রংপুর জেলার পীরগঞ্জ, পীরগাছা ও সদর উপজেলার কয়েকজন তরুণ খামারি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ হিসেবে মরুভূমির প্রাণী ‘দুম্বা’ লালন-পালন করছেন। এর মধ্যে পীরগঞ্জের জাহিরুল ইসলাম জাহিদ গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে গড়ে তুলেছেন একটি অনন্য দুম্বার খামার।
সাত মাস আগে শখের বসে শুরু করা এই খামারে বর্তমানে একেকটি দুম্বার বাজার মূল্য ২.৫ থেকে ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত। খামারটি পরিচালনায় তাকে সহায়তা করছেন ছোট ভাই জিন্নাহ মন্ডল।
জাহিদের লক্ষ্য প্রান্তিক পর্যায়ে দুম্বা ছড়িয়ে দেওয়া এবং বেকারদের মধ্যে উদ্যোক্তা তৈরি করা। তার খামারে ভারত ও পাকিস্তানি টার্কিজ জাতের দুম্বা রয়েছে। খাবারের তালিকায় রয়েছে ঘাস, খড়, ভুষি, খৈল ও পাতা।
জিন্নাহ মন্ডল জানান, শুরুতে দ্বিধা থাকলেও এখন দুম্বা পালন থেকে ভালো সাড়া পাচ্ছেন। তিনি বলেন, "দুম্বা রোগে কম আক্রান্ত হয় এবং প্রচলিত খাবারেই লালন-পালন সম্ভব। প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ইউটিউব দেখেই ব্যবস্থা নেওয়া যায়।"
জাহিদ বলেন, “গরু-ছাগলের বাইরে কিছু আলাদা করতে চেয়েছি বলেই দুম্বা নিয়ে কাজ শুরু করি। প্রাথমিক পর্যায়ে সফলতা পেয়েছি। ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে খামার গড়ার পরিকল্পনা রয়েছে।”
স্থানীয় যুবক ফজলুল করিম বলেন, “এই এলাকায় দুম্বার খামার আগে কখনো দেখিনি। এখন এর চাহিদা বাড়ছে। কোরবানির হাটেও এর বাজার তৈরি হবে বলে বিশ্বাস করি।”
খামার দেখতে রংপুর শহর থেকে আসা মোহাম্মদ শামীম বলেন, “এর আগে কখনো দুম্বা দেখিনি। আগ্রহ থেকেই এসেছি। আমিও ছোট পরিসরে খামার শুরু করার কথা ভাবছি।”
জাহিদ জানান, তার খামারে দুম্বার ওজন ৭৫ থেকে ১২০ কেজি পর্যন্ত। ভবিষ্যতে দুবাইয়ের আউয়াসি জাতের দুম্বা এবং দেশীয় ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল যুক্ত করে খামার বিস্তারের পরিকল্পনা রয়েছে।
জাহিদের মতে, “বাংলাদেশের আবহাওয়া দুম্বা পালনের জন্য উপযোগী। এখন অনেকেই দুম্বা খামারে আগ্রহী হচ্ছেন। প্রান্তিক পর্যায়ে দুম্বা ছড়িয়ে দিতে পারলে সফলতা নিশ্চিত।”
পশু চিকিৎসক ডা. মো. আবু ছাঈদ বলেন, “দুম্বা পালন ভেড়া বা ছাগলের মতোই সহজ। অতিরিক্ত প্রশিক্ষণ ছাড়াও দুম্বা লালন-পালন সম্ভব। এতে রোগব্যাধিও কম দেখা যায়।”