বৃহৎ অন্ত্রের চিকিৎসায় দেখার জন্য কোলনস্কপি হচ্ছে কোলন বা বৃহদন্ত্রের একটি পরীক্ষা ও চিকিৎসা পদ্ধতি। পরিপাকতন্ত্রের অভ্যন্তরে কিছু যাচাই-বাছাই করা ও কিছু চিকিৎসায় এই পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। বৃহদান্ত্র, রেকটামের বিভিন্ন সমস্যা নির্ণয় করতে কোলনস্কপি পদ্ধতির ভূমিকা অপরিহার্য। এমনকি ক্যান্সারের মতো জটিল রোগ প্রাথমিক অবস্থায় নির্ণয় করা যায়। বর্তমান বিশ্বে এটি একটি জনপ্রিয় শনাক্তকরণ পরীক্ষা পদ্ধতি এবং অনেক ক্ষেত্রেই কোলনস্কপির মাধ্যমে চিকিৎসকরা ফলপ্রসূ চিকিৎসা করতেও সক্ষম হচ্ছেন, এমনকি অনেক ক্ষেত্রে সার্জারি এড়ানো সম্ভব হচ্ছে।
ধরন :
কোলনস্কপি মূলত দুই ধরনের।
শর্ট কোলনস্কপি ও
ফুল কোলনস্কপি।
কখন কলোনস্কপি পদ্ধতি প্রয়োগ করতে হয়?
মূলত রোগীর কলোরেক্টাল কোনো সমস্যা হলে যেমন-
পায়খানার সঙ্গে রক্ত যাওয়া
ঘন ঘন পায়খানা হওয়া।
পায়খানা ক্লিয়ার না হওয়া।
পায়খানার সঙ্গে আম বা মিউকাস যাওয়া।
ক্যান্সার আছে কি-না তা দেখার জন্য ৪০/৪৫ বছরের বেশি সবারই একবার কলোনস্কপি করা উচিত।
* যাদের নিকটাত্মীয়ের মধ্যে কোলন ক্যান্সারের ইতিহাস আছে।
* আলসারেটিভ কোলাইটিস এবং ক্রনস ডিজিজে রোগ নির্ণয়, রোগের ফলোআপের জন্য।
* ক্যান্সারের রোগীর পরবর্তী ফলোআপের জন্য।
* যাদের পলিপ সমস্যা আছে বা জন্মগত পলিওসিস সিন্ড্রোম আছে।
কোলনস্কপি টেস্ট করার আগে করণীয়
চিকিৎসক যদি রোগীর ইতিহাস ও অবস্থা দেখে মনে করে কোলনস্কপি পদ্ধতি প্রয়োগ করতে হবে, তাহলে কিছু করণীয় বলে দেন। রোগীর এসব প্রস্তুতি খুব ভালোভাবে পালন করতে হবে। কেননা, প্রস্তÍতি ভালো না হলে আসল রোগ নির্ণয়ে সমস্যা হতে পারে।
যেমন
পরীক্ষার আগের দিন নরম তরল খাবার খেতে হবে।
আঁশ জাতীয় খাবার, শাক-সবজি ও ফলমূল, গোশত খাওয়া যাবে না।
এরপর রাতে এবং পরীক্ষার দিন সকালে কিছু ওষুধ খাবে পায়খানা নরম করার জন্য।
দেখা যায়, রোগীদের পরীক্ষা ভীতি বা শঙ্কা এটি একটি সাধারণ বিষয়। প্রায় সব রোগীই এ পরীক্ষার কথা শুনলে ভয় পান। কিন্তু আপনি যদি নির্ভরশীল ও অভিজ্ঞ ডাক্তারের হাতে কলোনস্কপি করান, তাহলে ভয় পাওয়ার কারণ নেই। সাধারণত রোগীকে হালকা ঘুম পাড়িয়ে বা ব্যথার ওষুধ দিয়ে এ পরীক্ষা করা হয়। চাইলে সম্পূর্ণ অজ্ঞান করেও এই পরীক্ষা করা যায়। পরীক্ষা করার পর রোগী যখন সজাগ হন, তখন তিনি কোনো ব্যথাই অনুভব করে না। তাই ভয় না পেয়ে যাদের প্রয়োজন, তাদের উচিত সঠিক সময়ে পরীক্ষাটি করে নেওয়া।
কোলোনোস্কোপি হয়ে যাওয়ার পর অল্প সময়ের মধ্যেই রোগী স্বাভাবিক হতে শুরু করেন। সাধারণত সেদিন গাড়ি চালানো বা স্বাভাবিক কাজ না করে বিশ্রামে থাকতে হয়।
ডা. মোহাম্মদ তানভীর জালাল
সহযোগী অধ্যাপক
লেপারোস্কপিক ও জেনারেল সার্জন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা
চেম্বার : ১৯ গ্রীন রোড, এ. কে. কমপ্লেক্স
লিফট-৪, ঢাকা।
ফোন-০১৭১২৯৬৫০০৯