চুয়াডাঙ্গায় গত কয়েকমাস ধরে সবজির দামের উত্তাপ কমছেই না। গেল কয়েক সপ্তাহ ধরে সবজির সরবরাহ কম বাজারে। ফলে বাজারে সবজির দাম উর্দ্ধমুখীয় থাকছে। দাম বাড়তি সব প্রকার সবজির। যা ৫০ টাকার উপরে ছুঁয়েছে দাম। আগের মতো বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে মাছ ও মাংস এবং বিভিন্ন মুদি নিত্যপণ্যের দর। শনিবার সকালের দিকে চুয়াডাঙ্গা নিচের বাজারসহ অন্যান্য সব বাজারে এই অস্বাভাবিক দামের চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে ঢুকতেই ব্যাগ হাতে টাকার হিসাব নিকাশ করতে দেখা যায় টাইসমিস্ত্রির দিনমজুর আনোয়ার হোসেন। ১ হাজার টাকাসহ বাজারে এসে এক লম্বা লিস্ট নিয়ে এদোকান থেকে অদোকান দৌড়াদৌড়ি করছে। কয়েক রকমের সবজির কিনেই আনোয়ারের ৬০০ টাকা শেষ। আর আছে ৪০০ টাকা। এই টাকা দিয়ে কি কিনবে তা কূলকিনারা খুঁজে পাচ্ছেন না তিনি। এখনো বাকি রয়েছে মুদি পণ্য ও মাছ মাংস। এই আনোয়ারের মতো বাজারে আসা অনেককেই নিত্যপণ্যের দামের কাছে অসহায় হয়ে যায়। গত সপ্তাহের ব্যবধানে ২০ টাকা কমলেও বেগুনের দাম ৮০ টাকা কেজি। ফলে ক্রেতাদের এখনো স্বস্তি ফিরেনি সবজির বাজারে। বাজারে আগাম সবজির সরবরাহের শুরুতে দাম হাঁকাচ্ছে। প্রতিকেজি সিম ২০০ টাকা কেজি। আর টমেটো ১২০ টাকা। আগের সপ্তাহের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে পটল ৬০ টাকা দর, করলা ১০০ টাকা, পেঁয়াজ ৮০ টাকা কেজি, কাঁচা মরিচ ১৬০ টাকা। তবে দামে স্বস্তি রয়েছে আদা রসুন ও আলুর বাজারে।
এদিকে গত সপ্তাহের মতো বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষের আমিষ ব্রয়লার মুরগি। প্রতিকেজি এই মাংস ২৪০ টাকা। আর সোনালি মুরগি ৩২০ ও প্যারিস মুরগির মাংস ৪৫০ টাকা। আগের মতোই বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে খাসি ও গরুর মাংসে দর। বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও মাছের দামে আগুন। প্রতি কেজি ছোট ও বড় সব প্রকারের মাছ কেজিতে ৫০ টাকা বাড়তি। তবে কয়েক সপ্তাহ ঘুরে ডিমের দাম কমতে শুরু করেছে। এক খাঁচি ডিম ৩৩০ টাকা।
বাজারে সবজি ও আমিষ পণ্যের পাশাপাশি চড়া হচ্ছে কিছু মুদিপণ্যের দামে। কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে মসুর ডাল ১৪০ টাকা। তাছাড়া অন্য ডালের দাম স্বাভাবিক রয়েছে। তবে এখনো দাম কমেনি আট ও খোলা সয়াবিন তেল এবং সব প্রকার মসলার দাম। আর অন্যান্য মুদি পণ্য প্রতিনিয়ত দাম ওঠানামা করছে।
বাজারে আসা ক্রেতা আনোয়ার হোসেন বলেন, বাজারে কোন জিনিস কিনে খাবো, তা কেনার কায়দা নেই । এতো দাম জিনিসের তা বলার কথা না। সবজির দামে তো সাধারণ ক্রেতারা শেষ হয়ে যাচ্ছেন। মাছ ও মাংসের দাম তো কমছেই না।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে ক্ষুব্ধ হয়ে আরেক ক্রেতা বলেন, বাজারে নিয়মিত তদারকি মনিটরিং হয় না। বাজারে সব জিনিসের দামে উত্তাপ। কোনো প্রকার জিনিস কিনে খাবো তার কায়দা নেই । আয়ের থেকে ব্যয় অনেক বেশি । বাজারটা নিয়মিত মনিটরিংয়ে রাখলে দাম কিছুটা স্বাভাবিকে আসবে।
বাংলাদেশ কনজুমার এসোসিয়েশন অব ক্যাব চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সভাপতি অ্যাড. মানিক আকবর বলেন, বাজারে সবজির দাম অনেক। সেই সাথে মাছ মাংস ও মুদি পণ্যের দাম বেশি। বাজার নিয়ন্ত্রণ টা চুয়াডাঙ্গা জেলায় খুব দুর্বল। বাজারের সিন্ডিকেটদের ভাঙতে হবে। সেই সাথে বাজার মনিটরিং আরও জোরদার করলে পণ্যের দাম স্বাভাবিকভাবে থাকবে। এই জন্য প্রশাসনকে এগিয়ে আসার আহ্বান।
