অনলাইন সংস্করণ
২০:৩৭, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবার এবং দেশের প্রভাবশালী ১০ শিল্প গোষ্ঠীর বিপুল সম্পদ জব্দ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। ব্যাংক ঋণে অনিয়ম, কর ফাঁকি ও অর্থ পাচারের অভিযোগে সরকার গঠিত ১১টি তদন্ত দলের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে পাচারের অর্থে গড়ে তোলা দেশি-বিদেশি সম্পদের হদিস।
আদালতের নির্দেশনায় এখন পর্যন্ত মোট ৫৭ হাজার ২৬০ কোটি টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ও শেয়ার জব্দ করা হয়েছে।
তদন্তের কাজে অংশ নিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই তদন্তের সমন্বয় করছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশেষ নিরাপত্তাসম্পন্ন কক্ষে নথি সংরক্ষণের কাজ চলছে।
পাচার করা অর্থ উদ্ধারে সহায়তা দিচ্ছে আন্তর্জাতিক ৪ সংস্থা— দ্য স্টোলেন অ্যাসেট রিকভারি (এসটিএআর), ইন্টারন্যাশনাল এন্টি করাপশন কোঅর্ডিনেশন সেন্টার (আইএসিসিসি), যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস এবং ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর অ্যাসেট রিকভারি (আইসিএআর)।
শেখ পরিবারের পাশাপাশি যেসব শিল্পগোষ্ঠীর সম্পদ জব্দ হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছে আরামিট গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ, সিকদার গ্রুপ, নাসা গ্রুপ, বসুন্ধরা গ্রুপ, ওরিয়ন গ্রুপ, জেমকন গ্রুপ, নাবিল গ্রুপ এবং সামিট গ্রুপ। এসব গোষ্ঠীর শীর্ষ ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত আর্থিক বিষয়ও তদন্তের আওতায় এসেছে।
বিএফআইইউর তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৫৭৩টি ব্যাংক হিসাবে ১ হাজার ৬৮০ কোটি টাকা ও ৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার স্থগিত রয়েছে। এছাড়া ১৮৮টি বিও অ্যাকাউন্টে ১৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকার অর্থ ও শেয়ার আটকে রাখা হয়েছে।
আদালতের নির্দেশনায় দেশে জব্দ করা স্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৯ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকা এবং অস্থাবর সম্পদ ৩৬ হাজার ৮০৬ কোটি টাকা।
বিদেশে জব্দ হওয়া সম্পদের পরিমাণ ১০ হাজার ৪৫৫ কোটি ৫৪ লাখ টাকা, এর মধ্যে স্থাবর ৬ হাজার ৯৭ কোটি এবং অস্থাবর ৪ হাজার ৩৫৪ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে দেশে-বিদেশে জব্দ হওয়া সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৭ হাজার ২৬০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।
