ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ২১ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

রমজানে বিদেশি ফলের বাজারে আগুন

ক্রেতাদের সারিতে নেই নিম্নবিত্তরা
রমজানে বিদেশি ফলের বাজারে আগুন

রোজায় বেশি চাহিদা থাকে খেজুরসহ সব রকম রসালো ফলের। শুল্ক কমানোয় দাম এবার মধ্যবৃত্তের হাতের নাগালে কথার থাকলেও খেজুর, আপেল, কমলা, মাল্টাসহ বিদেশি সব ফলের দাম চড়া। আমদানি করা এসব ফলের দাম কেজিতে বেড়েছে ২০ থেকে ৮০ টাকা। তবে ফলের ক্রেতাদের সারিতে নেই কোন নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা ।

দাম বাড়ার জন্য বাড়তি দরে শুল্কায়ন ও ডলার সংকটকে দায়ী করেছেন ব্যবসায়ীরা। তবে বাজারে কিছু দেশি ফলের সরবরাহ ভালো। আনারস, কলা, পেয়ারা, বরইয়ের মতো ফলের সঙ্গে আগাম তরমুজও বাজারে আসছে। যে কারণে ক্রেতারা দেশি ফলের দিকে ঝুঁকছেন বেশি। যদিও সেখানেও স্বস্তি নেই দামে।

বুধবার ১১ রমজানেও ঈশ্বরদী বাজারের ফল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রমজান শুরুর কয়েক দিন আগে থেকেই বিদেশি ফলের দাম বেশি হলেও এখান বাজারে খুচরা পর্যায়ে বিদেশি ফলের দাম আরও বেড়েছে।

এর মধ্যে প্রতি কেজিতে মাল্টার দাম বেড়েছে ৫০-৮০ টাকা। বাজারে দেশি মাল্টার সরবরাহ কম, তাতে ২২০ টাকা কেজির আমদানি করা মাল্টা কিনতে হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩২০ টাকা কেজিতে। কোথাও কোথাও দাম আরও বেশি চাওয়া হচ্ছে। এছাড়া বিদেশি কমলার দাম পড়ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি। কমলার দাম বেড়েছে কেজিতে ৪০ থেকে ৭০ টাকা। বাড়তি আপেলের দামও। আপেলের দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা। বাজারে সবুজ আপেল বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা কেজিতে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রমজানে খেজুরের পাশাপাশি মাল্টা, কমলার মতো রসালো ফলের চাহিদা বেশি থাকে। ঠিক রমজানের আগেই বেড়েছে এই ফলের দাম।

তবে সরবরাহ বাড়ায় কিছুটা স্থিতিশীল আছে আঙুরের। বাজারে এখন দুই পদের আঙুর পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে সবুজ আঙুরের দাম থেকে ৩০০ টাকা কেজি। আর ৪২০ থেকে ৪৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে কালো আঙুর।

ঈশ্বরদীতে ফল কিনতে আসা ক্রেতা রওশন আলী বলেন, ৩০০ টাকার নিচে এখন কোনো আমদানি করা বিদেশি ফল নেই। গত কয়েক দিনের চেয়ে প্রায় ৫০ টাকা বেশি। যৌক্তিক-অযৌক্তিক পরিস্থিতি যাই হোক, রমজানে

বিদেশি ফলের দাম বেশি হওয়ার কারণে বেড়েছে দেশি ফলের চাহিদা। এই সুযোগে দেশি ফলের দামও বাড়িয়ে দিয়েছেন বিক্রেতারা। বাজারে প্রতি কেজি পেয়ারা ৯০-১০০টাকা, তরমুজ ৬০-৮০ টাকা কেজি ও আনারস প্রকারভেদে ৫০-১০০ টাকা প্রতিপিস বিক্রি হচ্ছে। পেঁপে ১২০-১৫০ টাকা কেজি, বাঙ্গি প্রতিপিস ১০০-১৫০, বেল ১০০ থেকে ১৫০ পিস, কলা ৮০ থেকে ১০০ টাকা ছড়ি বিক্রি হচ্ছে।

বিদেশি ফলের দাম বাড়ার কারণে দেশি ফলের দাম বেড়েছে বলে জানিয়ে আরেক ক্রেতা ঈশ্বরদী পৌরসভার শেরশাহ সড়ক থেকে আসা মনসুর আলী বলেন, কয়েকদিন আগে পেয়ারা কিনেছি ৬০ টাকা, আজ বুধবার ৮০ থেকে ১১০ টাকা। বরইয়ের দাম ১৫০ টাকায় ঠেকেছে, যা ৫০-৬০ টাকা কম ছিল। বিদেশি আপেল কমলার দামের সঙ্গে এগুলোর দামও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে।

ঈশ্বরদী বাজার ফল বিক্রেতা রেজাউল ইসলাম জানান, পাইকারি বাজারে ফলের দাম বেড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। তবে সরবরাহ ভালো। আরেকজন ফল বিক্রেতা মিঠু রহমান জানান, আমদানি করা সব ফলের দাম সাধারণ ক্রেতাদের আকৃষ্ট করছেনা। ফলের দাম বেশি হবার কারণে সাধারণ ক্রেতারা আসছেন না। যেকারণে আমাদের বিক্রি কমেছে।

ঈশ্বরদীর পাইকারি ফল ব্যবসায়ী সরন আলী বলেন, বিদেশি ফল আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক বাড়ার কারণে খুচরা বাজারে আপেল, কমলা ও আঙুরের দাম কেজিতে ২০ থেকে ৮০ টাকা বেড়েছে।

আবার আমদানি করা ফলের সম্পূরক শুল্ক ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ, অগ্রিম কর ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশ এবং ২০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক ও ৫ শতাংশ আগাম কর বাতিল করলেও তবে তা এখনো বাজারে কোন প্রভাব পড়ে নাই। যার কারণে রমজানে বাড়তি দামেই ফল খেতে হচ্ছে।

আগুন,ফল,রমজান,বিদেশি
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত