ঢাকা শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনে কোম্পানির মতামত গ্রহণে আপত্তি

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনে কোম্পানির মতামত গ্রহণে আপত্তি

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনে তামাক কোম্পানির মতামত গ্রহণের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে এবং প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাস করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন অব দি রুরাল পুয়র (ডর্‌প)। তারা বলেছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (WHO FCTC)–এর আর্টিকেল ৫.৩ লঙ্ঘন করা যাবে না।

মঙ্গলবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত ‘তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এফসিটিসি বাস্তবায়ন ও আর্টিকেল ৫.৩ প্রতিপালনে সরকারের কাছে প্রত্যাশা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানানো হয়।

কমিউনিটি ক্লিনিক হেলথ সাপোর্ট ট্রাস্টের সভাপতি ড. আবু মুহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, প্রতিবছর বাংলাদেশে তামাকজনিত রোগে ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ মারা যায় এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েন। অথচ তামাক কোম্পানিগুলো মুনাফার আশায় ভ্রান্ত প্রচার চালাচ্ছে যে, সংশোধনী আইন পাস হলে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হবে।

বাস্তবে দেখা গেছে, ২০০৫ সালে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন এবং ২০১৩ সালে সংশোধনের পর থেকে সরকারের রাজস্ব আয় বেড়েছে সাড়ে ১২ গুণ। একই সময়ে ২০০৯ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে তামাক ব্যবহার ১৮ শতাংশ কমেছে। ফলে রাজস্ব আয় ও তামাক ব্যবহারের মধ্যে নেতিবাচক সম্পর্ক নেই।

বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, সম্প্রতি ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪’-এর খসড়া পর্যালোচনার জন্য গঠিত উপদেষ্টা কমিটি জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের—যার মধ্যে তামাক কোম্পানিও রয়েছে—মতামত নিতে হবে। এটি WHO FCTC আর্টিকেল ৫.৩ এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এই সনদে স্বাক্ষরকারী দেশ, তাই আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়া থেকে তামাক শিল্পকে সম্পূর্ণভাবে দূরে রাখা সরকারের দায়িত্ব।

ঢাকা আহছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ বলেন, সংশোধনী খসড়ায় অন্তর্ভুক্ত প্রস্তাবগুলো যেমন—ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান (ডিএসএ) বাতিল, বিক্রয়স্থলে প্রদর্শন নিষিদ্ধ, ই-সিগারেটের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে শিশু-কিশোরদের সুরক্ষা, তামাক কোম্পানির করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (CSR) বন্ধ এবং খুচরা বিক্রয় নিষিদ্ধকরণ—এসব দ্রুত পাস করা জরুরি।

সভাপতির বক্তব্যে ডর্‌পের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী এএইচএম নোমান বলেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টার বক্তব্য অনুযায়ী সরকার এফসিটিসি’র আর্টিকেল ৫.৩ মেনে তামাক কোম্পানির সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারে না। তাই তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের জন্য গঠিত উপদেষ্টা কমিটির কাছে তামাক কোম্পানির সঙ্গে বৈঠকের সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানাই।

মতামত গ্রহণে আপত্তি,আইন সংশোধনে কোম্পানি,তামাক নিয়ন্ত্রণ
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত