রংপুর বিভাগের আট জেলা ও উপজেলার সরকারী হাসপাতালগুলোতে দেখা দিয়েছে চরম অ্যাম্বুলেন্স সংকট। বিভাগের জেলা ও উপজেলার ৫৮ টি হাসপাতালে ১৩৬ টি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে ১০২ টি অ্যাম্বুলেন্স দীর্ঘ দিন ধরে অচল অবস্থায় পরে আছে। এতে করে অসহায় হয়ে পড়েছেন রোগীরা। তাদের চিকিৎসার সিংহভাগ খরচ করচ চলে যায় অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া মেটাতে। ফলে লক্করঝক্কর অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছেন রোগীরা।
রংপুর স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, রংপুর বিভাগে আট জেলা ও উপজেলা হাসপাতালগুলোতে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে ১৩৬ টি। এর মধ্যে সচল ৮৫ টি, অচল ৫১ টি, মেরামত যোগ্য ৩৬ টি ও অকেজো ১৫ টি। তবে নতুন করে অ্যাম্বুলেন্স বরাদ্দের সম্ভবনা নেই বলে জানালেন স্বাস্থ্য বিভাগের এই সর্বোচ্চ কর্মকর্তা। বিভাগে আট জেলা সদর হাসপাতাল ছাড়াও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রয়েছে ৫০ টি।
নতুন অ্যাম্বুলেন্স বরাদ্দ না থাকায় রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য বড় বড় হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নেওয়ার জন্য তাদের বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সের উপর ভরসা করতে হয়। এতে তাদের চিকিৎসার ব্যয় ভার বাড়ছে। তবে বিকল অ্যাম্বুলেন্সগুলো সচল করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানান কর্মকর্তারা।
রংপুর বিভাগের সবচাইতে বড় হাসপাতাল হচ্ছে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। এই হাসপাতালে বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে রোগীরা চিকিৎসা সেবা নিতে এখানে আসে। তাদের নির্ভর করতে হয় বেসরকারি এম্বুলেন্সে সার্ভিসের উপর।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে ৪ টি অ্যাম্বুলেন্সের ২ টি অকেজো। নেই কোনো লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স। ফলে বাধ্য হয়েই রোগীরা প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্স বেচে নিচ্ছেন। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দেদারসে বাণিজ্য করছে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স মালিকরা। তারা ইচ্ছে মতো ভাড়া আদায় করছেন রোগী ও তাদের স্বজনদের কাজ থেকে। এতে করে গরীব অসহায় রোগীরা চিকিৎসা অর্থের অভাবে সেবা না পেয়ে ধুকে ধুকে জীবন কাটাচ্ছেন।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশিকুর রহমান জানান, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪টি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। এর মধ্যে ২টি সচল আর ২টি অচল। এছাড়া আইসিইউ একটি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। অচল অ্যাম্বুলেন্স দুইটি সচল করার জন্য কাজ করা হচ্ছে। হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা কীভাবে আরো উন্নতি করা যায় সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা: মো: হারুন – অর- রশীদ জানান, নতুন করে অ্যাম্বুলেন্স বরাদ্দের সম্ভবনা নেই। আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অচল অ্যাম্বুলেন্সগুলো মেরামত কারার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। আশা করছি আগামী দুই মাসের মধ্যে অচল কিছু অ্যাম্বুলেন্স চালু করতে পারবো।