পাবনা পৌর এলাকায় সড়কের বেহাল দশায় জনদুর্ভোগ চরমভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। পাবনা পৌরসভার ২৪০ কিলোমিটার পাকা সড়কের প্রায় অর্ধেকই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন সংস্কারহীন এসব সড়কে চলাচলে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। খানাখন্দে ভরা সড়কে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। সামান্য বৃষ্টিতেই সড়কে সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। শহরের দিলালপুর, বড় বজায়, কফিল উদ্দিন পাড়া, শ্যামঠাকুর রোড, হাসপাতাল সড়ক, আতাইকুলা সড়ক, ছাতিয়ানী, বাবলাতলা, নয়নামতি, শালগাড়িয়া, রাধানগর, যুগিপাড়া এলাকার বেশ কিছু সড়ক বর্ষা মৌসুম জুড়েই পানির নিচে ডুবে থাকে।
সরেজমিন শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, শহরের প্রবেশপথ মুজাহিদ ক্লাব থেকে খেয়াঘাট সড়ক, হাসপাতাল সড়ক, শালগাড়িয়া গোরস্তান সড়কসহ বেশ কয়েকটি সড়কের রাস্তায় বিটুমিন আর খোয়া উঠে সড়কে সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দ। হাসপাতাল সড়কের বেহাল দশায় চলাচলরত রোগীদের ব্যাপক সমস্যা হচ্ছে। বিশেষ করে সদ্য অপারেশনকৃত, ডেলিভারি, অর্থোপেডিক রোগীদের জন্য ভোগান্তির শেষ নাই।
শহরের প্রাণকেন্দ্র বড় বাজার ও নিউ মার্কেট এলাকাতেও একই দশা। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হওয়াতে বর্ষাকালে বেশিরভাগ সময় জলজট সৃষ্টি হয় এসব সড়কে। প্রতিদিন হাজারো মানুষের চলাচলে ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
শহরের ১ নং ওয়ার্ডের গোবিন্দা ও ৩ নং ওয়ার্ডের শ্যামঠাকুর মহল্লার ব্যস্ত সড়কেরও বেহাল দশা। কালেক্টরেট স্কুলের সামনে থেকে ভূমি অফিস মোড় পর্যন্ত ব্যস্ততম রাস্তাটি খানাখন্দে ভরে গেছে। রাস্তার পাশ দিয়ে প্রায় ৮ ফুট গভীর ড্রেনের উপরের কয়েকটি ঢাকনা ভেঙে গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিন এই পথ দিয়ে শতশত মানুষ চলাচল করে। ঘটতে পারে ভয়াবহ দুর্ঘটনা।
গোবিন্দা এলাকার বাসিন্দা জামাল শেখ বলেন, ব্যস্ত রাস্তাটিতে প্রতিদিন হাজারো মানুষ চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। রাস্তার পাশে ড্রেনের উপরের কয়েকটি ভাঙা ঢাকনা দ্রুত সংস্কারের দাবি জানান তিনি।
শহরের আটুয়া এলাকার বাসিন্দা সাইদুল হক বলেন, ছাতিয়ানী এলাকার কয়েকটি সড়কে বর্ষা মৌসুম জুড়েই পানির নিচে ডুবে থাকে। ড্রেনের বর্জ্য, নোংরা পানি মাড়িয়েই চলাচল করতে হয় তাদের। দ্রুত সময়ে রাস্তার সংস্কার চান তিনি।
পাবনা জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি মোসাব্বির হোসেন সঞ্জু বলেন, দেশের প্রাচীনতম জেলা সদরের পাবনা পৌরসভার ভেতর রাস্তাঘাটের বেহাল দশা। এতে মানুষের ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। শহরের মানুষের দুুর্ভাগ লাঘবে সড়কগুলো দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
শহরে বেহাল রাস্তার পাশাপাশি জনভোগান্তিকর কয়েকটি বিষয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পৌরবাসীর। পৌর শহরে মধ্যে জরুরি সেবার দুটি লাশবাহী গাড়িই নষ্ট। মোট ১২টি ময়লার গাড়ির মধ্যে বেশ কয়েকটি অকেজো হয়ে পড়ে আছে, এতে করে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ব্যাহত হচ্ছে। শহরে অনেক অলিগলি রাস্তায় রোড লাইট নষ্ট থাকায় সন্ধ্যার পর সেখানে মাদক কেনা-বেচা চলছে বলে পৌরবাসীর অভিযোগ রয়েছে।
পাবনা পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মো. ওবায়েদুল উল হক জানান, অধিকাংশ সড়কেরই টেন্ডার হয়েছে, দ্রুত সময়ে কাজ শুরু হবে। জলাবদ্ধতা বৃষ্টির সময় বেশি হয় বলে জানান তিনি।
তিনি আরো জানান, জরুরি সেবার দুটি লাশবাহী গাড়ির মধ্যে একটি মেরামত করা হয়েছে। ময়লার গাড়িগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
