যুব এশিয়া কাপ ফাইনাল

ভারতকে গুঁড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান

প্রকাশ : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া ডেস্ক

ক্রীড়াঙ্গণে ভারত আর পাকিস্তানের প্রতিদ্বন্দ্বিতা মানেই তীব্র উত্তেজনা আর রোমাঞ্চকর লড়াইয়ের ঝাঁজ। সে যে কোনো ইভেন্টে যে কোনো মঞ্চেই হোক না কেন। সর্বশেষ জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলাকে কেন্দ্র করে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বি দেশের মধ্যে যুদ্ধের পর এ লড়াই আরও তীব্র হয়েছে। কোনো টুর্নামেন্টে ভারত ও পাকিস্তানের অধিনায়ক পর্যন্ত হাত মেলান না। এমন পরিস্থিতির মধ্যে গতকাল রোববার দুবাইয়ে যুব এশিয়া কাপের ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের স্রেফ উড়িয়ে দিয়েছে পাকিস্তান। দাপুটে পারফরম্যান্সে তুলে নিয়েছে ১৯১ রানের বিশাল জয়।

অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপে দ্বিতীয়বার শিরোপার স্বাদ পেল পাকিস্তান। রেকর্ডের মালা গেঁথে ১৭২ রানের ইনিংস খেলেন সামির। সঙ্গে আহমেদ হুসাইনের ৫৬ রানের সৌজন্যে ৩৪৭ রান করে পাকিস্তান, যুব এশিয়া কাপের ফাইনালে যা সর্বোচ্চ। এই প্রতিযোগিতায় এর চেয়ে বেশি রান করতে পারেনি পাকিস্তান। পাহাড় টপকানোর চ্যালেঞ্জে মুখ থুবড়ে পড়ে ভারতের ব্যাটিং। সামিরের রানই করতে পারেনি টুর্নামেন্টের রেকর্ড শিরোপাধারীরা, গুটিয়ে যায় স্রেফ ১৫৬ রানে। সামিরের ৯টি ছক্কা ও ১৭টি চারে সাজানো ১১৩ বলের ইনিংসটি যুব ওয়ানডেতে পাকিস্তানের কোনো ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ। আগের সেরা ছিল শাহজাইব খানের ১৫৯। আর যুব এশিয়া কাপের ফাইনালেও এটি সবচেয়ে বড় ব্যক্তিগত ইনিংসের রেকর্ড। এমন পারফরম্যান্সের পর ফাইনালের সেরা সামির ছাড়া আর কে! এবারের এশিয়া কাপে এটা সামিরের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কারও ওঠে তারই হাতে। অবদান কম নয় বোলারদের, বিশেষ করে পেসার আলি রাজার। ৪২ রান খরচায় ৪ শিকার ধরেন তিনি। দুটি করে প্রাপ্তি মোহাম্মাদ সাইয়াম, আব্দুল সুবহান ও হুজাইফা আহসানের। আইসিসি একাডেমি মাঠে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা পাকিস্তান চতুর্থ ওভারে হারায় হামজা জহুরকে। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ২ ছক্কা ও ১ চারে ১৮ রান করেন তিনি। শুরুর সেই ধাক্কা সামাল দেয় দলটি সামির ও উসমান খানের ব্যাটে। দ্রুত রান তুলে ২৯ বলে ফিফটিতে পা রাখেন সামির। আরেক প্রান্তে উসমানও ছিলেন সাবলীল। কিন্তু তিনি ইনিংস বড় করতে পারেননি। তাকে ফিরিয়ে ৯২ রানের জুটি ভাঙেন খিলান প্যাটেল। এরপর হুসাইনকে নিয়ে ম্যাচের সবচেয়ে বড় জুটি গড়েন সামির। এই সময়ে ৭১ বলে সেঞ্চুরিতে পা রাখেন তিনি। অন্য প্রান্তে তাকে সঙ্গ দিয়ে যান হুসাইন। সামির ও হুসাইনের জুটির রান একশ স্পর্শ করে ৯০ বলে। কয়েক ওভার পর ৬৯ বলে ফিফটি করেন হুসাইন। এই দুজনের ১৩৭ রানের বন্ধনও ভাঙেন খিলান, হুসাইনকে ফিরিয়ে। তবে এক প্রান্ত ধরে রেখে রানের চাকায় দম দিয়ে যান সামির। ১০৫ বলে দেড়শ স্পর্শ ছোঁয়ার পরের ওভারে দিপেশকে চার বলের মধ্যে দুটি ছক্কা ও একটি চার হাঁকান তিনি। ওভারের পঞ্চম বলে স্লোয়ারে মিড-অনে ধরা পড়ে বাজে তার বিদায়ঘণ্টা। ঝড় তোলার মঞ্চ পেয়েও সেটা কাজে লাগাতে পারেননি পরের ব্যাটসম্যানরা। তাতে সাড়ে তিনশ করতে পারেনি পাকিস্তান।

পাকিস্তানের পাহাড়সম রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই অধিনায়ক আয়ুশ মাত্রেকে হারিয়ে ফেলে ভারত। বিস্ময় বালক বৈভাব সুরিয়াভানশি ঝড়ের আভাস দিয়ে ফিরে যান যান। দুই জনকেই বিদায় করেন আলি রাজা। এই দুই উইকেটের মধ্যে অ্যারন জর্জকে ফেরান সাইয়াম। এরপর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি ভারত।