ঢাকা সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

সাপুড়ের প্রাণ নেওয়া সাপকে কাঁচা চিবিয়ে খেলেন আরেক সাপুড়ে

সাপুড়ের প্রাণ নেওয়া সাপকে কাঁচা চিবিয়ে খেলেন আরেক সাপুড়ে

সাপ ধরতে গিয়ে সাপের ছোবলে প্রাণ গেছে এক সাপুড়ের। সাপুড়ের প্রাণনাশী সেই সাপকে আবার কাঁচাই চিবিয়ে খেয়ে ফেলেছেন আরেক সাপুড়ে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার বল্লভের খাষ ইউনিয়নে।

বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে বল্লভের খাষ ইউনিয়নের ডাক্তার পাড়ার সাপুড়ে বয়েজ উদ্দিন পাশের ইউনিয়ন কালিগঞ্জের কাপালিপাড়ার ইমরান আলীর বাড়িতে সাপ ধরতে যান। ইমরান আলীর বাড়ির রান্নাঘরের একটি ইঁদুরের গর্তে বাসা বাঁধে একটি কিং কোবরা সাপ। সঙ্গে ছিল ১৫-১৬টি সাপের বাচ্চাও। খাল খুঁড়ে সাপের বাচ্চাগুলো ধরার পর বড় সাপটিও ধরে ফেলেন সাপুড়ে বয়েজ উদ্দিন। সাপটিকে বস্তায় ঢোকানোর আগেই সেটি তাকে হাতে ছোবল দেয়।

প্রথমে ছোবলে তেমন কিছু না হলেও বাড়িতে ফেরার পর বিষক্রিয়ায় ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে পড়েন বয়েজ উদ্দিন। দ্রুত তাকে ভূরুঙ্গামারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

মরদেহ বাড়িতে আনার পর একে একে আসতে থাকেন কয়েকজন ওঝা ও সাপুড়ে। মোজাহার নামের এক ওঝা বড় সাপসহ বাচ্চাগুলো নিয়ে নেন। পরে গাবতলা বাজারে এসে তিনি বড় সাপটিকে কাঁচা চিবিয়ে খান। এ সময় গাবতলা বাজারে তার সাপ খাওয়ার দৃশ্য দেখতে প্রচুর লোক ভিড় জমান।

মোজাহারের বাড়ি ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের বলদিয়া বাজার এলাকায়। এলাকাবাসীর কাছে তিনি 'সাপ খাওয়া মোজাহার' নামে পরিচিত। তিনিও সাপ ধরেন এবং সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসা দিয়ে থাকেন।

মোজাহার জানান, বয়েজ উদ্দিনকে হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তিনি খবর পান এবং সাপের পরিচয় পাওয়ার পর বলেন, তিনি বাঁচবেন না। হাসপাতালে নেওয়ার পর যখন তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়, তখন বয়েজ উদ্দিনের স্বজনেরা মোজাহারকে ফোনে ডেকে আনেন। পরে বয়েজ উদ্দিনের ধরা সাপের বাচ্চাসহ বড় সাপটি তাকে দেওয়া হয়। তিনি সেগুলো নিয়ে গাবতলা বাজারে গিয়ে বড় সাপটিকে মেরে রক্ত-মাংস খান। আর ছোট বাচ্চাগুলো ছেড়ে দেওয়ার কথা জানান।

তিনি আরও বলেন, কাঁচা সাপ খাওয়া তার পুরোনো অভ্যাস।

এদিকে, চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করার পরও সন্দেহ থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঝাড়ফুঁক চলতে থাকে বলে জানা যায়।

এ বিষয়ে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এস.এম. আবু সায়েম বলেন, “সাপে কাটলে ঝাড়ফুঁকে কোনো কাজ হয় না। সাপে কাটার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে আনতে হবে। আমাদের এখানে পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনম মজুত আছে। মানুষকে আরও সচেতন হতে হবে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে সাপের উপদ্রব বেশি থাকে। সাপে কাটলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে, নইলে বিপর্যয় ঘটতে পারে।”

সাপুড়ে,সাপ
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত