অনলাইন সংস্করণ
২২:১৩, ১৩ নভেম্বর, ২০২৫
‘দেশে গণতন্ত্র ফেরাতে হলে নির্বাচনই একমাত্র বিকল্প’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) রাজধানীর হোটেল রেডিসন ব্লু ওয়ার্টার গার্ডেনে ফাউন্ডেশন ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (এফএসডিএস) উদ্যোগে আয়োজিত “জাতীয় সংসদ নির্বাচন–২০২৬: জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা” শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা জোর দিয়ে বলতে চাই, নির্বাচনই একমাত্র বিকল্প— গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরে যাওয়ার। যত দ্রুত নির্বাচন হবে, তত দেশের জন্য মঙ্গল। ইতোমধ্যে ঘোষণা হয়েছে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের একটি পার্লামেন্ট গঠন হবে। সেই পার্লামেন্ট জনগণের অমীমাংসিত যেসব ইস্যু রয়েছে, তা আলোচনা করে একটি সুনির্দিষ্ট পথ নির্দেশ করতে পারবে।
‘প্রধান উপদেষ্টা বক্তব্য প্রসঙ্গে’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে প্রধান উপদেষ্টা যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটা নিঃসন্দেহে অনেকেই গ্রহণযোগ্য মনে করতে পারেন। তবে এতে ভিন্নমত থাকতে পারে, দ্বিমতও থাকতে পারে। সবাই যে একমত হবে, তা নয়। রাষ্ট্রের মালিক জনগণ, তাদের প্রতিনিধিত্ব করবে কে— সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
তিনি আরও বলেন, এই যে বুদ্ধিজীবীরা আলোচনা সভায় অংশ নেন, তাদের জন্য পাঁচ মিনিট বেশি সময় বরাদ্দ থাকে, আর আমরা রাজনীতিকরা পাই তিন মিনিট— এটা জনগণের কাছে কতটুকু গ্রহণযোগ্য, তা নিয়েও ভাবতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্রের চর্চা আমাদের করতে হবে। আমরা দুর্ভাগা জাতি— গণতন্ত্রের জন্য বারবার মানুষ প্রাণ দিয়েছে, আমরা লড়েছি এবং সংগ্রাম করেছি, কিন্তু গণতন্ত্র চর্চা করার সুযোগ পাইনি। যারা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হয়েছেন, তাদের প্রতি আমি শ্রদ্ধা জানাই। তারা আমাদের গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন।
‘পিআর বুঝে না মানুষজন’
নিজের নির্বাচনী এলাকা থেকে ফিরে আসার অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি একটা কথা খুব পরিষ্কার করে বলতে চাই— আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) ব্যবস্থা আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ একদমই বুঝে না। আমরা এখানে রুমের ভেতরে বসে যতই এসব চাপিয়ে দিতে চাই না কেন, এতে কাজ হবে না। পিআর এখন পর্যন্ত জনগণের কাছে বোধগম্য নয়।
‘জাতীয় সরকার করব’
ফখরুল বলেন, আমরা নির্বাচনের পরে যে দলগুলো বা শক্তিগুলো ফ্যাসিস্টবিরোধী সংগ্রামে একসঙ্গে ছিল, তাদের নিয়ে একটি জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছি। এটা থেকেই প্রমাণিত হয় আমরা এই জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে সত্যিকারের গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে নিতে চাই।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল ফজলে এলাহী আকবর।
সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, অধ্যাপক আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী, আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানসহ বিভিন্ন পেশার বিশেষজ্ঞরা বক্তব্য রাখেন।