আমার জন্ম স্থান মেলান্দহ একটি সিনেমা হল আছে নাম : ‘আশা’ হল টি র দায়িত্বে থাকা আব্দুল্লাহ একজন কিছুক্ষণ আলাপচারিতা হলো, শুধু ঈদের মৌসুমী তে হল টি চালু থাকে বাকি সময় বন্ধ থাকে, শাকিব খান ছাড়া অন্য কোনো নায়কের ছবি চলে না, প্রচন্ড গরমে অতিষ্ঠ এসি নেই কেন? এসি দিয়ে কি করব, তান্ডব প্রদর্শনীর পর হল টি বন্ধ থাকবে, হল টি প্রায় ৪০০ আসন, প্রতি শোতে ১০০/১৫০ লোক হয়, প্রচণ্ড গরম উপেক্ষা করে শুধু শাকিব খান ভক্ত রা ছবি দেখে। মূল আলোচনায় আসি; তাণ্ডব চলচ্চিত্র টি র পরিচালক রায়হান রাফী খুব কৌশল অবলম্বন করেছেন, চলচ্চিত্র টি কারো সঙ্গে মিলে গেলে দায়ী নয়, সম্পূর্ণ বিনোদনের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে।
তাণ্ডব চলচ্চিত্র টি শুটিং এর সময় স্ট্যানম্যান মনির এর অকাল মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে একটি বার্তা দিয়েছেন তার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি রাফী কে, যাহোক তাণ্ডব গল্পে আসি। শাকিব খান এর শুরুই করে কিলার রুপে বানরের মুখোশ পরে চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচার অনুষ্ঠান ওখানে ৪০/৫০ ছাত্র-ছাত্রী উপস্থিত ছিল, শাকিব খান ও তার বাহিনী হামলা করে, পুলিশের আইজিপি, মন্ত্রী প্রতি মন্ত্রী, চ্যানেল বাংলার মালিক ও সাংবাদিক জয়া আহসান চ্যানেলে প্রবেশ করে। সবাই তখন শাকিব খান এর জালে আটকে যায়। জয়া আহসান শাকিব খান প্রশ্ন করেন, এসব তাণ্ডব এর মানে কি, তখন গল্পের পিছনের গল্প দেখতে পাই। নায়িকা সাবিলা নূর কে ভালোবাসে শাকিব খান এর চাকরি খুঁজতে থাকে এবং ঢাকায় চলে আসে শাকিব এক বন্ধু র বাসায় ওঠে, চাকরি টা শত চেষ্টায় চাকরি টা পেয়ে সাবিলা নূর কে ফোন করে জানিয়ে খুব উচ্ছ্বাস আনন্দ প্রকাশ করে।
এটা পেলে মানুষ কি পরিমাণ উচ্ছ্বসিত হয় সেটা নিখুঁত ভাবে শাকিব সুন্দর ডেলিভারি দিয়েছে, কিন্তু নিয়তির পরিহাস চাকরি টা বাস্তবে হয়না অন্য আরেক জন পায়, বিভিন্ন জায়গায় নতুন করে চাকরি খুঁজতে থাকে শেষে বাইকে ডেলিভারিম্যান কাজ করে। ২২ বার চেষ্টা করেও চাকরি টা আর হয় না, একদিন হঠাৎ করে বাস থেকে শাকিব কে গ্রেপ্তার করে কালো মুখোশ পরিয়ে একটা ঘরে আটকে অমানুষিক নির্যাতন করে পুলিশ, কে যেন খুন হয়েছে। শাকিব কে জোর করে কথা আদায় করার চেষ্টা করে। শাকিব খান যে সেলে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয় শতশত বন্দি বাঁচার আকুতি আর্তচিৎকার শোনা যায়, বিগত সরকার ছায়া অবলম্বনে আঁচ করতে পেরেছি, আয়না ঘর, গুম, খুন একটা অন্যায়, চাকরি, সবকিছু যে এদেশের এমপি-মন্ত্রী আইজিপি পুলিশ প্রশাসন জানে। তাণ্ডব চলচ্চিত্র টি তে পরিচালক রায়হান রাফী আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে, কোন টা ভুল কোন টা শুদ্ধ। তাণ্ডব গল্প টা যা বলতে চেয়েছে সাধারণ দর্শক বুঝতে পারছে।
গল্প নতুনত্ব কিছু নেই, কারণ এধরনের চলচ্চিত্র আগেও নির্মাণ হয়েছে, রাজনীতির প্রেক্ষাপটে তাণ্ডবে সরাসরি সম্প্রচার অনুষ্ঠান ওখানে এদেশের মানুষদের কে রাগব-বোয়াল অপরাধী তা তুলে এনেছে। শীর্ষ নায়ক শাকিব খান তার এক্সপেন্সিভ, তার লুক, বাচন ভঙি, হাতের, চোখের খেলা, তার হাটা চলা ক্যামেরা সেটআপ লাইট সেট নির্মাণ আরও একটু যত্ন নেওয়ার দরকার ছিল।
নায়িকা সাবিলা নূর শাকিব খান এর সঙ্গে রসায়ন ভালোই ছিলো। রাফী খুব চালাক; শাকিব খান তাণ্ডব চালায় সিনেমার শুরুতেই এক লোক বানর খেলা দেখিয়ে দর্শকদের আনন্দ দিচ্ছেন, বিগত সরকার আমাদের খেলা দেখিয়েছেন সাধারণ মানুষ তালে তালে নাচছে এমন কিছু বুঝিয়েছে রাফী।
তাণ্ডব সিনেমায় একঝাঁক টিভি অভিনেতা অভিনয় করেছেন; শহিদুজ্জামান সেলিম, গাজী রাকায়েত, আফজাল হোসেন, ড. এজাজ, মুকিদ, ফজলুর রহমান বাবু, নাঈম, পরিচালক সালাউদ্দিন লাভলু, এবং একটি বিশেষ দৃশ্যে তারিক আনাম খান আরও অনেকে অভিনয় করেছেন সবাই ভালো কাজ করেছেন।
শাকিব খান এর ভয়েস গল্পের জন্য পরিবর্তন আনা হয়েছে, বিরতির পর দেখা যায়, মন্ত্রী, আইজিপি, চ্যানেল মালিক তারা দোষ স্বীকার করে নিলে তাদের গ্রেপ্তার করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী র বাহিনীর হাতে তুলে দেয়, শাকিব নিজেও দোষ করে একটা বক্তব্য দেন; তার আগে বলে নেই তার চরিত্রের নাম স্বাধীন, তিনি বলেন; আজ থেকে আমরা স্বাধীন এই দেশে অন্যায় দেখলে প্রতিবাদ করতে হবে। শাকিব খান পুলিশ বাহিনী তাকে গ্রেপ্তার করলো। গল্প টা এখানেই শেষ হতে পারতো। ক্যামিও শটে নায়ক সিমাম, এবং নায়ক আফরান নিশো তাদের চরিত্রের সঙ্গে তান্ডব গল্প এর কোন মিল নেই। যাহোক বেশির ভাগ দৃশ্য ধারণ হয়েছে ইনডোরে হয়তো এ কারণে কালার ভালো হয়নি। সাউন্ড সিস্টেম ঠিক আছে। যেহেতু তান্ডব চলচ্চিত্র টি একশনধর্মী। কে দিল পিরিতের বেড়া লিচুর বাগানে, দারুণ উপস্থাপন হয়েছে গান টি। পরিচালক রায়হান রাফী খুব মেধাবী এবং পরিশ্রমী পরিকল্পনা করে শুটিং করা হয়েছে সত্যি প্রসংশা তারিফ করতে হয়। শীর্ষ নায়ক শাকিব খান অতিরিক্ত শট নেই। প্রযোজক শাহরিয়ার শাকিল কে ও ধন্যবাদ তাণ্ডব চলচ্চিত্র টি র শুভ কামনা।
লেখক: কবি, গীতিকার, প্রাবন্ধিক ও কলাম লেখক