ঢাকা সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ঈশ্বরদীতে গরু-মহিষের ক্ষুরারোগের টিকা কার্যক্রম পরিদর্শন

ঈশ্বরদীতে গরু-মহিষের ক্ষুরারোগের টিকা কার্যক্রম পরিদর্শন

পাবনার ঈশ্বরদীতে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেনারি হাসপাতালের আয়োজনে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পিপিআর রোগ নির্মূল ও ক্ষুরারোগ নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের আওতায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে ও খামারে গিয়ে বিনামূল্যে খুরা রোগ (এফ এম ডি) টিকা দান কার্যক্রম পুরো দমে চলছে।

মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) বিকেলে পাবনা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এ,কে,এস,এম, মুশাররফ হোসেন উপজেলার সাড়া ইউনিয়নের পদ্মা নদীর চরে গড়ে ওঠা মহিষের খামার গুলো ও ক্ষুরারোগের টিকা দান কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।

এর আগে, দুপুরে মুলাডুলি ইউনিয়নের আব্দুল্লাপুর গবাদি পশুর কৃষক ও খামারিদের সঙ্গে টিকাদান কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। এ সময় তার সাথে ছিলেন ঈশ্বরদীতে অবস্থিত পাবনা জেলা কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের উপ-পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোছা: আকলিমা খাতুন।

বর্ষাকালে প্রতি বছরই খুরা রোগ (এফ এম ডি) প্রকোপ বাড়ে। এতে গরু মহিষের মালিক ও খামারিরা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেনারি হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ঈশ্বরদী উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভাতে ২৯ জুন থেকে ১০ আগস্ট এর মধ্যে এই খুরা রোগের টিকা প্রদান কার্যক্রম শেষ করা হবে। চার বছরের উপরের বয়সের গরু ও ছয় মাসের কম গর্ভবতী গাভীকে এই টিকা প্রদান করা যাবে। উপজেলায় শুক্রবার ও শনিবারসহ সপ্তাহের সাতদিনই এই টিকা কার্যক্রম চলছে। প্রত্যেক টিমে তিনজন করে আটটি টিমে বিভক্ত হয়ে প্রত্যেকটি বাড়ি বাড়ি ও খামারে গিয়ে বিনামূল্যে ক্ষুরারোগের টিকা দান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। প্রত্যেকটি গরু মহিষকে ছয় মাস পরপর দুই বছরে চারবার এই ক্ষুরারোগের টিকা দেওয়া হবে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোছা. আকলিমা খাতুন জানান, সারা বছরেই খুরা রোগ দেখা গেলেও বর্ষাকালে গবাদিপশুর ঘোড়া রোগের প্রকোপ বাড়ে। যেসব রোগ মারাত্মক ও অর্থনৈতিক ক্ষতি সাধন করে তাদের একটি ক্ষুরারোগ। ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিস (এফ এম ডি) এটা সাধারণত ক্ষুরারোগ নামে পরিচিত। দ্বিবিভক্ত পশুর ক্ষুরে এই রোগ বেশি হয় বলে তার নাম ক্ষুরারোগ। মুখে ও ক্ষুরে ক্ষত, প্রচণ্ড জ্বর, লালা ঝরা আর খেতে না পারা। ঈশ্বরদীতে বর্ষাকালে ক্ষুরা রোগের কারণে প্রতি বছরই কৃষক ও ডেইরি খামারে ব্যাপক ক্ষতি হয়।

তিনি আরো জানান, ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত পশুর শরীরে ফোস্কার অভ্যন্তরে তরলের মধ্যে ভাইরাস বিকাশ লাভ করে। আর পশুর লালা, প্রস্রাব, গোবর, চামড়া, দুধ, ফোসকা মধ্যস্থ তরল, শ্বাস ত্যাগ ইত্যাদির মাধ্যমে নির্গত হয়। খাবারের মাধ্যমে ও সংস্পর্শের মাধ্যমে অসুস্থ পশু থেকে সুস্থ পশুতে ছড়ায়।

ভাইরাসজনিত রোগ তাই এর বিশেষ কোনো চিকিৎসা নেই। তবে ভালোভাবে পরিচর্যাসহ কিছু ব্যবস্থা নিতে ভালো ফল পাওয়া যায়। প্রথমে আক্রান্ত পশুকে আলাদা করে পরিষ্কার ও শুষ্ক স্থানে রাখতে হবে।

যেহেতু এই রোগে পশুর মুখে ফোসকা পড়ে ঘা হয় তাই মুখে সোহাগার গুঁড়ো করে মধু মিশিয়ে দিনে ২-৩বার লাগাতে হবে।

পটাসিয়াম পারমাঙ্গানেট দিয়ে মুখ ধুয়ে দিতে হবে দিনে ২-৩ বার। মশা মাছির উপদ্রব কমানোর জন্য পায়ের ক্ষুরে ক্ষত হলে পটাসিয়াম পারমাঙ্গানেট দ্বারা পরিষ্কার রাখতে হবে দিনে ২-৩ বার। সেই সময় গরু মহিষের মুখে ঘা থাকায় শক্ত খাদ্য পরিহার করে নরম, তরল জাতীয় খাদ্য খেতে দিতে হবে।

সাধারণত রোগ প্রতিরোধের জন্য ৪-৬ মাস বয়সে প্রথম টিকা এবং বছরে ২ বার টিকা প্রয়োগে রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে।

সংবেদনশীল সব সুস্থ পশুকে টিকা দিয়ে প্রতিরোধ বুহ্য তৈরি করা যাবে।

ক্ষুরারোগ,টিকা কার্যক্রম
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত