ঢাকা শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিন

বন্ধ হয়ে যাচ্ছে কলকারখানা
প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিন

দেশের অর্থনীতির অবস্থা ভালো নয়। বিনিয়োগে গতি নেই। নতুন কর্মসংস্থান হচ্ছে না। বিদ্যমান কলকারখানাও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ফলে শ্রমিক-কর্মচারীরা কাজ হারাচ্ছেন। গত এক বছরে সাভার, গাজীপুর, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদীতে ৩৫৩টি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এতে বেকার হয়েছেন এক লাখ ১৯ হাজার ৮৪২ শ্রমিক। তাদের বেশিরভাগই অন্য কোনো কাজের সংস্থান করতে না পেরে গ্রামে চলে গেছে। অনেকে খেয়ে না খেয়ে শিল্পাঞ্চলেই পড়ে রয়েছেন, একটি কাজের সন্ধান করছেন।

কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তর, শিল্প পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বন্ধ কারখানার বেশিরভাগই তৈরি পোশাক, নিটওয়্যার ও টেক্সটাইল শিল্পের। শিল্প মালিকরা বলছেন, ব্যাংকঋণে উচ্চ সুদহার, গ্যাস-বিদ্যুতের সংকট, তদুপরি দফায় দফায় গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি, কাঁচামাল আমদানিতে এলসি সমস্যা, শ্রমিক অসন্তোষসহ বিভিন্ন কারণে দেশে শিল্প-কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, শিল্পাঞ্চল সাভার-আশুলিয়ায় এক বছরে ২১৪টি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে।

এর মধ্যে স্থায়ীভাবে ১২২টি ও অস্থায়ীভাবে বন্ধ করা হয়েছে ৯২টি কারখানা। এসব কারখানার প্রায় ৩১ হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন। এক বছরে গাজীপুরে ৭২টি কলকারখানা বন্ধ করা হয়েছে। বেকার হয়েছে এসব কারখানার প্রায় ৭৩ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী। চট্টগ্রামে এক বছরে বন্ধ হয়েছে ২১টি কারখানা। এখানে জাহাজ ভাঙা শিল্পই বেশি বিপদে আছে। এসব কারখানার কমপক্ষে ১০ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী বেকার হয়ে পড়েছেন। এছাড়া নারায়ণগঞ্জে ২৬টি এবং নরসিংদীতে ২০টি কারখানা বন্ধ হয়েছে গত এক বছরে। বন্ধ না হলেও অনেক কারখানা ধুঁকে ধুঁকে টিকে আছে। অনেক কারখানা লোকসানে আছে। সময়মতো বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে না পারায় শ্রমিকরা আন্দোলন করছেন, কাজ বন্ধ করে দিচ্ছেন। এতেও লোকসান বাড়ছে এবং বন্ধ হওয়ার পথে এগিয়ে চলেছে আরও অনেক কারখানা। অন্য এক খবরে দেখা যায়, গত মঙ্গলবারও আশুলিয়ার মাসকট গার্মেন্টসের শ্রমিকরা বকেয়া বেতনের দাবিতে বিশমাইল-জিরাবো আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। একই দিন গাজীপুর মহানগরের ভোগড়া বাইপাস এলাকার রোয়া ফ্যাশন লিমিটেডের শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে সড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। প্রতিনিয়ত চলছে এমন বিক্ষোভণ্ডপ্রতিবাদ। শিল্প-বাণিজ্যের এমন সংকটজনক অবস্থায় চরম উদ্বেগে দিন কাটাচ্ছেন শিল্পোদ্যোক্তারা। তারা প্রায় কোনো আশার আলোই দেখতে পাচ্ছেন না। ১৫-১৬ শতাংশ সুদে ঋণ নিয়ে কারখানা চলমান রাখার সাহসও পাচ্ছেন না উদ্যোক্তারা। এমন উচ্চসুদে ঋণ নিলে নতুন করে গলার কাঁটা হয়ে দেখা দিতে পারে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার এই দেশে শিল্প-কারখানার এমন দুরবস্থা কোনোভাবেই কাম্য নয়। সরকারকে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত