গণঅভ্যুত্থানের মুখে পালিয়ে ভারতে অবস্থান নেয়া শেখ হাসিনার ভাষণ দেয়াকে কেন্দ্র করে ‘২৪-এর বিপ্লবী ছাত্রজনতা’ শীর্ষক একটি ব্যানার থেকে গতকাল সারা দেশে ‘বুলডোজার মিছিলের’ কর্মসূচির মাধ্যমে দেশজুড়ে বিভিন্ন স্থানে শেখ মুজিবের ভাস্কর্য, আওয়ামী লীগ অফিস ও নেতাদের বাড়ি ভাঙচুর-আগুন দেয়া হয় । আলোকিত বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
নোয়াখালী : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের গ্রামের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষুদ্ধ ছাত্র-জনতা। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ১টার দিকে উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার ১নম্বর ওয়ার্ডের রাজাপুর গ্রামের বাড়িটির দ্বিতল ভবন ভাঙা শুরু হয়। স্থানীয়রা জানায়, দুপুর পৌনে ১টার দিকে উপজেলার বসুরহাট বাজার থেকে মিছিল বের করেন ছাত্রজনতা। মিছিলটি বসুরহাট বাসস্ট্যান্ড হয়ে কাদেরের বাড়িতে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে থাকা ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র আব্দুল কাদের মির্জার দোতালা ভবন হাতুড়ি, শাবল দিয়ে ভাঙা হয়। পরে তার ছোট ভাই শাহাদাত মির্জার ভবনও ভাঙচুর করা হয়। এর আগে, গত ৫ আগস্ট বিকালে ওই বাড়ির পাঁচটি বসতঘর ও দুটি গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ বিক্ষুদ্ধ জনতাকে বিভিন্ন আসবাবপত্র নিয়ে যেতে দেখা যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা এমরান হোসেন জানান, ৫ আগস্টের পর কিছু দিন কাদের মির্জা ভবনটি পুনরায় সংস্কার করেন। দ্বিতীয় দফায় কাদেরের বাড়িতে এ অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করা হয়। তবে হামলা ভাঙচুরের সময় তাদের পরিবারের কেউ ছিল না। ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর কাদেরের পরিবারের সদস্যরা আত্মগোপনে রয়েছে।
ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নোয়াখালী জেলা শাখার সমন্বয়ক মো. আরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ছাত্র-জনতা কোম্পানীগঞ্জের অসংখ্য মানুষ ওবায়দুল কাদের ও তার ভাই আব্দুল কাদের মির্জার ও তার বাহিনীর লোকদের দ্বারা অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এসব কারণে তাদের প্রতি যে ক্ষোভ জমেছিল, আজকের হামলা ভাঙচুর ওই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। এই হামলা ভাঙচুরে সর্বস্তরের ছাত্র-জনতা অংশগ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ভবিষ্যতেও যদি কোনো সরকার রাষ্ট্র পরিচালনা করতে গিয়ে ফ্যাসিস্টের আচারণ করেন, তাদের পরিণতিও একই রকম হবে।
রাজশাহী : সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের বাসভবনে আগুন দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রথমে ভাঙচুর, পরে আগুন দেয়া হয়। আগুনে চারতলা ভবনের অধিকাংশ পুড়ে গেছে। বাঘা উপজেলার আড়ানীতে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ৪০০-৪৫০ জনের একটি মিছিল বিভিন্ন স্লোগান দিতে দিতে শাহরিয়ার আলমের বাসভবনের সামনে জড়ো হয়। এরপর বাড়ির প্রধান ফটকের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে সবগুলো রুমে ভাঙচুর চালানো হয়। লাগানো হয় আগুন। এসময় পুরো চারতলা ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়লে গ্যাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণের শব্দে চারিদিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আগুন লাগার প্রায় ঘণ্টাখানেক পর ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কাজ শুরু করে। তবে পুরো বাসভবনের অধিকাংশ রুম পুড়ে যায়। বাঘা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে জনতার সঙ্গে সমন্বয় করে দুপুর দেড়টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। পরিস্থিতি এখন শান্ত।
চুয়াডাঙ্গা : গণঅভ্যুত্থানের মুখে পালিয়ে ভারতে অবস্থান নেয়া শেখ হাসিনার ভাষণ দেয়াকে কেন্দ্র করে ‘২৪-এর বিপ্লবী ছাত্রজনতা’ শীর্ষক একটি ব্যানার থেকে ‘বুলডোজার মিছিলের’ কর্মসূচির ডাক দেয়া হয় চুয়াডাঙ্গায়। প্রতিবাদকারীরা ‘জ্বালো জ্বালো, আগুন জ্বালো’, ‘ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও, ফ্যাসিবাদের আস্তানা’ দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা এমন নানা স্লোগানে চুয়াডাঙ্গা শহর প্রকম্পিত করে তোলে।
গত বুধবার রাত সাড়ে ১১টায় চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ থেকে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগবিরোধী স্লোগান দিয়ে প্রথমে জেলা কালেক্টরেট ভবনের সামনে শেখ মুজিব ও ফজিলাতুন্নেছার ম্যুরালটি গুঁড়িয়ে দেয়া হয়। এরপর চুয়াডাঙ্গা আওয়ামী লীগের জেলা কার্যালয় ভাঙচুর করে বিক্ষুদ্ধ ছাত্রজনতা। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে । গণঅভ্যুত্থানের ৬ মাস ছিল গতকাল বুধবার।
রংপুর : গত বুধবার রাত ১০টার দিকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, কারমাইকেল কলেজ ও ডিসির মোড়ে থাকা ম্যুরাল ভেঙে ফেলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। এছাড়া ভেঙে ফেলা ম্যুরালের সামনে শেখ হাসিনার ব্যঙ্গচিত্র দাহ করেছে ছাত্র-জনতা। এসময় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের নামফলকও ভেঙে ফেলেন শিক্ষার্থীরা। প্রথমে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙচুর করা হয়। পরে সেটি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়। চত্বরটিকে মুক্তমঞ্চ নামে ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীসহ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতারা।
কুমিল্লা : কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাজী আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহারের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে ছাত্র-জনতা। গত বুধবার রাত ১টার দিকে নগরীর মুন্সেফবাড়িতে এ ভাঙচুর করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ১টার দিকে ছাত্র-জনতা নগরীর মুন্সেফবাড়ি এলাকায় মিছিল নিয়ে জড়ো হন। এসময় বিক্ষুব্ধ জনতা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। তখন বাহারের বাড়ির জানালার গ্রিল ভাঙার চেষ্টা করেন তারা। অনেকে বাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। একপর্যায়ে বাড়িটিতে ভাঙচুর চালানো হয়। পরে পেট্রোল ঢেলে বাড়ির কয়েকটি কক্ষে এবং ভবনের সামনে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও বাহারের ওই বাড়িতে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালায় বিক্ষুব্ধরা। এরপর থেকে বাড়িটিতে আর কেউ থাকেন না। একই রাতে নগরীর রামঘাট এলাকায় কুমিল্লা মহানগর ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ভাঙচুর চালানো হয়। বিক্ষুব্ধরা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে থাকা ইটের গাঁথুনি ভেঙে ফেলেন। এরপর নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা।
সিলেট : জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে স্থাপিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। গত বুধবার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিল এসে বুলডোজার দিয়ে ম্যুরালটি ভেঙে ফেলা হয়। শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থাকা শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালটি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়। এসময় শিক্ষার্থীদের ‘মুজিববাদের আস্তানা, গুঁড়িয়ে দাও-গুঁড়িয়ে দাও’, আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’ স্লোগান দেন।
ময়মনসিংহ : শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙচুর করেছে ছাত্র-জনতা। গত বুধবার রাতে সার্কিট হাউজ মাঠ সংলগ্ন ম্যুরালটি হাতুড়ি-শাবল নিয়ে ভাঙচুর করা হয়। এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ময়মনসিংহ জেলা কমিটির সদস্য সচিব আলী হোসেন, কমিটির মুখপাত্র ফয়সাল ফারনিম, মহানগর কমিটির সদস্য সচিব আল নুর মো. আয়াস ও যুগ্ম আহ্বায়ক নাফিউস রোহানসহ ১৫-২০ জন উপস্থিত ছিলেন। আলী হোসেন বলেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে থেকে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে উসকানি দিচ্ছেন। এতে আরো ক্ষিপ্ত হয়েছে দেশের ছাত্র-জনতা। তাই ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের মতো ময়মনসিংহেও শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ছাত্র-জনতা ভেঙে ফেলেছে। সাদিক আব্দুল্লাহ-আমুর বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিলো ছাত্র-জনতা
বরিশাল : শেখ হাসিনার ভাগ্নে ও বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ ও সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমুর বাসভবনে ভাঙচুরের পর বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। গত বুধবার রাত সোয়া ১২টার দিকে প্রথমে নগরীর কালী বাড়ি রোডে সেরনিয়াবাত ভবন ছাত্র-জনতা বুলডেজার দিয়ে ভেঙে দেয়। পরে তারা ভেতরে প্রবেশ করে বাড়িটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। সেরনিয়াবাত ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়ার পর রাত ২টার দিকে শত শত বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমুর নগরীর বগুড়া রোডে বাসভবনে হামলা চালিয়ে বাড়ির আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। পরে বাড়িটি বুলডোজার দিয়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়। আমির হোসেন আমুর এ বাড়িটি বরিশাল নগরীর হোয়াইট হাউজ নামে সবার কাছে পরিচিত ছিলো।
পিরোজপুর : জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক এমপি একেএমএ আউয়াল এবং তার ভাই পিরোজপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমান মালেকের বাড়িতে ভাঙচুর করে আগুন দেয়া হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে ঢাকার বুলডোজার মিছিলের ধারাবাহিকতায় পিরোজপুরে জেলা আওয়ামী লীগের দুই নেতার বাড়িতে আগুন দিয়েছে জনতা। গত বুধবার রাত ১২টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক এমপি একেএমএ আউয়াল এবং তার ভাই পিরোজপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমান মালেকের বাড়িতে ভাঙচুর করে আগুন দেয়া হয়।
পাবনা : ঈশ্বরদীতে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়া পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ মুজিবুর রহমান এবং শেখ হাসিনা আবাসিক হলের নামফলক ভেঙে দেয়া হয়। গত বুধবার রাতব্যাপী এসব ঘটনা ঘটে। পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের শেখ রাসেল আবাসিক হলের নামফলকও মুছে ফেলা হয়েছে। এছাড়া ঈশ্বরদী আলহাজ মোড়ে স্মৃতিস্তম্ভের পাশে নির্মিত বিদ্বেষ ছড়ানো ‘ঘৃণাস্তম্ভ’ ভেঙে গুঁড়িয়ে ফেলেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। এর আগে রাত ৯টার দিকে পাবনা এডওয়ার্ড কলেজের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহরের শহীদ চত্বরে শেষ হয়। পরে সেখানে বড় পর্দায় জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।
নরসিংদী : নরসিংদীতে গ্রেপ্তার হওয়া ছাত্রলীগ নেতাদের রিমান্ড শুনানিকে কেন্দ্র করে আদালত প্রাঙ্গণে উত্তেজনা ও শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙার ঘটনা ঘটেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও জজ কোর্ট প্রাঙ্গণে গিয়ে ম্যুরাল ভাঙার সূচনা করেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নরসিংদী জজ কোর্ট প্রাঙ্গনে জড়ো হতে থাকে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা। এসময় কোর্ট প্রাঙ্গনে থাকা শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙচুর করা হয়। এসময় শিক্ষার্থীদের মুজিববাদের আস্তানা, গুঁড়িয়ে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’, আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’ এরকম স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
মৌলভীবাজার : মৌলভীবাজার শহরের বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের সামনে তৈরি করা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল দুপুরে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভেঙ্গে দিয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণের প্রতিবাদে এই কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘গণহত্যার সঙ্গে জড়িত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের কোনো স্মৃতিচিহ্ন বাংলার মাটিতে থাকতে পারে না। এদেশে স্বৈরাচার হাসিনা পরিবারতন্ত্র কায়েম করতে চেয়েছিল। তাই দেশের বড় বড় স্থাপনায় নিজের পরিবারের নাম যারা দিয়েছিলেন, আজ বাংলাদেশের প্রথম ফ্যাসিস্ট শেখ মুজিবের ম্যুরাল ভাঙার মাধ্যমে মুজিববাদের কবর রচিত হলো।
ঝালকাঠি : সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমুর ঝালকাঠি শহরের বাসভবন ভাঙচুর করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী ও বিক্ষুব্ধ জনতা। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের রোনালসে সড়কের বাসভবন ভাঙচুর শুরু করে ছাত্র-জনতা। এর আগে সুগন্ধা নদীর তীরে ডিসি পার্কে অবস্থিত ফিরোজা আমু টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাইনবোর্ড ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। এসময় পাশে থাকা ফিরোজা আমু হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজের নামফলকও তারা ভাঙচুর করে। বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা জানান, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার জোর করে ক্ষমতা দখল করেছিল। তাদের আমলে অবৈধভাবে এমপি মন্ত্রীরা সম্পদের পাহার গড়ে তোলেন। এই অবৈধ সম্পদের পাহার গড়ে তোলার মধ্যে ঝালকাঠির সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুও রয়েছেন। তিনি জোরপূবর্ক কালেক্টরেট স্কুলের জমি দখল করে নিজের ও তার স্ত্রীর নামে দুটি প্রতিষ্ঠান করেছিলেন। ফ্যাসিবাদের দোসরদের সব আন্তানা ভেঙে দেয়া হবে বলেও জানান তারা।