সুপার ওভারে জিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে সমতায় ফিরল ওয়েস্ট ইন্ডিজ

দ্বিতীয় ইনিংসের মাঝ পর্যায়ে এসে মনে হচ্ছিল, এক ম্যাচ হাতে রেখেই বোধহয় সিরিজ জিততে যাচ্ছে বাংলোদেশ। কিন্তু শেষ দিকে এসে সব উলোটপালট হয়ে গেল। টান টান উত্তেজনায় ভরা ম্যাচটি গড়াল সুপার ওভারে। তাতে জিতে তিন ম্যাচের সিরিজে সমতায় ফিরল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সুপার ওভারে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে এক ওভার থেকে এক উইকেট হারিয়ে ১০ রান সংগ্রহ করে ক্যারিবীয়রা। ১১ রানের জবাবে খেলতে নেমে এক উইকেট হারিয়ে ৯ রান তুলতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ। ফলে ২ রানে সুপার ওভার জিতে তিন ম্যাচের সিরিজ ১-১ এ সমতায় ফিরল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। 

এর আগে মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ম্যাচে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। কালো মাটির পিচে রান তুলতে সংগ্রাম করতে হয় স্বাগতিক ব্যাটারদের। ক্যারিবীয় বোলাররা দুর্দান্ত বোলিং করেন। স্পিন সহায়ক পিচে বাংলাদেশের কোনো ব্যাটারই বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। সর্বোচ্চ ৪৫ রান আসে সৌম্য সরকারের ব্যাট থেকে। অধিনায়ক মিরাজ করেন ৩২।  

এছাড়া টপ অর্ডার ও মিডল অর্ডারের কোনো ব্যাটার উল্লেখযোগ্য স্কোর করতে পারেননি। শেষ দিকে রিশাদ হোসেনের মাত্র ১৪ বলে ৩৯ রানের ঝোড়ো ইনিংসের সুবাদে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২১৩ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। ইনিংসে তিনটি ছক্কা ও তিনটি চার মারেন রিশাদ।

ক্যারিবীয়দের পক্ষে বল হাতে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন গুঁড়াকেশ মোতি। দুটি করে উইকেট শিকার করেন আকিল হোসেন ও অ্যালিক অ্যাথানেজ। 

এরপর ২১৪ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ২ উইকেট হাতে রেখে প্রায় জয়ের বন্দরে পৌঁছে যাচ্ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু শেষ ওভারে সাইফ ম্যাজিকে আবার পরাজয়ের দুয়ারে চলে যায় ক্যারিবীয়রা। ওই ওভারে তাদের দরকার ছিল মাত্র ৫ রান। কিন্তু সাইফ প্রথম ৫ বলে দেন মাত্র ২ রান। ফলে জিততে হলে শেষ বলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দরকার পড়ে ৩ রান।

এই অবস্থায় সাইফের শেষ ডেলিভারিটি স্বজোরে মারতে গিয়ে উপরে তুলে দেন ক্যারিবীয় ব্যাটার খারি পিয়েরি। কাছাকাছি খেলোয়াড় থাকা সত্ত্বেও অনেক দূর থেকে দৌঁড়ে গিয়ে সেই ক্যাচ তালুবন্দি করতে ছুটে যান টাইগার কিপার নুরুল হাসান। কিন্তু তিনি ব্যর্থ হন। ওদিকে দৌঁড়ে ২ রান নিয়ে নেন ক্যারিবীয় ব্যাটাররা। ফলে ম্যাচ টাই হয়ে যায়। প্রয়োজন পড়ে সুপার ওভারের।  

এদিন ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৩ রান করেন সাই হোপ। ম্যাচের শেষ পর্যন্ত ব্যাট চালিয়ে অর্থাৎ অপরাজিত থেকে তিনিই ক্যারিবীয়দের জয়ের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। 

এছাড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে ওপেনার এলিক আথানজে ২৮, ওয়ান ডাউনে নামা ক্যাচি কার্থি ৩৫ এবং শেষ দিকে ব্যাট হাতে নামা জাস্টিন গ্রিভস ২৬ রান করেন।  

এদিকে বাংলাদেশের পক্ষে ঝোড়ো ব্যাটিং করার পাশাপাশি বল হাতেও ক্যারিবীয়দের শাসন করেন ডানহাতি স্পিনার রিশাদ হোসাইন। ১০ ওভার হাত ঘুরিয়ে ৪২ রান দিয়ে ৩   উইকেট নেন তিনি। এছাড়া নাসুম আহমেদ দুটি এবং তানভীর ইসলাম দুটি উইকেট লাভ করেন। 

এর আগে প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ জিতেছিল ৭৪ রানের বড় ব্যবধানে। আজকের ম্যাচে সুপার ওভারে জিতে সমতায় ফিরল ‘ক্রিকেটের ঘুমন্ত সিংহ’ খ্যাত ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ফলে তৃতীয় বা শেষ ম্যাচটি অঘোষিত ফাইনালে পরিণত হলো। সে ম্যাচে যারা জিতবে, সিরিজ হবে তাদেরই।