ঢাকা রোববার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ছাত্রদলের কমিটিতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী, ঈশ্বরদীতে বিক্ষোভ

ছাত্রদলের কমিটিতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী, ঈশ্বরদীতে বিক্ষোভ

ত্যাগীদের বাদ রেখে ঈশ্বরদীতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের নিয়ে ঈশ্বরদী সরকারি কলেজ ছাত্রদলের কমিটি গঠনের অভিযোগ উঠেছে। গঠিত কমিটি প্রত্যাখ্যান ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে ঈশ্বরদীতে দফায় দফায় বিক্ষোভ সমাবেশ ও দুই দফা সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার সন্ধ্যায় কলেজ ছাত্রদলের কমিটিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পুনর্বাসন এবং সৎ, যোগ্য ও ত্যাগীদের মূল্যায়ন না করায় বিতর্কিত কমিটি বাতিলের দাবিতে ঈশ্বরদী প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আবারও সংবাদ সম্মেলন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

ঈশ্বরদী উপজেলা ও সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদলের ব্যানারে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব ও লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ছাত্রদল নেতা ইব্রাহিম হোসেন।

জানা যায়, মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) রাতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের প্যাডে ঈশ্বরদী সরকারি কলেজ ছাত্রদলের ১২ সদস্যের নাম ও পদ সম্বলিত কমিটি ফেসবুকসহ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে।

ঘোষিত কমিটিতে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি মো. রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরের স্বাক্ষর রয়েছে। এতে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, ঘোষিত কমিটিতে সহ-সভাপতি পদে ছাত্রলীগের ইমরান খান ও ওমর শেখ শান্ত এবং সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদে তারেক মন্ডলকে পদায়ন করা হয়েছে। তারা তিনজনই ছাত্রলীগের ওয়ার্ড কমিটির বিভিন্ন পদে রয়েছেন এবং বিগত সংসদ নির্বাচনে ছাত্রলীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

এছাড়াও সাধারণ সম্পাদক পদে রিয়ামুল ইসলাম (রিয়াম) নামের একজনকে মনোনীত করা হয়েছে, যাকে কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা চেনেন না। গত ১৫–২০ দিন পূর্বে তিনি ঈশ্বরদী সরকারি কলেজে ভর্তি হয়েছেন, এখনও তার কলেজ আইডি কার্ডও হয়নি বলে উল্লেখ করা হয়।

বক্তারা আরও বলেন, অভিযোগের বিষয়ে আমরা ইতিমধ্যে জেলা ও কেন্দ্রীয় কমিটিকে অবহিত করেছি, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। সংবাদ সম্মেলন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল ঈশ্বরদী শহর প্রদক্ষিণ করে।

এদিকে কমিটি প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে মঙ্গলবার রাতেই ঈশ্বরদী শহর ও কলেজ ক্যাম্পাসে পৃথকভাবে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। রাত ১১টার দিকে কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশ করে কমিটি বাতিল ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে বক্তব্য রাখেন ঘোষিত কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি মায়দুল ইসলাম শাওন, ছাত্রদল নেতা মোস্তাফিজুর রহমান বিটু, ইমরান হোসেন সোহান, নাজমুল হাসান রিসাদ প্রমুখ। এ সময় কলেজ চত্বরে শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। তারা ঘোষিত কমিটি বাতিল ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে বিভিন্ন স্লোগান দেন।

অপরদিকে রাত ১২টার দিকে সরকারি কলেজ ছাত্রদলের একাংশের নেতাকর্মীসহ পদবঞ্চিতরা সংবাদ সম্মেলন করে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কলেজ কমিটি বাতিলের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। অন্যথায় তারা কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেন। সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা অযোগ্য নেতাকর্মী ও ছাত্রলীগারদের দিয়ে ছাত্রদলের কমিটি গঠনের তীব্র নিন্দা জানিয়ে কমিটি বাতিলের দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ঈশ্বরদী সরকারি কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম-সম্পাদক শ্রাবণ আহমেদ, সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক শ্যাম আগারওয়ালা বিকি, বর্তমান কমিটির প্রচার সম্পাদক মো. মাহমুদ হাসান শান্ত, দপ্তর সম্পাদক রোহান প্রীত আহমেদ ও উপজেলা কমিটির সদস্য ইব্রাহিম হোসেন প্রমুখ।

বক্তারা অভিযোগ করেন, কোনো কিছুর বিনিময়ে অযোগ্যদের দিয়ে হঠাৎ করে কমিটি করা হয়েছে। আমরা এ কমিটি মানি না। এমনকি নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের তিনজন নেতা-কর্মী রয়েছে কমিটিতে। সম্মেলনে ছাত্রদল নেতারা সরকারি কলেজের নতুন কমিটিকে অবৈধ ও অবাঞ্ছিত বলে ঘোষণা দেন।

পাবনা জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আমিনুল ইসলাম জানান, কেন্দ্রীয় কমিটি খোঁজখবর ও তদন্তের মাধ্যমে এই কমিটি ঘোষণা দিয়েছেন। এখানে জেলা কমিটির কিছু করার নেই। ছাত্রলীগারদের দিয়ে কমিটি করার বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাননি জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ঈশ্বরদী সরকারি কলেজ ছাত্রদলের কমিটি গঠনের বিষয়ে তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি বা কিছুই জানানো হয়নি। কমিটিতে ছাত্রলীগের কেউ থাকলে তদন্তসাপেক্ষে কেন্দ্রীয় কমিটির মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

ঈশ্বরদীতে বিক্ষোভ,ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী,ছাত্রদলের কমিটি
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত