“দ্বন্দ্বে কোনো আনন্দ নাই, আপোস করো ভাই, লিগ্যাল এইড আছে পাশে, কোনো চিন্তা নাই”—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে শেরপুরে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস-২০২৪ পালিত হয়েছে।
২৮ এপ্রিল (সোমবার) শেরপুর জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির আয়োজনে জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে র্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন শেরপুর জেলা ও দায়রা জজ এবং জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জহিরুল কবির। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার ও সিনিয়র সহকারী জজ রাশেদুল আমিন।
তিনি বলেন, গত এক বছরে শেরপুর জেলা লিগ্যাল এইড অফিসে সরাসরি মামলা ও বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (এডিআর) সংক্রান্ত মোট ৫৪৮টি আবেদন গ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে ৮১টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে আদালতের মাধ্যমে এবং ১৪২টি মামলা এডিআরের মাধ্যমে নিষ্পন্ন হয়েছে। নথিজাত হয়েছে ১৫১টি মামলা এবং অপেক্ষমাণ রয়েছে ১৭৪টি। এছাড়া ৯২৮ জনকে আইনগত পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এবং চলমান ১০৯টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। এডিআর প্রক্রিয়ায় মোট ৯৫ লাখ ৫৩ হাজার ৬৫০ টাকা ক্ষতিগ্রস্তদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন শেরপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান মাহমুদ। তিনি বলেন, "বিচারপ্রাপ্তির অধিকার একটি মৌলিক অধিকার। সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে আইনের দৃষ্টিতে সকল নাগরিক সমান। সেই নীতির আলোকে শেরপুর জেলা লিগ্যাল এইড কাজ করে যাচ্ছে।"
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শেরপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এম. কে. মোরাদুজ্জামান, পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান, সরকারি কৌঁসুলি (জিপি) অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুবুল আলম রাকিব এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট আশরাফুন্নাহার রুবি। তারা সবাই লিগ্যাল এইডের ভূমিকা ও প্রয়োজনীয়তা নিয়ে বক্তব্য রাখেন।
এ সময় বক্তারা জানান, ১৯৯৪ সালের ৬ জানুয়ারি বাংলাদেশে লিগ্যাল এইড কার্যক্রমের সূচনা হয়।
অনুষ্ঠানে এ বছরের ‘জেলা লিগ্যাল এইড সেরা অ্যাডভোকেট’ হিসেবে অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম মমিনকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
এছাড়া ভুক্তভোগী সুলেখা নামের একজন নারী তার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে জানান, তাকে বিদেশে পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক ব্যক্তি টাকা আত্মসাৎ করলে শেরপুর জেলা লিগ্যাল এইডের সহায়তায় তিনি তার প্রাপ্য অর্থ ফেরত পান।
সবশেষে শেরপুর জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ জহিরুল কবির অনুষ্ঠানটির সমাপ্তি ঘোষণা করেন।