ঢাকা সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

দুই বছরের মধ্যে এইডস টিকা আনতে চলেছে রাশিয়া!

দুই বছরের মধ্যে এইডস টিকা আনতে চলেছে রাশিয়া!
প্রতীকী ছবি

বিশ্বের প্রথম অ্যাকোয়ার্ড ইমিউনো ডেফিসিয়েন্সি সিনড্রোম বা এইডসের টিকা তৈরি করতে যাচ্ছে রাশিয়া। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ২ বছর বা তারও কম সময়ের মধ্যেই বাজারে আসার জোর সম্ভাবনা আছে এই টিকার।

রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ব বার্তাসংস্থা রিয়া নভোস্তি’র বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে রুশ সংবাদামাধ্যম রাশিয়া টুডে।

এইডস বিরোধী এই টিকা তৈরি করছে রাশিয়ার চিকিৎসা ও অনুজীববিজ্ঞান গবেষণা বিষয়ক সরকারি প্রতিষ্ঠান গামালিয়া ন্যাশনাল সেন্টার।

বুধবার (২৭ আগস্ট) গামালিয়া ন্যাশনাল সেন্টারের মহামারিবিদ্যা (এপিডেমিওলজি) বিভাগের প্রধান ভ্লাদিমির গুশচিন বুধবার এক সাক্ষাৎকারে রিয়া নভোস্তিকে জানিয়েছেন, এই বহুপ্রতীক্ষিত ভ্যাকসিনটি এমআরএনএ প্রযুক্তি অনুসরণ করে প্রস্তুত করা হবে।

এই বহুপ্রতীক্ষিত ভ্যাকসিনটি এমআরএনএ প্রযুক্তির উপর ভিত্তি করে তৈরি বলে জানিয়েছেন ইনস্টিটিউটটির মহামারীবিদ্যা বিভাগের প্রধান গুশচিন। ঐতিহ্যবাহী ভ্যাকসিনের চেয়ে এমআরএনএ ভিত্তিক ভ্যাকসিনগুলো কাজ করে ভিন্নভাবে—এগুলো শরীরের কোষগুলোকে নির্দিষ্ট কিছু প্রোটিন তৈরির জন্য জেনেটিক নির্দেশনা দেয়, যা ইমিউন প্রতিক্রিয়া জাগিয়ে তোলে এবং ভাইরাস শনাক্ত করে তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে।

গুশচিন বলেন, “আমরা এখন এমন অ্যান্টিজেন তৈরির পর্যায়ে রয়েছি, যা একটি বিস্তৃতভাবে কার্যকর ইমিউন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। এই ভ্যাকসিন কতটা সফল হবে, তা নির্ভর করবে আমরা যে ইমিউনোজেন ব্যবহার করছি, তা কতটা কার্যকরভাবে সব ধরনের এইচআইভি ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দিতে পারে তার ওপর।”

তিনি জোর দিয়ে বলেন, এইচআইভি একটি অত্যন্ত বৈচিত্র্যময় ভাইরাস, যা ভ্যাকসিন তৈরির কাজটিকে খুবই কঠিন করে তোলে।

উল্লেখ্য, গামালেয়া সেন্টার আগেও বিশ্বের অন্যতম প্রথম কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন "স্পুটনিক ভি" তৈরি করেছিল, যেটি ২০২০ সালের আগস্টে চালু হয়। ওই ভ্যাকসিন প্রায় ৯৭.৮ শতাংশ কার্যকারিতা দেখায় এবং এর কোনো গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এটি প্রায় ৭০টি দেশে অনুমোদিত হয়েছিল।

গুশচিন আরও বলেন, যদিও এইচআইভি ভ্যাকসিন তৈরির কাজ বহু বছর ধরেই চলছে, এমআরএনএ প্ল্যাটফর্মের একটি বড় সুবিধা হলো এটি অনেক বেশি শক্তিশালী ইমিউন প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে।

“এটি একটি জেনেটিক্যালি ইঞ্জিনিয়ার্ড ভ্যাকসিন হবে, যা শুরুতে শুধুমাত্র কম্পিউটারে ডিজাইন করা হয়,” বলেন গুশচিন। তিনি যোগ করেন, ইনস্টিটিউট বর্তমানে এমন ইমিউনোজেন তৈরি করছে এবং পরীক্ষা করছে, যা সবচেয়ে বেশি সংখ্যক এইচআইভি স্ট্রেইনের বিরুদ্ধে কার্যকরভাবে কাজ করতে পারে।

দ্বিতীয় ধাপে, সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ইমিউনোজেনগুলো জটিল প্রাণী মডেলে পরীক্ষিত হবে। পুরো উন্নয়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে প্রায় দুই বছর সময় লাগবে বলে তিনি জানান।

ইউএনএইডস-এর গ্লোবাল এইডস আপডেট ২০২৫ অনুসারে, ২০১০ সালের পর থেকে বিশ্বব্যাপী নতুন এইচআইভি সংক্রমণ ৪০ শতাংশ কমেছে, এবং ২০২৪ সালে নতুন সংক্রমণের সংখ্যা ছিল ১৩ লাখ। এই সময়ের মধ্যে এইডস-সম্পর্কিত মৃত্যুহার ৫৬ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে, যা সম্ভব হয়েছে উন্নত পরীক্ষার ও চিকিৎসা সেবার প্রসারের ফলে। ২০২৪ সালের শেষে, বিশ্বের ৪.০৮ কোটি এইচআইভি আক্রান্ত মানুষের মধ্যে ৭৭ শতাংশ অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল থেরাপি গ্রহণ করছিলেন, এবং ৭৩ শতাংশ রোগীর ভাইরাল লোড নিয়ন্ত্রণে ছিল।

সূত্র : আরটি

এইডস টিকা,রাশিয়া,গামালিয়া ন্যাশনাল সেন্টার
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত