
সরকারের অর্ন্তবর্তীকালীন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের আগমনকে ঘিরে কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় এক অভিনব দৃশ্যের জন্ম দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। উপদেষ্টার সফরের আগ মুহূর্তে দুর্গন্ধযুক্ত আবর্জনার স্তূপে ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে ডেকোরেটরের কাপড়ের পর্দা টানিয়ে তা আড়াল করে ফেলে ভৈরব পৌর কর্তৃপক্ষ।
বুধবার সকাল ১০টার দিকে উপদেষ্টা ঢাকা থেকে ট্রেনযোগে ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছান।
পরে সেখান থেকে তিনি সড়কপথে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের উদ্দেশে রওনা দেন। তার আগমন সংবাদে তড়িঘড়ি করে স্টেশন রোডের পাশের দীর্ঘদিনের ময়লার স্তূপ আড়াল করার উদ্যোগ নেয় পৌরসভা। উদ্দেশ্য একটাই—অতিথির চোখে যেন ময়লা না পড়ে এবং দুর্গন্ধে বিরক্ত না হন।
তবে উপদেষ্টা চলে যাওয়ার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে চলছে তীব্র সমালোচনা। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বছরের পর বছর ধরে পৌর শহরের এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কের পাশে ময়লার স্তূপ থাকায় পথচারীদের নাক চেপে চলতে হয়। অথচ আজ একজন উপদেষ্টা আসবেন বলেই কাপড়ের পর্দা টানিয়ে ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে সাময়িকভাবে সাজানো হয়েছে জায়গাটি।
স্থানীয়রা বলেন, ভৈরব একটি ব্যস্ত বন্দরনগরী ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র। প্রতিদিন আশেপাশের কয়েক জেলা থেকে হাজারো মানুষ রেলস্টেশন সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে। এই সড়কের অদূরেই রয়েছে তিনটি বিদ্যালয়, যেখানে প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী প্রতিদিন যাতায়াত করে। তবু এই সড়কের পাশে পৌরসভার সব ওয়ার্ডের ময়লা ফেলা হয়। বহুবার অভিযোগ করেও কোনো ফল মেলেনি।
তাদের দাবি, পৌর প্রশাসক যেন দ্রুত জনবহুল এলাকা থেকে ময়লার স্তূপ সরিয়ে নির্ধারিত স্থানে ফেলেন, যাতে এলাকাবাসী দুর্গন্ধ ও দূষণ থেকে মুক্তি পায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভৈরব পৌরসভার কনজারভেন্সি ইন্সপেক্টর মো. রফিকুল ইসলাম রোকন বলেন, “পৌরসভার নির্দিষ্ট ডাম্পিং জায়গা না থাকায় বাধ্য হয়ে রেলের জায়গায় ময়লা ফেলতে হয়। তবে প্রতিদিনই তা পরিষ্কার করা হয়। আজ উপদেষ্টা আসবেন বলে জায়গাটি পর্দা দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে, যাতে অতিথিদের চোখে এসব না পড়ে।”
উল্লেখ্য, উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বুধবার দুপুরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল-আশুগঞ্জ অংশের চলমান নির্মাণকাজ পরিদর্শন করেন এবং বিকেলে ভৈরব হয়ে ঢাকায় ফেরেন।