নামাজে চোখের দৃষ্টি

ফাহিম মনোয়ার

প্রকাশ : ০২ আগস্ট ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

নামাজে আল্লাহকে কাছে পাওয়ার সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হলো, একনিষ্ঠ ও একাগ্রতার সঙ্গে নামাজ আদায় করা। একনিষ্ঠ ও একাগ্রতা তৈরি হয় দৃষ্টি সংযত রাখার মাধ্যমে। দাঁড়ানো অবস্থায় সিজদার জায়গায় দৃষ্টি রাখতে হবে, যেন পূর্ণ একাগ্রতা তৈরি হয়। দাঁড়ানো ও রুকু অবস্থায় সিজদার জায়গায় দৃষ্টি এবং বসা অবস্থায় শাহাদাত আঙুলের দিকে দৃষ্টি রাখা সুন্নত। এক বর্ণনায় এসেছে, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) নামাজে দাঁড়ানো এবং রুকু অবস্থায় সিজদার জায়গায় চোখের দৃষ্টি রাখতেন। আর বসা অবস্থায় শাহাদত আঙুলের দিকে দৃষ্টি রাখতেন।’ (নাসায়ি : ১১৬০, ১২৭৫)।

আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন নামাজে দাঁড়াতেন, তখন মাথাটা নিচু করে ঝুঁকিয়ে রাখতেন এবং দৃষ্টি নিক্ষেপ করতেন জমিনের দিকে।’ (মুসতাদরাকে হাকেম : ১/৪৭৯)। ইমাম আবু হানিফা (রহ.) বলেছেন, নামাজের সময় দাঁড়ানো অবস্থায় দৃষ্টি সিজদার দিকে থাকবে, রুকু অবস্থায় থাকবে দুই পায়ের মাঝখানে, বসা অবস্থায় থাকবে কোলের দিকে, সিজদা অবস্থায় থাকবে নাকের দিকে। (কিতাবুল মাবসুত, ১/২৮)। তবে কোনো কোনো ইমাম বলেছেন, পুরো নামাজের সময় দৃষ্টি থাকবে সিজদার দিকে।

নামাজে দাঁড়িয়ে এদিক-সেদিক তাকানো যাবে না। একাগ্রতা ধরে রাখতে হবে। পূর্ণ মনোযোগের সঙ্গে নামাজ আদায় করতে হবে। এদিক-সেদিক তাকানো শুভ লক্ষণ নয়। আয়েশা (রা.) বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞেস করেছি, নামাজে এদিক-সেদিক তাকানোর ব্যাপারে আপনি কী বলেন? জবাবে তিনি বলেছেন, এটি হলো শয়তানের ছোঁ মারা, যা দিয়ে শয়তান আল্লাহর বান্দাদের নামাজ থেকে অমনোযোগী ও উদাসীন করে ফেলে।’ (বোখারি : ৭১৮)। তবে কোনোভাবে কারও দৃষ্টি এদিক-সেদিক চলে গেলে নামাজ ভঙ্গ হবে না। (আদ দুররুল মুখতার, ১/৪৪৭)।

নামাজ অবস্থায় চোখ বন্ধ রাখা যাবে না। আল্লামা ইবনে হুমাম (রহ.) বলেন, ‘চোখ বন্ধ করে নামাজ পড়া মাকরুহ। কেননা, রাসুলুল্লাহ (সা.) চোখ বন্ধ করে নামাজ পড়তে নিষেধ করেছেন। সুন্নত হচ্ছে, সিজদার স্থানের দিকে তাকিয়ে নামাজ পড়া। নামাজে চোখ বন্ধ রাখলে এই সুন্নত ছুটে যায়।’ (বাদায়েউস সানায়ে, ১/২১৬)।