দিনাজপুরের বিরল উপজেলায় ব্যস্ত সময় পার করছেন ফুলচাষিরা। এখানে গোলাপ ফুলের চাহিদা ও দাম বাড়ছে। চাষিরা প্রতিদিন ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা আয় করছেন। চাষিরা গোলাপ চাষে সফলতা পাচ্ছেন। এতে এলাকার আর্থিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে।
বিরল উপজেলার ভাণ্ডার ঘাঘরপাড়া ও কাজী পাড়ায় ফুল চাষ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। গ্রামের চাষিরা গোলাপ চাষ করে ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে ফেলেছেন। ফেব্রুয়ারিতে গোলাপ ফুলের চাহিদা বাড়ে, তাই গোলাপের দামও বেড়ে যায়। গোলাপ ফুলের বাগানে বিশেষ নজরদারি ও পাহারা দেওয়া হয়। শীতের সময় বাগানে লাল, সাদা, হলুদ, কালো গোলাপসহ ১৪ ধরনের গোলাপ ফোটে । এখানকার চাষিরা প্রতিদিন ফুল বিক্রি করে সহজেই নগদ আয় পাচ্ছেন।
এই সাফল্যে তরুণরা গোলাপ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।কাজীপাড়ায় গোলাপ ফুলের চাষ এখন এতটাই প্রসারিত। গ্রামটি গোলাপ ফুলের গ্রাম হিসেবে পরিচিত। এখানকার চাষিরা গোলাপ চাষের পাশাপাশি রজনীগন্ধা, কাঠবেলি, গাঁদা ফুলও চাষ করছেন।
ভান্ডার ঘাঘরপাড়ার চাষি বজ্রনাথ রায় (৬০) ও পুলিন চন্দ্র রায় (৪৫) আলাদা আলাদা গোলাপ ফুলের বাগান করেছেন। বজ্রনাথ রায় ২৫ শতক জমিতে ১ হাজার ৮০০ গোলাপ গাছ লাগিয়েছেন। প্রতিদিন ২০০-৩০০ পিস গোলাপ বিক্রি করে তিনি বেশ ভালো টাকা আয় করছেন। পুলিন চন্দ্র রায়ও তার ১৮ শতক জমিতে গোলাপ গাছ লাগিয়েছেন। প্রতি বছর আড়াই লাখ টাকা আয় করছেন। কাজীপাড়ায় গোলাপ ফুলের ব্যবসা বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থানীয় ফুলচাষিরা লাভবান হচ্ছেন।
এখানকার প্রতিটি গোলাপ চার থেকে পাঁচ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়। এতে প্রতিদিন ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকার ফুল বিক্রি করছেন চাষিরা। গোলাপ চাষি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ছয় বছর আগে প্রথম গোলাপ চাষ শুরু করি। এখন আমি আর্থিকভাবে সচ্ছল। প্রতিদিন ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকার ফুল বিক্রি করি।’
ফুল চাষের দিকে ঝুঁকেছেন একাধিক শিক্ষিত যুবকও। তাদের মধ্যে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘ফুল ব্যবসা করে আর্থিকভাবে অনেক চাষি স্বাবলম্বী হয়েছেন। গোলাপ ফুলের পাশাপাশি আমরা গাঁদা, রজনীগন্ধা, বেলি ফুলও চাষ করছি।’ বিরলের রবিপুর এলাকার ফুল চাষি শমশের জানান, ‘৮ শতাংশ জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে ফুল চাষ করেছি। ভালো ফলন পেয়েছি। আগামীতে এক বিঘা জমিতে ফুল চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
বিরল উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মোস্তফা হাসান ইমাম বলেন, ‘দিনাজপুরের এই অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া ফুল চাষের জন্য আদর্শ। এখানকার কৃষকরা গোলাপ চাষ করে প্রচুর লাভবান হচ্ছেন।’
বিরল উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল আলম জানান, গোলাপ চাষের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিয়ে চাষিদের সাহায্য করা হচ্ছে। এই অঞ্চলে ফুল চাষের দিকে আগ্রহ বাড়ছে। আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।