ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ১২ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

চাঁদা দাবির ভিডিও ভাইরাল, বৈষম্যবিরোধী নেতাকে শোকজ

চাঁদা দাবির ভিডিও ভাইরাল, বৈষম্যবিরোধী নেতাকে শোকজ

গাইবান্ধা জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক শরিফুল ইসলাম আকাশের চাঁদা দাবির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার (ভাইরাল) পর তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে।

গত মঙ্গলবার রাতে দ্য রেড জুলাই গাইবান্ধা জেলা আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান ও সংগঠক সাজ্জাদ রহমান রায়হানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

নোটিশে বলা হয়, ‘আপনার (শরিফুল ইসলাম আকাশ) বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের হামলাকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি সদর থানায় একটি মামলা হয়েছে। সেই মামলায় তালিকা থেকে নাম বাদ দিয়ে এক ভুক্তভোগীর কাছে চাঁদা দাবির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। সে বিষয়টিকে কেন্দ্র করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গাইবান্ধা জেলার সংশ্লিষ্টতার প্রশ্ন উঠেছে।’ সেখানে আরও বলা হয়, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কোনো প্রকার অবৈধ কর্মকাণ্ডকে প্রশ্রয় দেয় না। অতএব, অভিযোগের বিষয়ে কেন আপনার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, নোটিশ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কারণ ব্যাখ্যা করে নিম্ন স্বাক্ষরকারীর (দ্য রেড জুলাই সংগঠক সাজ্জাদ রহমান রায়হানের) কাছে পৌঁছাতে হবে।’

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার (১০ জুন) ৫ মিনিট ৫২ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় ওঠে। ভিডিওতে গাইবান্ধা পৌরসভার সাবেক মেয়র মতলুবর রহমানের ভাগনে এমরানের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গাইবান্ধার যুগ্ম আহ্বায়ক শরিফুল ইসলাম আকাশের চাঁদা দাবি কথোপকথন শোনা যায়।

এ বিষয়ে কথা বলতে শরিফুল ইসলাম আকাশ ও ভুক্তভোগী ইমরানের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি।

ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে আকাশকে বলতে শোনা যায়, ‘আমরা নয়জন আছি পাঁচ-সাত লাগবে।’ উত্তরে ভুক্তভোগী বলেন, ‘দুই লাখ দিয়েছি। আরও দাবি করলে মামাকে (সাবেক মেয়র মতলুবর রহমান) বলতে হবে।’ আকাশ বলেন, ‘আমার জন্য তো আপনার কাছে ১০টা নেই নাই। আপনি যেটা দিতে চাইছেন সেটা দিতে হবে। জীম (বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাইবান্ধা সদস্যসচিব) তা না হলে মানবে না। এ ছাড়া ফরহাদ ভাই আপনাকে তো ক্লিয়ার বলে দিছে।’ উত্তরে এমরান বলেন, ‘মামা কয়েক দিন আগে এসকেএস ইনে যাওয়ার জন্য ওরা ২০ হাজার টাকা চেয়েছিল, আমি তো দিয়েছি।’ আকাশ বলেন, ‘আপনি মামা ডাকছেন, এ জন্য অনেক সেক্রিফাইস করছি। টাকাটা না দিলে ছেলেপেলে মানছে না। অন্তত কিছু করে দিয়ে আমার সম্মানটা রক্ষা করেন।’ এমরান বলেন, ‘আমি এতগুলো টাকা দিতে পারব না। মেয়র মামার কাছ থেকে শুনে ফোন দিচ্ছি। হোয়াটসঅ্যাপে ফোনটা খোলা রাখেন। ঠিক আছে।’ আকাশ বলেন, ‘আমি রাতে ঢাকায় যাব। সন্ধ্যার মধ্যেই করেন মামা।’ এমরান বলেন, ‘ফরহাদ (নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতা) তো ঝামেলা লাগাইছে আমার সাথে মেয়র মামার। আমাকে টাকার জন্য চাপ দেয়, অন্যদিকে মামাকে বলেন, আপনি আমার চাচা হন, টাকা দেওয়া লাগবে না।’ উত্তরে আকাশ বলেন, ‘ফরহাদ ভাই তো সব ছেলেপেলের সাথে ডিল করেন। এগুলো আপনাকে বুঝতে হবে।’

একটি সূত্র বলছে, গাইবান্ধা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব বায়োজিদ বোস্তামী জীম ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা ফরহাদ খালাতো ভাই। আওয়ামী লীগ নেতার কাছ থেকে ‘চাঁদাবাজি’ ও ‘মামলা-বাণিজ্য’ দেখাশোনা করেন ফরহাদকে দিয়ে।

গাইবান্ধার দ্য রেড জুলাই আন্দোলনের আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান বলেন, ‘তাঁরা যে চাঁদা দাবি করছেন, এটা স্পষ্টভাবে ধারণা করা যাচ্ছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সন্তুষ্টিমূলক জবাব না পেলে আমিও পদত্যাগ করতে পারি।’

শোকজ,বৈষম্যবিরোধী নেতা,চাঁদা,ভিডিও,ভাইরাল
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত