অনলাইন সংস্করণ
১৫:৪৯, ২৬ আগস্ট, ২০২৫
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে থাকবে তিন স্তরের কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। মোতায়েন থাকবে সেনাবাহিনী। একইসঙ্গে বহিরাগতদের ব্যাপারে কঠোর অবস্থানের ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) সকাল বেলা সাড়ে ১১টায় নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে আয়োজিত এক সভায় ডাকসুর প্রচার-প্রচারণা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরুর ঘোষণা দেন প্রধান রিটার্নিং অফিসার প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন। এ সময় তিনি এসব তথ্য জানান ।
রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রফেসর ড. গোলাম রব্বানী জানান, ভোটের দিন তিন স্তরের নিরাপত্তা থাকবে। প্রথম স্তরে বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করবে প্রক্টরিয়াল বডি ও বিএনসিসি সদস্যরা। দ্বিতীয় স্তরে মোতায়েন থাকবে পুলিশ সদস্যরা। আর তৃতীয় স্তরে সেনাবাহিনী থাকবে নির্দিষ্ট প্রবেশপথে। তারা সারাদিন স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে এবং ভোট শেষে ব্যালটের নিরাপত্তার দায়িত্বও পালন করবে। ডিএমপি আমাদের সঙ্গে থাকবে। তারা সহযোগিতার পূর্ণ আশ্বাস দিয়েছে। ইতোমধ্যে কাজও শুরু করেছে।
বহিরাগতদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভোটের সাত দিন আগে থেকে কোনো বহিরাগত হলে থাকতে পারবে না। হাউস টিউটর ও প্রভোস্টদের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে। আমরা নোটিশ ছাড়াই হঠাৎ পরিদর্শন করব।
ড. গোলাম রব্বানী বলেন, ভোটের দিন পুরো ক্যাম্পাস সিলগালা থাকবে। শুধু বৈধ ভোটাররা প্রবেশ করতে পারবে। ওইসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মেট্রো স্টেশনও বন্ধ থাকবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধেকের বেশি শিক্ষার্থী অনাবাসিক উল্লেখ করে বলেন, তারা সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন ব্যবহার করেন। ভোটের দিনে তাদের সুবিধার্থে ট্রিপ বাড়ানো হবে। পাশাপাশি ডিএমপি কমিশনারকে অনুরোধ করা হয়েছে যাতে ঢাবি শিক্ষার্থীবাহী যানবাহন নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে।
ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন নির্বিঘ্ন করতে ক্যাম্পাসের সাতটি প্রবেশপথে সেনাবাহিনীকে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভোটের দিন থেকে তারা নিয়মিত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ব্যালট বাক্স সুরক্ষার কাজও করবে।
রিটার্নিং কর্মকর্তাদের এক সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ৮ সেপ্টেম্বর বিকেল থেকে ও ৯ সেপ্টেম্বর সারাদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেট্রোরেল স্টেশন বন্ধ থাকবে। একইসঙ্গে হলে কোনো বহিরাগত অবস্থান করতে পারবে না।
সভায় আরেক রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রফেসর ড. কাজী মারুফুল ইসলাম প্রার্থী ও ভোটারদের উদ্দেশে সতর্কবার্তা দিয়ে বলেন, নির্বাচনী প্রচারণা যেন শিক্ষার পরিবেশে ব্যাঘাত না ঘটায়। মুক্তিযুদ্ধ, জাতির পিতা, শহীদ ও দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য বরদাশত করা হবে না।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, লিঙ্গ, ধর্ম, জাতিগোষ্ঠী কিংবা অন্য কোনো পরিচয়ের ওপর আঘাত হানলে কেবল প্রার্থিতা নয়, তার ছাত্রত্ব ও আবাসিক সিটও বাতিল করা হবে। অনলাইনে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য বা হয়রানি প্রমাণিত হলে তাৎক্ষণিক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
রিটার্নিং অফিসার ড. জসীম উদ্দিন বলেন, ৪০ হাজার শিক্ষার্থীর সচেতন অংশগ্রহণের মধ্য দিয়েই এই নির্বাচন সফল হবে। জাতি এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে তাকিয়ে আছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ডাকসু নির্বাচন শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের নয় বরং গোটা দেশের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির একটি মাইলফলক হয়ে উঠবে।