চারদিকে শিশু-বয়োজ্যেষ্ঠ সবাই ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত। পাশাপাশি ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপও বাড়ছে। জ্বর হলে মুখের রুচি নষ্ট হয়। কিছু খেতে ইচ্ছা করে না। তেতো ভাবের সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে শিশুরা কিছুই মুখে দিতে চায় না। অথচ জ্বর হলে চিকিৎসকরা বলেন, বেশি করে তরল ও পুষ্টিকর খাবার খেতে। নয়তো পানিশূন্যতা দেখা দেয়, দুর্বলতা বাড়ে। অনেক সময় জ্বর সেরে যাওয়ার পরও রুচি থাকে না, খাবারের স্বাদ পাওয়া যায় না। তাহলে করণীয় কী? জেনে নেয়া যাক, কোন ধরনের খাবার খেলে জ্বরে আক্রান্ত রোগীর রুচি বাড়বে।
মুরগির মাংস : মুরগির মাংসে প্রচুর পরিমাণে আমিষ থাকে। আমিষজাতীয় খাবার মুখের রুচি বাড়াতে ও শক্তি জোগাতে সাহায্য করে। মুরগির মাংস এমনিতে খেতে ইচ্ছা না করলে গরম স্যুপ করে লবণ, গোলমরিচ ইত্যাদি সহকারে খেতে চেষ্টা করুন। স্যুপ সহজপাচ্য খাবার, পুষ্টির সহজ উৎস।
মসলা : রান্নায় এলাচি, দারুচিনি, লবঙ্গ, গোলমরিচের গুঁড়া ব্যবহার করতে পারেন। এসব মসলার ঘ্রাণ মুখের রুচি বাড়ায়।
আমলকীর জুস : আমলকীতে প্রচুর ভিটামিন সি থাকে, যা মুখের রুচি বাড়াতে সহায়ক। আমলকী পানিতে ফুটিয়ে রস খেতে পারেন অথবা জুস করেও খেতে পারেন।
লেবুর শরবত : নিয়মিত দু’তিন গ্লাস লেবুর শরবত পান করুন। ভাতের সঙ্গেও লেবু চিপে খান, রুচি আসবে।
ফলের শরবত : ভিটামিন সি- সমৃদ্ধ ফল জাম্বুরা, আমড়া, আনারস, মাল্টার জুস বা গোটা ফল খেতে পারেন। এগুলো জ্বরের পর খুব দ্রুত রুচি ফেরায়।
দুগ্ধজাতীয় খাবার : দুধ বা দুগ্ধজাতীয় খাবার সহজে শক্তি জোগাতে ও মুখের রুচি বাড়াতে সহায়ক। মিল্কশেক, বাদামশেক, দই, লাচ্ছি জ্বরের পর রোগীকে খেতে হবে। এতে রুচি ফিরে আসার পাশাপাশি শরীরে পর্যাপ্ত পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করবে।
আদার রস : আদা ও দারুচিনি পানিতে ফুটিয়ে রস খেলেও মুখের রুচি বাড়ে।
আচার : খাবারের সঙ্গে একটু আচার বা জলপাই মেখে নিতে পারেন।
মানতে হবে আরও কিছু বিষয় : খাওয়ার মাঝে পানি পান করা যাবে না। চা, কফি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। লবণমেশানো কুসুম গরম পানি দিয়ে গড়গড়া করলেও মুখের তেতো ভাব কেটে যায়। তেজপাতা সিদ্ধ পানি দিয়ে দৈনিক দু’তিনবার কুলকুচি করুন। ফাস্ট ফুড খাবেন না। ধূমপান বর্জন করতে হবে।
উম্মে সালমা তামান্না
পুষ্টিবিশেষজ্ঞ, ইবনে সিনা
কনসালটেশন সেন্টার, বাড্ডা