ঢাকা রোববার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

সুফিকোষ

সুফিকোষ

প্রেমই সৃষ্টির রহস্য। প্রেম স্রষ্টা ও সৃষ্টের একমাত্র বন্ধন। আত্মা প্রেমবলে পরমাত্মার নৈকট্য লাভ করে এবং অবশেষে তাহাতেই নিমজ্জিত হয়। আত্মার মধ্যে যে আকর্ষণ তাহা আধ্যাত্মিক জগতে প্রেম নামে অভিহিত।’ (তরীকত শিক্ষা, পৃষ্ঠা: ১৭)। প্রেম যখন এ পর্যায়ে পৌঁছে তখনই কোরআন মজীদের বাণী- ফা আইনামা তুওয়াল্লু ফা সাম্মা ওয়াজহুল্লাহু (যেদিকে তাকাও আল্লাহই চেহারা) আলকুরআন, ২: ১১৫) এর মর্মার্থ হৃদয়ঙ্গম সম্ভব হবে। মাওলানা রূমী (র.) এর ভাবশিষ্য আল্লামা ইকবালও প্রেমের জয়গান করেছেন। তিনি নিজে একজন মহাপণ্ডিত ব্যক্তি এবং দর্শনে ডক্টরেট ডিগ্রীধারী লোক হয়েও জ্ঞানের উধের্য় প্রেমকে স্থান দিয়েছেন। তিনি বলেন : জ্ঞান হলো কিতাবের পুত্র, প্রেম হলো কিতাবের জননী। প্রেমিক সম্রাট হজরত খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (রহ.)-এর প্রেমোক্তি বা প্রীতিবাণী: ‘আমার ক্ষুদ্র প্রাণে ভালবাসা নাই, যাহা দিয়া তোমাদের অন্তঃকরণের গভীরতা অনুমান করিতে সক্ষম হই। তোমরা এখন শিখাও, আমি এখন শিখি; দিন দিন প্রেম মার্গের উচ্চ সীমায় উঠিতে থাক, আমরা দেখিয়া সুখী হই।’ (ভক্তের পত্র, খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা, পত্র সংখ্যা : ৫১, পৃষ্ঠা : ৩৭)। ‘মহবয়তের পরিধি কি এই জীবনেই সমাপ্ত, না পরজীবনেও আশা করিতে পারি?’ (ভক্তের পত্র, খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা, পত্র সংখ্যা: ৫৭, পৃষ্ঠা : ৪১)। ‘প্রকৃত মহবয়ত মানুষ জানে না, তাহার কাছে সব অলীক, সবই অপূর্ণ। মানব নিঃস্বার্থভাবে অপরকে সুখী করিতে সচেষ্ট থাকিলে, পৃথিবী না জানি কি সুখেরই হইত। প্রকৃত ভালবাসার মাহাত্ম কেহ জানে না, তাই মানুষ আনন্দে গরল মিশাইয়া দেয়। যে প্রেম বস্তু সাপেক্ষ তা অপকৃত। যে প্রেম কেবল প্রেমিকতা চায়, সেই প্রেমই প্রকৃত। সে চায় সত্যতা, সে চায় সাধুতা, তাহার আকর্ষণ অদমনীয়। সে মানুষকে সুখ দান করে। (ভক্তের পত্র, খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা, পত্র সংখ্যা : ৫৮, পৃষ্ঠা : ৪১-৪২)।

বি. দ্র : লেখকের বানান হুবহু রাখা হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত