পৃথিবীতে জান্নাতি ও জাহান্নামিদের পরিচয়

মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ

প্রকাশ : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

ইয়াজ ইবনে হিমার আল মুজাশিই (রা.) বলেন, ‘একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) খুতবাহ প্রদানকালে বললেন, সাবধান! আমার প্রতিপালক আজ আমাকে যা শিক্ষা প্রদান করেছেন, এ থেকে তোমাদেরকে এমন বিষয়ের শিক্ষা দেওয়ার জন্য তিনি আমাকে আদেশ দিয়েছেন, যে বিষয়ে তোমরা সম্পূর্ণরূপে অজ্ঞাত। তা হলো এই যে, আমি আমার বান্দাদের যে প্রাচুর্য দিয়েছি তা সম্পূর্ণরূপে বৈধ। আমি আমার সব বান্দাদের একনিষ্ঠ (মুসলিম) হিসেবে সৃষ্টি করেছি। অতঃপর তাদের নিকট শয়তান এসে তাদেরকে দ¦ীন থেকে সরিয়ে দেয়। আমি যে সমস্ত জিনিস তাদের জন্য বৈধ করেছিলাম সে তা হারাম করে দেয়। অধিকন্তু সে তাদের আমার সঙ্গে এমন বিষয়ে অংশীদার করার জন্য নির্দেশ প্রদান করে, যে বিষয়ে আমি কোনো প্রমাণ পাঠাইনি। আল্লাহ তাআলা পৃথিবীবাসীদের প্রতি দৃষ্টি দিয়ে কিতাবিদের কিছু লোক ছাড়া আরব-আজম সবাইকে অপছন্দ করেছেন। অতঃপর তিনি বললেন, তোমাকে পরীক্ষা করার উদ্দেশে এবং তোমার দ্বারা অন্যদের পরীক্ষা করার উদ্দেশে আমি তোমাকে দুনিয়াতে প্রেরণ করেছি এবং তোমার প্রতি আমি এমন কিতাব অবতীর্ণ করেছি যা পানি কখনও ধুয়ে-মুছে ফেলতে পারবে না।

ঘুমন্ত ও জাগ্রত অবস্থায় তুমি সেটা পাঠ করবে।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, কুরাইশ সম্প্রদায়ের লোকেদের জ্বালিয়ে দেওয়ার জন্য আল্লাহ আমাকে নির্দেশ করেছেন। আমি তখন বললাম, হে আমার প্রতিপালক! আমি যদি এ কাজ করি তবে তারা তো আমার মাথা ভেঙে রুটির মতো টুকরা টুকরা করে ফেলবে। আল্লাহ তাআলা বললেন, তারা যেমনিভাবে তোমাকে বহিষ্কার করেছে ঠিক তেমনিভাবে তুমিও তাদেরকে বহিষ্কার করে দাও। তুমি তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করো।

আমি তোমাকে সাহায্য করব। ব্যয় করো আল্লাহর পথে, তোমার জন্যও ব্যয় করা হবে। তুমি একটি সেনাদল প্রেরণ কর, আমি অনুরূপ পাঁচটি বাহিনী প্রেরণ করব। যারা তোমার আনুগত্য করে তাদেরকে সঙ্গে নিয়ে যারা তোমার বিরুদ্ধাচরণ করে তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করো। (এর পর রাসুল (সা.) বললেন)-

তিন শ্রেণির মানুষ জান্নাতি হবে : এক প্রকার মানুষ তারা, যারা রাষ্ট্রীয় কর্ণধার, ন্যায়পরায়ণ, সত্যবাদী এবং নেক কাজের তাওফিক লাভে ধন্য লোক। দ্বিতীয় ওই সব মানুষ, যারা দয়ালু এবং আত্মীয়-স্বজন ও মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি কোমলচিত্ত। তৃতীয় ওই শ্রেণির মানুষ, যারা পূত-পবিত্র চরিত্রের অধিকারী, যাঞ্চাকারী নয় এবং সন্তানাদি সম্পন্ন লোক।

অতঃপর তিনি বললেন, পাঁচ ধরনের মানুষ জাহান্নামি হবে। এক. এমন দুর্বল মানুষ, যাদের মধ্যে পার্থক্য ক্ষমতা নেই, যারা তোমাদের এমন তাঁবেদার যে, না তারা পরিবার-পরিজন চায়, না ধনৈশ্বর্য। দুই. এমন খিয়ানাতকারী মানুষ, সাধারণ বিষয়েও যে খিয়ানাত করে যার লালসা কারও কাছেই লুক্কায়িত নেই। তিন. ওই ব্যক্তি, যে তোমার পরিবার-পরিজন এবং ধন-সম্পদের বিষয়ে তোমার সঙ্গে সকাল-সন্ধ্যা প্রতারণা করে। অবশেষে তিনি কৃপণতা, মিথ্যা বলা এবং গালমন্দ করার কথাও বর্ণনা করেছেন।