প্লাস্টিক দূষণ আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে হুমকির মুখে ফেলছে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)-এর ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মাহমুদ আব্দুল মতিন ভূইয়া।
তিনি বলেন, প্লাস্টিক শুধু বর্তমান নয়, বরং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যও মারাত্মক ক্ষতিকর। এটি পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থায় বাধা সৃষ্টি করে জলাবদ্ধতা তৈরি করছে এবং প্রাণী ও মানুষের স্বাস্থ্যকে বিপন্ন করছে। টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে হলে প্লাস্টিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০ টায় চুয়েটের বাস্কেটবল গ্রাউন্ডে "প্লাস্টিক ব্যাগের পরিবর্তে পাটের ব্যাগের ব্যবহারযোগ্যতা মূল্যায়ন" প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানটি SCIP প্লাস্টিকস প্রকল্পের আওতায় মাসব্যাপী পরীক্ষামূলক পর্যায়ে পরিচালিত হচ্ছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসসিআইপি প্লাস্টিকস প্রকল্পের বৈজ্ঞানিক পরিচালক অধ্যাপক ড. মোছা. ফারজানা রহমান জুথী, বৈজ্ঞানিক বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. আসিফুল হক এবং জার্মানির বাউহাউস ইউনিভার্সিটি থেকে প্রকল্পের প্রতিনিধি সেন্তা রোজমেরি বার্নার ও ফিলিপ লোরবার উপস্থিত ছিলেন।
চুয়েটের বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই উদ্যোগে অংশ নেন। তারা প্রীতি খেলায় অংশগ্রহণ করেন এবং উপহার হিসেবে একটি করে পাটের ব্যাগ গ্রহণ করেন, যা পরিবেশবান্ধব অভ্যাস গড়ে তুলতে উৎসাহিত করবে।
পরীক্ষামূলক পর্যায়ে অংশগ্রহণকারীরা পাটের ব্যাগ পুনঃব্যবহার করবেন এবং নির্দিষ্ট সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করবেন, যার মাধ্যমে তারা ডিসকাউন্ট কুপন অর্জনের সুযোগ পাবেন।
এই প্রকল্পের আওতায় চুয়েট ক্যাম্পাসের নির্দিষ্ট কিছু দোকানে পাটের ব্যাগ কেনার সুযোগ থাকবে। শিক্ষার্থীরা ব্যাগ কিনে সেটি পুনঃব্যবহার করার ছবি নির্দিষ্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করলে পুরস্কার হিসেবে ডিসকাউন্ট কুপন পাবেন। এটি টেকসই অভ্যাস গড়ে তোলার পাশাপাশি প্লাস্টিক বর্জ্য হ্রাসে সহায়তা করবে।
এর আগে এসসিআইপি প্লাস্টিকস প্রকল্পের পক্ষ থেকে চুয়েট ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থী হল ও আবাসিক এলাকায় প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদন নির্ণয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়। পাশাপাশি স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে বিভিন্ন সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে।
এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো প্লাস্টিকের ব্যাগের পরিবর্তে পাটের ব্যাগ ব্যবহারে সবাইকে অনুপ্রাণিত করা। আশা করা হচ্ছে, চলমান পরীক্ষামূলক পর্যায়টি প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবে পাটের ব্যাগের ব্যবহারযোগ্যতা মূল্যায়নের কার্যকর মডেল হিসেবে কাজ করবে এবং চুয়েট কমিউনিটিতে পরিবেশগত সচেতনতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
উল্লেখ্য, এসসিআইপি প্লাস্টিকস প্রকল্পটি জার্মান ফেডারেল মিনিস্ট্রি ফর এনভায়রনমেন্ট, নেচার কনসারভেশন অ্যান্ড নিউক্লিয়ার সেফটি (বিএমইউভি)-এর অর্থায়নে পরিচালিত হচ্ছে।