানে অপরাজিত থাকা হৃদয় এদিন মাত্র ৬ রানে সাজঘরে ফেরেন। সোহানও তার পথ ধরে ৫ রানে বিদায় নেন। তবে হতাশ করেননি সাইফ উদ্দিন। মাত্র ৭ বলে ১৭ রান নিয়ে বাংলাদেশকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন এই অলরাউন্ডার।
গতকাল শনিবার চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দারুণ সূচনা করে আয়ারল্যান্ড। ৪.১ ওভারেই দলকে ৫০ রান এনে দেন দুই ওপেনার পল স্টার্লিং ও টিম টেক্টর। টি-টায়েন্টিতে এই প্রথম বাংলাদেশের বিপক্ষে উদ্বোধনী জুটিতে ৫০ রান স্পর্শ করল আইরিশরা।
পঞ্চম ওভারের চতুর্থ বলে স্টার্লিংকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে প্রথম ব্রেক-থ্রু এনে দেন পেসার তানজিম হাসান সাকিব। ৩ চার ও ২ ছক্কায় ১৪ বলে ২৯ রান করেন আয়ারল্যান্ড অধিনায়ক স্টার্লিং। স্টার্লিং ফেরার পরও পাওয়ার প্লেতে ৭৫ রান তুলে আয়ারল্যান্ড। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে পাওয়ার প্লেতে এবারই সর্বোচ্চ রান তুলল আইরিশরা।
নবম ওভারে তৃতীয়বারের মত আক্রমণে এসে জোড়া উইকেট শিকার করেন স্পিনার মাহেদি হাসান। ঐ ওভারে দুই ভাই টিম টেক্টর ও হ্যারি টেক্টরকে শিকার করেন তিনি। ৪ চার ও ২ ছক্কায় টিম ২৫ বলে ৩৮ এবং আগের ম্যাচের হাফ-সেঞ্চুরিয়ান হ্যারি এবার থামেন ১১ রানে। নিজের চতুর্থ ও শেষ ওভারেও উইকেটের দেখা পান মাহেদি। স্টাম্পিং করে সাজঘরে ফেরান ব্যাটার বেন ক্যালিটজকে। ৯ বলে ৭ রান করেন তিনি।
১১তম ওভারে ১০৩ রানে চতুর্থ ব্যাটার হিসেবে ক্যালিটজ ফেরার পর আয়ারল্যান্ডকে লড়াকু সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন উইকেটরক্ষক লরকান টাকার ও জিওর্জি ডকরেল।
পঞ্চম উইকেটে ৪৪ বলে ৫৬ রান যোগ করেন তারা। ২১ বলে ১৮ রান করা ডকরেলকে থামিয়ে জুটি ভাঙ্গেন বাংলাদেশ পেসার মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন।
এরপর ইনিংসের শেষ ১০ বল থেকে ১১ রান তুলে আয়ারল্যান্ডকে ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৭০ রানের সংগ্রহ এনে দেন টাকার ও গ্যারেথ ডেলানি। ৪টি বাউন্ডারিতে ৩২ বলে ৪১ রান করে ইনিংসের শেষ ডেলিভারিতে রান আউট হন টাকার। ১টি ছক্কায় ৮ বলে ১০ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন ডেলানি। ৪ ওভারে ২৫ রান দিয়ে ৩ উইকেট শিকার করে বাংলাদেশের সেরা বোলার মাহেদি। এছাড়া তানজিম ও সাইফ উদ্দিন ১টি করে উইকেট নেন।
