অনলাইন সংস্করণ
২১:০৬, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
চব্বিশের জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে হঠাৎই দেশে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করা হয়েছিল। পরে আন্দোলনবিরোধী প্রচারণার জন্য তা চালু করার পরামর্শ দেন সাবেক মন্ত্রী ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু। তবে ক্ষোভে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তখন স্পষ্ট ভাষায় বলেন, তিনি আর কখনোই জীবনে ইন্টারনেট সংযোগ দেবেন না।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এ তথ্য তুলে ধরেন।
তিনি জানান, জুলাই আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ৫৩তম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন মামলার বিশেষ তদন্ত কর্মকর্তা তানভীর হাসান জোহা।
তার জবানবন্দিতে শেখ হাসিনার কথোপকথনের ৬৯টি অডিও ক্লিপ এবং তিনটি মোবাইল নম্বরের কলরেকর্ড জব্দের তথ্য আদালতে উপস্থাপন করা হয়।
প্রসিকিউশনের উপস্থাপন অনুযায়ী, ওই অডিওতে শেখ হাসিনা ও হাসানুল হক ইনুর মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ ধরা পড়ে। সেখানে আন্দোলন দমন, স্থানীয় নেতৃত্বকে গ্রেপ্তার, সেনা ও র্যাব মোতায়েন এবং প্রোপাগান্ডা কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়।
কথোপকথনের এক পর্যায়ে ইনু ইন্টারনেট চালুর প্রস্তাব দেন, যাতে সরকারপক্ষের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া যায়। উত্তরে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়— ‘ইন্টারনেট পাবো কোথায়? ইন্টারনেট পোড়ায় দিছে। জীবনে... আমি তো আর আনবো না, যদি অন্য সরকার আসে তাহলে আনবে। আমি দিছি ইন্টারনেট, ওরা পোড়াইতে থাকুক।’
অডিওর আরেক অংশে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে তালিকা প্রণয়ন, স্থানীয় নেতাদের সহযোগিতা নেওয়া, এমনকি হেলিকপ্টার দিয়ে হামলার কথাও উঠে আসে। শেখ হাসিনাকে এক পর্যায়ে বলতে শোনা যায়— ‘জামায়াত শায়েস্তা করে ধুয়ে যেতে হবে... শিবির যে কয়টা আছে, সব বের করেন।’
প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম জানান, এসব অডিও ক্লিপ ও কলরেকর্ড মামলার গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে আদালতে উপস্থাপিত হয়েছে। এর প্রমাণমূল্য যাচাই-বাছাই হবে পরবর্তী শুনানিতে।