ঢাকা শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

সলঙ্গায় বাড়ছে খুন-ধর্ষণ-চুরি, আতঙ্কে এলাকাবাসী

সলঙ্গায় বাড়ছে খুন-ধর্ষণ-চুরি, আতঙ্কে এলাকাবাসী

সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। এ এলাকার বিভিন্ন স্থানে খুন, ধর্ষণ, গরু চুরিসহ নানা অপরাধ প্রবণতা বাড়ছেই। এসব ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ১০ সেপ্টেম্বর ওই থানা এলাকার আমশড়া গ্রামের কৃষক আব্দুস সাত্তারের ৪টি ও আব্দুল মালেকের ২টি গরু চুরি হয়। এ বিষয়ে থানায় জিডি করলেও আজ পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি হয়নি।

১৪ সেপ্টেম্বর রাতে মাহমুদপুর গ্রামের কৃষক জিল্লুর রহমানের গোয়ালঘর থেকে ১০টি গরু চুরি হয়। ঘটনাটি জানার পর শোকে গরুর মালিক স্ট্রোক করেন এবং তিনি এখনো চিকিৎসাধীন।

৬ সেপ্টেম্বর অলিদহ গ্রামে স্কুলছাত্রী আফরিন জাহান যুথির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা—তা নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে এখনও নানা প্রশ্ন রয়েছে। ৭ অক্টোবর এরান্দহ চারমাথায় শাজাহান আলীর ২টি গরু চুরি হয়।

অলিদহ গ্রামের অটোভ্যান চালক আমিনুল ইসলাম ৫ আগস্ট জীবিকার তাগিদে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি। ১৮ অক্টোবর পাশের চকনিহাল গ্রামের একটি ডোবা থেকে হাড়–গোড় উদ্ধার করে পুলিশ। পরে আমিনুলের মা তার ছেলের প্যান্ট ও জামা দেখে লাশটি সনাক্ত করেন।

৮ অক্টোবর অজ্ঞাত ব্যক্তির হাতে খুন ও ধর্ষণের শিকার হয় জীবনপুর গ্রামের জাকারিয়ার মেয়ে স্কুলছাত্রী মিম (১৩)। আঙ্গারু এলাকা থেকে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে। ১১ অক্টোবর ভোরে সলঙ্গা হাইস্কুল সংলগ্ন পুকুরপাড় থেকে গ্রাম পুলিশ আন্না রানীর (৩৮) লাশ উদ্ধার করা হয়।

২২ অক্টোবর রাতে চকবুরু-ভেংড়ি গ্রামে ঘটে এক হৃদয়বিদারক ঘটনা। নেশার টাকা না পেয়ে শতবর্ষী দাদীকে কুপিয়ে খণ্ডিত করে নেশাগ্রস্ত নাতি সজীব (২২)।

১২ নভেম্বর সকালে সাহেবগঞ্জের ফুলজোড় নদী থেকে গরু ব্যবসায়ী আব্দুল লতিফ খতিবের (৩৫) হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

৩০ আগস্ট মাসুয়াকান্দি গ্রামে এক বৃদ্ধের কবলে ১০ বছরের শিশুর ধর্ষণের ঘটনা ঘটে এবং ২৪ সেপ্টেম্বর চড়িয়া শিকার মাঠপাড়ায় ৫ বছরের শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় আরেক বৃদ্ধ।

২৯ নভেম্বর ধুবিল কাটার মহলে গৃহবধূ লাবনী (২৫) পরকীয়ার জেরে খুন হন। ১ ডিসেম্বর দেওভোগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে পুকুর থেকে স্কুলছাত্র তাহসিনার (৬) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

এ বিষয়ে সলঙ্গা থানার ওসি হুমায়ুন কবির জানান, ইতোমধ্যে পুলিশ ও ডিবির সফল অভিযানে বেশ কয়েকটি মামলার আসামি গ্রেফতার ও রহস্য উদ্ঘাটন করা হয়েছে। খুন, ধর্ষণ, চুরি প্রতিরোধে টহল জোরদারসহ বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এসব ঘটনায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি নয়। তবে অপরাধ প্রবণতা কমাতে পুলিশ কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে এবং এলাকায় টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। পাশাপাশি অপরাধ দমনে জনগণকে আরও সচেতন হতে হবে।”

আতঙ্কে এলাকাবাসী,বাড়ছে খুন-ধর্ষণ-চুরি,সলঙ্গা
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত