রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রাবিপ্রবি) আগামী ১৬ থেকে ১৮ মে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি ব্যতিক্রমধর্মী ও গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সম্মেলন—আন্তর্জাতিক বায়োসায়েন্স কনফারেন্স ও কার্নিভাল ২০২৫।
এ মহা-আয়োজনে সহযোগিতায় রয়েছে বাংলাদেশ বায়োসেফটি অ্যান্ড বায়োসিকিউরিটি সোসাইটি। তিনদিনব্যাপী এ আয়োজনে অংশগ্রহণ করবেন দেশি-বিদেশি বিজ্ঞানী, গবেষক, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট পেশাজীবীরা।
মঙ্গলবার সকালে রাঙামাটি প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য বিষয়—“বায়োসায়েন্স, বায়োসেফটি ও বায়োসিকিউরিটিতে উদ্ভাবন ও সহযোগিতা: স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতে টেকসই ভবিষ্যতের সন্ধানে”—যা বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক ও সময়োপযোগী।
বাংলাদেশের পাহাড়ি জনপদ রাঙামাটিতে অবস্থিত রাবিপ্রবি এই প্রথম এত বড় পরিসরে একটি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সম্মেলনের আয়োজন করছে। এই আয়োজনের মাধ্যমে শুধু বিশ্ববিদ্যালয় নয়, পুরো রাঙামাটি অঞ্চলই আন্তর্জাতিক গবেষণা মানচিত্রে স্থান করে নিতে যাচ্ছে। আয়োজকরা মনে করছেন, এটি স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে বিজ্ঞানচর্চায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
তিনদিনের এই কনফারেন্সে থাকছে বৈজ্ঞানিক গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন, পোস্টার প্রদর্শনী, ইনোভেশন পিচ, বায়োফেস্ট, স্বল্পদৈর্ঘ্য তথ্যচিত্র প্রদর্শন, সেমিনার ও বিজ্ঞান বিষয়ক আলোচনাসভা।
উদ্বোধনী দিনে থাকবে “সায়েন্স র্যালি” ও “ক্যাম্পেইন টু স্কুল” কর্মসূচি। এছাড়া স্থানীয় শিক্ষার্থীদের নিয়ে চলবে বিজ্ঞানভিত্তিক কর্মশালা ও উদ্বুদ্ধকরণ সেশন।
এই আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান এর বিজ্ঞানীরা অংশ নিচ্ছেন। একই সঙ্গে বিশ্বের বেশ কিছু দেশের গবেষক প্রতিনিধিরাও অংশ নেবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ আতিয়ার রহমান বলেন—“এই কনফারেন্সের মাধ্যমে আমরা রাঙামাটিকে একটি বৈজ্ঞানিক আলোচনার কেন্দ্রস্থলে নিয়ে যেতে চাই। তরুণদের উদ্ভাবন ও গবেষণার সুযোগ করে দিতে চাই। আমাদের স্বপ্ন, পাহাড় থেকে নতুন নতুন উদ্ভাবন দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্বে আলো ছড়াতে সক্ষম হবে।”
এই আয়োজন শুধু একটি সম্মেলন নয়; এটি রাঙামাটির স্থানীয় শিক্ষার্থী ও গবেষকদের জন্য একটি আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা প্ল্যাটফর্ম তৈরি করবে।
আয়োজকরা আশা করছেন, এ আয়োজনের মাধ্যমে একটি ‘আঞ্চলিক গবেষণা উৎকর্ষ কেন্দ্র’ গড়ে উঠবে, যা ভবিষ্যতে দেশীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে আরও এগিয়ে নেবে।
রাবিপ্রবি কর্তৃপক্ষ কনফারেন্সের সফল আয়োজনের লক্ষ্যে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, মিডিয়া এবং শিক্ষাবিদদের একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁরা মনে করেন, এই আয়োজন শুধু রাবিপ্রবির নয়—এটি সারা দেশের বিজ্ঞানচর্চার একটি জাতীয় উৎসবে রূপ নিতে যাচ্ছে।
মিট দ্যা প্রেস অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাদ্দাম হোসেন, ডীন ধিমান শর্মা, অধ্যাপক সূচনা আক্তার, ফরেষ্ট্রি ডিপার্টমেন্ট এর চেয়ারম্যান ড. নিখিল চাকমা উপস্থিত ছিলেন।