ঢাকা সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ৯ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

কুড়িগ্রামে স্ট্রবেরি চাষে ফলন বিপর্যয়ে দিশেহারা কৃষক

কুড়িগ্রামে স্ট্রবেরি চাষে ফলন বিপর্যয়ে দিশেহারা কৃষক

কুড়িগ্রামের উলিপুরে তিস্তা নদীর চরজুড়ে স্ট্রবেরির বাগান। প্রথম দেখায় মন ভরে যাবে লাল-সবুজের সে অপরূপ দৃশ্য দেখে। কিন্তু এই সৌন্দর্যের আড়ালে লুকিয়ে আছে হতাশা আর দুঃশ্চিন্তা। প্রায় দেড় কোটি টাকা বিনিয়োগ করে স্ট্রবেরি চাষ শুরু করেছিলেন প্রবাস ফেরত দুই তরুণ কৃষক আব্দুর রাজ্জাক ও হারুনুর রশিদ। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত ফলন না আসায় এখন লোকসানের মুখে তারা।

সরেজমিনে জানা যায়, উলিপুর উপজেলার বজরা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর বালু চরে ১২ একর জমিতে স্ট্রবেরি চাষ করেন এই দুই কৃষক। ‘অ্যাসেট অ্যাগ্রো’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে আধুনিক প্রযুক্তিতে তারা ছয়টি জাতের সাড়ে তিন লাখ স্ট্রবেরি চারা রোপণ করেন গত নভেম্বর মাসে। শুরুর দিকে আশার আলো দেখালেও, এখন ফলন বিপর্যয়ে দিশেহারা তারা।

তরুণ উদ্যোক্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “অনেক স্বপ্ন নিয়ে চাষ শুরু করেছিলাম। ভেবেছিলাম, সুস্বাদু ও পুষ্টিকর এই ফল দিয়ে জেলার চাহিদা মিটিয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করবো। প্রতি কেজি স্ট্রবেরি বিক্রি হয় ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায়। চারা রোপণের ৪৫ থেকে ৬৫ দিনের মধ্যে ফলন আসার কথা। কিন্তু চারার মান খারাপ হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রার ফলন মেলেনি। এখন দেড় কোটি টাকা বিনিয়োগের বিপরীতে মাত্র পাঁচ লাখ টাকার ফলন মিলবে কি না, তা নিয়েও সন্দেহ আছে।”

এ ক্ষেতে কাজ করা শ্রমিক আব্দুল হামিদ বলেন, “আমিসহ তিনজন শ্রমিক মাসিক ১৫ হাজার টাকা বেতনে কাজ করছি। অনেক যত্ন করে গাছগুলো লালন-পালন করেছি। কিন্তু সঠিক সময়ে ফলন না আসায় আমাদেরও কষ্ট লাগে। ভালো ফলন হলে এই এলাকায় স্ট্রবেরি চাষে বিপ্লব ঘটতো। কিন্তু কৃষি বিভাগের দায়িত্বহীনতা আর চারা নির্বাচনের ভুলে সব কিছুই এলোমেলো হয়ে গেছে।”

স্থানীয় দর্শনার্থী নুর ইসলাম বলেন, “স্ট্রবেরি ক্ষেত দেখে মুগ্ধ হয়েছি। আগে বাজার থেকে কিনে খেয়েছি, এবার প্রথমবারের মতো ক্ষেত দেখে এলাম। কিন্তু ফলনের দুর্দশা আর সম্ভাবনা হারানোর আশঙ্কার কথা শুনে খারাপ লাগলো। কৃষি অফিস থেকে যদি নিয়মিত তদারকি আর পরামর্শ দিতো, তাহলে হয়তো এমন দুরবস্থা হতো না।”

এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “আমরা উপজেলা কৃষি বিভাগের মাধ্যমে কারিগরি সহায়তা ও পরামর্শ দিয়েছি। কুড়িগ্রামের আবহাওয়া স্ট্রবেরি চাষের জন্য উপযোগী। তবে তারা সফল হলে ভবিষ্যতে জেলা জুড়ে স্ট্রবেরি চাষ সম্প্রসারণে উদ্যোগ নেওয়া হবে।”

দিশেহারা,কৃষক
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত