ঢাকা শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

রুদ্ধশ্বাস ফাইনাল জিতে শিরোপা বরিশালেরই

রুদ্ধশ্বাস ফাইনাল জিতে শিরোপা বরিশালেরই

ফাইনাল হলো ফাইনালের মতই। ব্যাটে-বলের দুর্দান্ত এক লড়াই সরাসরি উপভোগ করলেন হাজার পঁচিশেক দর্শক। আর এমন রোমাঞ্চকর এক শিরোপা লড়াই উপহার দিলেন ফরচুন বরিশাল আর চিটাগং কিংসের দর্শকরা। তবে শেষ হাসি হেসেছে বরিশালই। শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনালে ৩ উইকেটের জয়ে শিরোপা অক্ষুণ্ণ রাখল তামিম ইকবালের দল।

১৯৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা পেয়েছিল বরিশাল। তারা বিনা উইকেটে পাওয়ার প্লেতে তোলে ৫৭ রান। পরের ওভারেই আরাফাত সানীকে চার-ছয় মেরে মাত্র ২৪ বলে ৯টি চার ও ১ ছক্কায় ফিফটি পূর্ণ করেন বরিশালের অধিনায়ক। অবশ্য এর পর ২৯ বলে ৫৪ রান করে শরীফুলের বলে আউট হন তামিম। নতুন ব্যাটসম্যান ও ধারাবাহিক পারফরমার ডেভিড মালানকেও ফেরান শরীফুল। মালান এদিন ২ বলে ১ রানের বেশি করতে পারেননি। এর পর দেখেশুনে খেলছিলেন হুদয়। দলীয় ৯৬ রানে নাঈম ইসলামের শিকার হয়ে ফেরন তিনি। তার আগে ২৮ বলে ৩২ রান করেন হৃদয়।

তিন উইকেট পতনের পর ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন কাইল মায়ার্স। বলিশালকে জয়ের কাছে নিয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। শরীফুলের শিকার বনে বিদায় নেন মায়ার্স। তার আগে মাত্র ২৮ বলে ৪৬ রান করেন তিনি। শেষদিকে রিশাদ হোসেনের বীরত্বে ৩ বল হাতে রেখেই ৩ উইকেটের জয়ের দেখা পায় তামিমের দল। টানা দ্বিতীয় বিপিএল শিরোপা জয়ের আনন্দে মেতে উঠে ফরচুন বরিশাল।

এর আগে শুক্রবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে বিপিএলের ফাইনাল ম্যাচে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা অবিশ্বাস্য ছিল চিটাগং কিংসের জন্য। দুই ওপেনারের ব্যাটে চড়ে বিশাল স্কোরের ইঙ্গিত দেয় তারা। দুইশর ল্যান্ড মার্ক স্পর্শ করতে না পারলেও চ্যালেঞ্জিং পুঁজি পায় বন্দর নগরীর দলটি। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ১৯৪ রান সংগ্রহ করে তারা। এদিন অবশ্য শুরু থেকে বিপরীত স্রোতে সাঁতরে গেল চিটাগং। দুই ওপেনার পুরো স্টেডিয়ামকে স্তব্ধ করে একের পর এক বাউন্ডারী হাঁকিয়ে গেলেন। খাজা নাফে ও পারভেজ হোসেন ইমনকে এই রূপে দেখার প্রত্যাশা করেনি কেউ। নাফে শেষ পর্যন্ত থেমেছেন ৬৬ রানে। আর ইমন অপরাজিত ছিলেন ৭৮ রানে। অনেকেই ভেবেছিলেন বরিশালের আগে বোলিং নেয়া মানে চট্টগ্রামের দ্রুত গুটিয়ে যাওয়া। স্টেডিয়ামের আবহও তেমনই ছিল। লাল জার্সির আধিক্যে আকাশীদের খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছিল না। গ্যালারী ভর্তি লাল জার্সিধারীদের উল্লাস থামিয়ে অন্য লড়াই উপহার দেন চিটাগংয়ের দুই ওপেনার। দুজনের ব্যাটে চড়ে ১০ ওভারে বিনা উইকেটে ৯৩ রান করে তারা। শুরুর ৫ ওভারেই এসেছিল ৫১ রান। দশম ওভারের পর খাজা নাফে আরো বিধ্বংসী হয়ে ওঠেন। তার নো লুক শটের ছক্কাগুলো দারুণ উপভোগ করছিলেন দর্শকরা। ক্যামেরাম্যানদের জন্যও অসাধারণ ছবির মুহূর্ত এনে দেন পাকিস্তানী নাফে। ১৩তম ওভারে প্রথম উইকেট হারায় চিটাগং। এবাদতের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৪৪ বলে ৬৬ রান করা নাফে। ৭ চার ও ৩ ছক্কার ইনিংসটি ছিল দারুণ। তবে অপরপ্রান্তে এগিয়ে যাচ্ছিলেন ইমন। তানভীর ইসলামের এক ওভারে মেরেছেন তিন ছক্কা। এক ওভারেই চলে আসে ২২ রান, ইনিংসের সর্বোচ্চ। ১৬তম ওভার পর্যন্ত ওভারপ্রতি ১০ রান করে নেয়ার গতিটা পরের ওভারে ধরে রাখতে পারেনি চিটাগং। ১৭তম ওভারে মোহাম্মদ আলি মাত্র ৪ রান দেন। এতে চিটাগংয়ের দুইশো ছোঁয়ার গতিটা ছন্দ হারায়। ওদিকে ৪১ বলে ৭২ রান করা ইমন পরের ৮ বলে তুলেছেন মাত্র ৬ রান। ব্যাট থেকে বড় শট না আসায় চিটাগংয়ের রানও বড় হতে পারেনি। ইমনের সঙ্গে দারুণ জুটি গড়ে ৭ ওভারে ৭০ রান তুলেছেন গ্রাহাম ক্লার্ক। পায়ে চোট পেয়ে ঠিকঠাক দৌড়াতে পারছিলেন না এই ব্যাটার। ব্যাটিং করতেও সমস্যা হচ্ছিল তার। শেষ পর্যন্ত রান আউট হয়ে থামেন মাত্র ২৩ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় ৪৪ রান করা ক্লার্ক। ইমন ৪৯ বলে ৭৮ রানে অপরাজিত ছিলেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত