ঢাকা সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

সোশ্যাল মিডিয়ার ক্ষতি থেকে শিশুদের বাঁচাতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন

সোশ্যাল মিডিয়ার ক্ষতি থেকে শিশুদের বাঁচাতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন

শিশুদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বহুদিন ধরেই উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন। এটা ঠিক, নতুন প্রযুক্তি নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করে; তবে এর পাশাপাশি নতুন অনেক সমস্যারও জন্ম দেয়। প্রথমদিকে উন্নত দেশগুলোয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহার বৃদ্ধি পেলেও আমরা দেখতে পাচ্ছি, সেখানকার শিক্ষিত সম্প্রদায় ও রাষ্ট্র এর সমস্যাগুলো দ্রুত চিহ্নিত করে তা সমাধানে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। যেমন শিশুদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার বন্ধে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আশার কথা, এ উপমহাদেশেও শিশুদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে রাশ টানতে দেখা যাচ্ছে।

সম্প্রতি পাকিস্তান ১৬ বছরের কম বয়সি শিশুদের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছে। জানা গেছে, গত সোমবার পাকিস্তানের সিনেটে এ বিষয়ে একটি বিল উত্থাপন করা হয়েছে। বিল অনুযায়ী, যদি কোনো ব্যক্তি বা কোম্পানি ১৬ বছরের কম বয়সি ব্যবহারকারীদের সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রবেশের সুযোগ দেয়, তাহলে তাদের ৫০ হাজার থেকে ৫০ লাখ পাকিস্তানি রুপি পর্যন্ত জরিমানা করা হতে পারে। এছাড়া, অপ্রাপ্তবয়স্কদের অ্যাকাউন্ট তৈরিতে সহায়তা করলে তাদের ৬ মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। পাকিস্তান টেলিযোগাযোগ কর্তৃপক্ষ (পিটিএ) সামাজিকমাধ্যমে অপ্রাপ্তবয়স্কদের সব অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলার দায়িত্ব পালন করবে। এ বিষয়ে নীতিমালা তৈরি ও তা বাস্তবায়নের ক্ষমতাও থাকবে তাদের হাতে।

স্বীকার করতেই হবে, আসক্তি রোধের পাশাপাশি অনলাইনে শিশু নির্যাতন, সাইবার বুলিং ও ক্ষতিকর বিষয় থেকে সুরক্ষার জন্য এ পদক্ষেপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দেশেও এমন আইনের যে প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, তা বলাইবাহুল্য। উল্লেখ্য, শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য ও সুরক্ষার বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেরও কিছু দায় রয়েছে। যেমন- বয়স উপযুক্ত কনটেন্ট প্রদান, স্ক্রিন টাইম নিয়ন্ত্রণ, ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা, সাইবার বুলিংসহ যাবতীয় নেতিবাচক প্রভাব থেকে সুরক্ষা ইত্যাদি।

পরিতাপের বিষয়, বাণিজ্যিক স্বার্থে অনেক প্ল্যাটফর্মই তা অনুসরণে আগ্রহী নয়। কাজেই শিশুদের সুস্থ মানসিক বিকাশে অভিভাবকদের যেমন বাড়তি সচেতনতার প্রয়োজন রয়েছে, তেমনি রাষ্ট্রেরও দায়িত্ব রয়েছে কঠোর আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগের মাধ্যমে তা নিশ্চিত করা। ভুলে গেলে চলবে না, আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। আমাদের উদাসীনতা শিশুদের সেই সুন্দর ভবিষ্যৎকে যেন অন্ধকারে নিমজ্জিত করতে না পারে। সরকার অগ্রাধিকারভিত্তিতে শিশুদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে- এটাই প্রত্যাশা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত