অতিরিক্ত কফি খেলে যা ঘটে

সকালের শুরুতে বা কাজের ফাঁকে এক কাপ গরম কফি অনেকেরই প্রিয়। কফিতে থাকা ক্যাফেইন দ্রুত শক্তি জোগায়, ঘুম তাড়ায় এবং মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করে। তবে মাত্রা ছাড়ালে এই একই কফিই শরীরের জন্য ক্ষতির কারণও হতে পারে। মায়োক্লিনিকের তথ্য মতে- দিনে ৩-৪ কাপের বেশি কফি পান করলে শরীরে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

চলুন জেনে নেওয়া যাক অতিরিক্ত কফি শরীরে কী কী প্রভাব ফেলতে পারে-

ঘুমের সমস্যা : ক্যাফেইন মস্তিষ্কের ঘুম-নিয়ন্ত্রণকারী রাসায়নিককে বাধা দেয়। ফলে কফি পান করার পর ঘুম আসতে দেরি হয়। কারও কারও বারবার ঘুম ভেঙে যায় এবং গভীর ঘুম হয় না। ‘স্লিপ মেডিসিন রিভিউস’-এর একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ঘুমাতে যাওয়ার আগে ছয় ঘণ্টার মধ্যে কফি পান করলে ঘুমের গুণগত মান কমে যায়।

হৃৎস্পন্দন দ্রুত হয়ে যাওয়া : কফি বেশি খেলে হৃৎস্পন্দন দ্রুত হয় এবং বুক ধড়ফড় করতে পারে। বিশেষ করে যাদের আগে থেকেই হার্টের সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য অতিরিক্ত ক্যাফেইন বিপজ্জনক হতে পারে।

হজমের সমস্যা : ক্যাফেইন অ্যাসিডিক প্রকৃতির হওয়ায় পেটে জ্বালাপোড়া, গ্যাস বা অ্যাসিডিটি বাড়তে পারে। খালি পেটে কফি খেলে এসব সমস্যা বেশি হয়।

উদ্বেগ ও নার্ভাসনেস : কফি মনোযোগ বাড়ালেও অতিরিক্ত ক্যাফেইন শরীরে অ্যাড্রেনালিন হরমোন বাড়ায়। এতে উদ্বেগ, হাত কাঁপা, নার্ভাস লাগা এবং মুডের ওঠানামা হতে পারে।

পানিশূন্যতা : কফি মূত্রবর্ধক হওয়ায় বারবার প্রস্রাব হয়। এতে শরীর থেকে পানি বের হয়ে ডিহাইড্রেশনের ঝুঁকি বাড়ে। পর্যাপ্ত পানি না খেলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া, মাথাব্যথা বা মাথা ঘোরা দেখা দিতে পারে।

হাড় ক্ষয়ের ঝুঁকি : পাবমেডে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত অতিরিক্ত কফি খেলে খাদ্যের ক্যালসিয়াম শোষণে সমস্যা হয়। এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবে হাড় দুর্বল হয়ে অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি বাড়তে পারে।

অর্থাৎ দিনে এক-দুই কাপ কফি শরীরকে সতেজ ও কর্মক্ষম রাখতে সাহায্য করলেও ৩-৪ কাপের বেশি খাওয়া উচিত নয়। আর যারা ঘুমের সমস্যা, অ্যাসিডিটি বা হার্টের অসুখে ভোগেন, তাদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কফি খাওয়াই ঠিক নয়।