এশিয়ান আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপ
পদক পুনরুদ্ধারে চোখ বাংলাদেশের
প্রকাশ : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১১:১৬ | অনলাইন সংস্করণ
ক্রীড়া প্রতিবেদক

দেশের অন্যতম সম্ভাবনাময় খেলা আর্চারি। ছয় বছর আগে জাতীয় আর্চারি দলের কোচ হয়ে এসেছিলেন বাংলাদেশে। তার হাত ধরেই বাংলাদেশের আর্চারিতে এসেছে বাঁক বদল। একাধিক পদক জিতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জায়গা করে নিয়েছেন লাল সবুজের আর্চাররা। তার অধীনেই এসএ গেমসে দশটি স্বর্ণ পদক জিতেছে। এশিয়ান আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপসেও সফলতা আছে বাংলাদেশের।
তবে গত তিন আসরে বাংলাদেশের যেমন প্রাপ্তির গল্প আছে, না পাওয়ার বেদনাও আছে। এর সঙ্গে এবার যোগ হয়েছে দেশান্তরী হওয়া রোমান সানা, হাকিম আহমেদ রুবেল ও দিয়া সিদ্দিকীর মতো তারকাদের শূন্যতা। তবে আর্চারি কোচ মার্টিন ফ্রেডরিখ ও আর্চার সাগর ইসলাম আশাবাদী, এবারও দারুণ কিছু হবে।
এবার এশিয়ান আর্চারির খেলা হবে দুই ভেন্যুতে-জাতীয় স্টেডিয়াম ও টঙ্গীর আর্চারি স্টেডিয়াম। টঙ্গীতেই বছর জুড়ে চলে আর্চারির ক্যাম্প। এখানেই প্রস্তুতির ফাঁকে ফ্রেডরিখের বলা কথায় উঠে এলো গত তিন আসরের খেরোখাতা।
গতকাল রোববার টঙ্গীতে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘যারা নেই, তাদের নিয়ে আমি কথা বলতে চাই না। পেছনে তাকিয়ে আফসোস করলে কাজ হবে না। যারা আছে, তাদের নিয়েই কাজ করতে চাই। আমার খেলোয়াড়দের ওপর বিশ্বাস আছে। আমরা শক্তিশালী দল, বড় কিছু করার সক্ষমতা আছে, এগিয়ে যেতে চাই সামনে তাকিয়ে।’
তৃতীয়বারের মতো আর্চারির এই মর্যাদার ইভেন্ট আয়োজন হচ্ছে ঢাকায়। এর আগে ২০১৭ ও ২০২১ সালে সফলভাবে এই আয়োজন সম্পন্ন করেছিল বাংলাদেশ আর্চারি ফেডারেশন। ২০২১ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত এশিয়ান আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ তিনটি পদক (একটি রুপা ও দুটি ব্রোঞ্জ) জিতেছিল।
কিন্তু দুই বছর পর ব্যাংককে অনুষ্ঠিত একই টুর্নামেন্ট থেকে ফিরতে হয়েছে খালি হাতে। দুই বছর আগের হারানো সেই পদক পুনরুদ্ধার করতে চান মার্টিন। তার কথা, ‘এখানকার সেই সাফল্যটি আমরা আবারও পুনরায় করতে চাই। পোডিয়ামে ওঠা আমাদের একটি বড় লক্ষ্য। নির্দিষ্টভাবে কাউকে নয়, আমাদের প্রতিপক্ষ প্রত্যেকেই শক্তিশালী। বিশেষ করে কম্পাউন্ড দলে আমরা অনেক এগিয়েছি, মিক্সড টিম বেশ উন্নতি করেছে। সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চাই।’
তাহলে এই আসরে ক’টি পদক জিততে চান? এমন প্রশ্নের উত্তরে মার্টিনের কথা, ‘আগেই বলেছি, শেষবার এখানে তিনটি পদক পেয়েছিলাম। যদি সেটি পুনরুদ্ধার করা যায়, তাহলে দারুণ হবে। তবে এশিয়া সবচেয়ে কঠিন প্রতিযোগিতার মঞ্চ। দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত, চাইনিজ তাইপে, চীন, সবাই আসছে। প্রতিযোগিতা ভীষণ কঠিন হবে।’
৮ নভেম্বর এশিয়ান আর্চারির এই বৃহৎ আসর শুরু হয়ে শেষ হবে ১৪ নভেম্বর। প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে দুই ভেন্যুতে। জাতীয় স্টেডিয়ামে ৮ থেকে ১২ নভেম্বর এবং আর্মি স্টেডিয়ামে ১৩ ও ১৪ নভেম্বর। দুই স্টেডিয়ামে ভেন্যু নিয়ে কোচ মার্টিন ফ্রেডরিকের কথা, ‘বিশ্বকাপ বা বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপেও ফাইনাল অন্য ভেন্যুতে হয়। কখনো শহরের কেন্দ্র কিংবা বিশেষ স্থানে। এবার সিদ্ধান্ত হয়েছে আর্মি স্টেডিয়ামে ফাইনাল হবে, তাতে সমস্যা নেই। আমি শুধু চেয়েছি, জাতীয় স্টেডিয়ামে আগেভাগে দুয়েক দিন অনুশীলনের সুযোগ পেতে। যদিও এখনও সেই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক সাড়া পাইনি। কারণ টঙ্গিতে বাতাস নেই বললেই চলে, কিন্তু জাতীয় স্টেডিয়ামে বাতাস ভিন্ন। তাই আগে থেকেই অনুশীলন করলে সুবিধা হবে বলে মনে করি।’
কোচ নূরে আলমও আশাবাদী, ‘সারা বছরই ক্যাম্প চলমান থাকে। কারও কারও ব্যক্তিগত কোনো কাজ থাকলে ছুটি দেওয়া হয়। যেমন এসএসপি পরীক্ষা বা বিশেষ কোনো প্রয়োজনে আর্চাররা ছুটি পায়। সবাই সারাক্ষণ ক্যাম্পে থাকায় প্রস্তুতি ভালো। নতুন যারা আছে তারাও বিশ্বমানের। আশা করি, তারা ভালো করবে।’
