ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০ ভাদ্র ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

‘মানুষ সবকিছু পেতে পারে না’

‘মানুষ সবকিছু পেতে পারে না’

দেশের নারী ফুটবলে অতি পরিচিত এক নাম ‘কলসিন্দুর’। ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার এই গ্রামটি লাল সবুজের নারী ফুটবলের জাগরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। সেই গ্রামের মেয়ে সানজিদা আক্তার। যিনি ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ডকাপ’ ফুটবল টুর্নামেন্টের মাধ্যমে পরিচিতি লাভ করেন। পরবর্তীতে জাতীয় নারী ফুটবল দলে সুযোগ পান। তারপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। দিনে দিনে সানজিদ হয়ে উঠেন বাংলাদেশের নারী ফুটবলের ‘পোস্টারগার্ল’। প্রথম বাংলাদেশি নারী ফুটবলার হিসেবে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের জার্সিতে খেলে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। তবে এরইমধ্যে মুদ্রার উল্টো পিঠও দেখেছেন সানজিদা। কোচের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে জাতীয় দলে জায়গা হারিয়েছেন। তাই ভিন্ন পথে হাঁটতে শুরু করে দিয়েছেন তিনি। ক্যারিয়ারের পরের ধাপের জীবনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। খেলা ছাড়ার পর কোচিং ভূমিকায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এই উইঙ্গার একটি কোচিং কোর্সে অংশ নিতে যাচ্ছেন। এজন্য ভুটানের লিগের বিরতিতে দেশে ফিরছেন তিনি। গত মঙ্গলবার সানজিদা বাফুফে ভবনে এএফসি ‘বি’ লাইসেন্স কোর্সে অংশ নেন। তার সঙ্গে এশিয়ান কাপ কোয়ালিফায়ার স্কোয়াডের সদস্য শিউলি আজিম এবং আরও তিন নারী ফুটবলার।

এক দশক আগে যখন বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার নারী বয়সভিত্তিক ফুটবলে আধিপত্য বিস্তার করতে শুরু করে, তখন সানজিদার ড্রিবলিং দক্ষতা জাতিকে মুগ্ধ করেছিল। তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে নিজের নতুন চিন্তা নিয়ে কথা বলেন, ‘আমি ২০২০ সালে আমার গ্রাসরুটস কোর্স এবং ২০২১ সালে আমার ‘সি’ লাইসেন্স কোর্স করেছি। আমি তখন একজন ফুটবলার ছিলাম এবং এখনও তাই আছি। আমি সবসময় ফুটবলের সঙ্গে থাকতে চাই, এ কারণেই আমি ‘বি’ কোর্স করছি। আমি সবসময় খেলোয়াড় থাকব না, তাই যখন অবসর নেব তখন এই কোর্সগুলো আমাকে খেলার সঙ্গে যুক্ত থাকতে সাহায্য করবে।’ ২৪ জন অংশগ্রহণকারী নিয়ে কোর্সের প্রথম পর্ব ১৬ জুলাই শেষ হবে, দ্বিতীয় পর্ব আগস্টে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

সানজিদা তার ক্লাব পারো এফসি থেকে ছুটি নিয়েছেন। কোর্স শেষ করে তিনি ভুটানে ফিরে যাবেন। পারো এফসিতে বাংলাদেশের তারকা আরও দুই তারকা সাবিনা খাতুন এবং ঋতুপর্ণা চাকমা খেলেন। কোচ পিটার বাটলারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা ১৮ ফুটবলারের একজন ছিলেন সানজিদা। কয়েকমাস আগে ব্রিটিশ কোচের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলেছিলেন। পরে সেই বিদ্রোহে থাকা মনিকা চাকমা, মারিয়া মান্দা এবং রূপনা চাকমাসহ তার কয়েকজন সতীর্থ এশিয়ান কাপ কোয়ালিফায়ারের জন্য ডাক পান। তবে সানজিদা, সাবিনা ও কৃষ্ণা রানী সরকারের আর জাতীয় দলে ডাক পড়েনি। তাদের ‘ফর্ম এবং ফিটনেসের অভাব’ থাকার কারণ দেখিয়ে বাদ দেন কোচ।

এই হতাশা স্বত্বেও, ২৪ বছর বয়সী এই ফুটবলার জাতীয় দলের মহাদেশীয় পর্যায়ে উন্নতি দেখে আনন্দ প্রকাশ করেছেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর আমরা সবসময় এশিয়ান পর্যায়ে ভালো করার স্বপ্ন দেখতাম। এখন দল তা অর্জন করেছে, এবং আমরা সবাই খুশি।’ দলের বাইরে থাকা নিয়ে সানজিদা বলেন, ‘মানুষ সবকিছু পেতে পারে না। মাঝে মাঝে আপনাকে কিছু জিনিস ছেড়ে দিতে হয় এবং সেগুলোকে সেভাবেই মেনে নিতে হয়।’

মানুষ,ফুটবল,কলসিন্দুর
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত