ঢাকা রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

সন্তানদের কখনও কারও সঙ্গে তুলনা করা উচিত নয়

মো. দিদারুল আলম
সন্তানদের কখনও কারও সঙ্গে তুলনা করা উচিত নয়

সন্তানদের অন্যদের সঙ্গে তুলনা করা মানে তাদের আত্মবিশ্বাস এবং আত্মসম্মান হ্রাস করে। উদ্বেগ ও হতাশা বাড়ায় এবং তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। প্রত্যেকের বিকাশের নিজস্ব গতি ও স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য থাকে। তাই তাদের তুলনা না করে নিজের সন্তানের অতীত পারফরম্যান্সের সঙ্গে বর্তমানের তুলনা করে তাকে নিজের উন্নতির দিকে উৎসাহিত করা উচিত। নিজের সন্তানকে নিয়ে কখনও অন্যের কাছে অভিযোগ বা সমালোচনা করবেন না। এমনকি আপনার আপন ভাই-বোন, বাবা-মা, বা ঘনিষ্ঠ কারও সঙ্গেও না। একজন সন্তানের জন্য পৃথিবীর সবচেয়ে কষ্টের মুহূর্ত তখনই আসে, যখন সে জানতে পারে- তার বাবা-মা অন্যের কাছে তার সমালোচনা করে, নেগেটিভ কথা বলে, তাকে নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে।

প্রায় মা-বাবারা বলে থাকেন, তোমার বন্ধু তো পারে, তুমি পার না কেন? ওর মতো হতে পার না?’ কিংবা পাশের বাসার ছেলেটা অঙ্কে ১০০ পেল। অথচ তোমার নম্বরের কথা কাউকে লজ্জায় বলাই যায় না। শিশুরা বাবা-মার কথার প্রতি আস্থা রাখে, তাদের কথা বিশ্বাস করে। বাবা-মা যখন বলেন, ওই শিশুটি তোমার চেয়ে ভালো কিংবা তুমি ওই শিশুর মতো ভালো কখনও হতে পারবে না, তখন সে সেটিকেই সত্যি বলে ধরে নেয়। মায়েরা নিজেদের ভবিষ্যৎ খুঁজে পান তাদের সন্তানের মধ্যে। অনেক সময় তারা নিজেদের জীবনের অপূর্ণ স্বপ্ন নিজেদের ছেলেমেয়েদের মধ্যে দিয়ে পূরণ করার চেষ্টা করেন। আর এরকম সময়ই সমস্যা দেখা দিতে পারে। বাবা-মা জীবনে যেটা করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু পারেননি, সেই না পাওয়া সাধ তারা সন্তানের মধ্যে দিয়ে পূরণ করার জন্য অনেক সময় উঠেপড়ে লাগেন। কিন্তু সন্তানের হয়তো সেই বিষয়ে মোটেও মন নেই, তার পছন্দ অন্য কিছু। এই পরিস্থিতি দেখা দিলে ছেলে-মেয়েদের ওপর বাবা-মায়েরা অনেক সময় মানসিক চাপ সৃষ্টি করেন, যা তাদের পক্ষে খুবই ক্ষতিকর। মনে রাখবেন, সন্তান আর বাবা-মায়ের সম্পর্কটা কখনও স্বার্থের নয়। প্রত্যেকটা সন্তানই আলাদা, ভিন্ন চিন্তা-ভাবনার, ভিন্ন স্বপ্নের মানুষ। আপনার চিন্তার সাথে মিল না হলেই কি তাকে খারাপ বলা যায়? একটা সুস্থ মন-মানসিকতার সন্তান কখনও চায় না তার বাবা-মা অন্যের সামনে ছোট হোক, তেমনি একজন সুস্থ মানসিকতার বাবা-মা কখনও তাদের সন্তানকে অন্যের সামনে হেয় করেন না। তাকে শুধরে দেওয়ার অনেক পথ আছে, তবে সেই পথ যেন ভালোবাসা আর সম্মানের হয়। আমাদের পুরো পৃথিবীজুড়ে থাকে আমাদের সন্তানেরা। প্রত্যেক মা-বাবাই চায় তাদের সন্তান ভালো করুক, সেরা হোক। বাচ্চার ভাল চাইতে গিয়ে ওদের ওপর রাগ করে এর ওর সঙ্গে বাচ্চাকে তুলনা করে বরং আমরা বাচ্চার মারাত্মক ক্ষতি করছি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত