ঢাকা শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

প্রধান বিচারপতি বললেন

হাইকোর্টের রায়ে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল ইতিহাসে এটাই প্রথম

* নিবন্ধন ও প্রতীক ফিরে পেতে জামায়াতের আপিল শুনানি আজ * সুপ্রিমকোর্টের রায়ের অপেক্ষায় ইসি
হাইকোর্টের রায়ে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল ইতিহাসে এটাই প্রথম

হাইকোর্টের রায়ে রাজনৈতিক দলের (বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী) রেজিস্ট্রেশন বাতিল ইতিহাসে এটাই প্রথম, এমন মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। গতকাল জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ফিরে পেতে করা আবেদনের শুনানি নিয়ে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ৭ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আপিল বিভাগ এ মন্তব্য করেন। জামায়াতের নিবন্ধন ও দলের প্রতীক ফিরে পেতে আপিল শুনানি আজ বুধবার দিন ধার্য করেছে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ।

আদালতে জামায়াতের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিক। তাকে সহযোগিতা করেন ব্যারিস্টার ইমরান আবদুল্লাহ সিদ্দিক, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির, ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন প্রমুখ। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পক্ষে শুনানিতে আছেন আইনজীবী তৌহিদুল ইসলাম। আদালতে জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাছুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল উপস্থিত ছিলেন।

শুনানিকালে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) আইনজীবী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, যখন থেকে হাইকোর্ট জামায়াতের নিবন্ধন ইস্যুতে হাত দিয়েছে, তখন থেকে হাত গুটিয়ে নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। জামায়াতের নিবন্ধন নিয়ে আপিল বিভাগের রায়ের অপেক্ষায় ইসি। জামায়াতের প্রতীক নিয়ে ইসি আইনজীবী আদালতকে বলেন, সুপ্রিমকোর্টের ফুল কোর্টের প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের পর জামায়াতের প্রতীক দাড়িপাল্লা বাদ দেয় ইসি। নতুন করে কোনো প্রতীকের জন্য চাইলে আবেদন করতে পারবে জামায়াত। পরে আদালত মামলার শুনানি বুধবার পর্যন্ত মুলতবির আদেশ দেন।

এর আগে এক রিট আবেদন নিষ্পত্তি করে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল ও অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। এরপর ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পরবর্তী সময়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে জামায়াতে ইসলামী। তবে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল শুনানিতে জামায়াতের মূল আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় ২০২৩ সালের নভেম্বরে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বিভাগ ‘ডিসমিস ফর ডিফল্ট’ বলে আপিল আবেদনটি খারিজের আদেশ দেন। যার ফলে রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল থাকে। তবে, গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার পতনের পর রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বাতিল হওয়া নিবন্ধন ফিরে পেতে দায়েরকৃত আপিল আবেদন পুনরুজ্জীবিত করতে চাওয়া বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আবেদন গ্রহণ করেন আপিল বিভাগ। আদালতে আবেদনের শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।

জামায়াতের নিবন্ধন নিয়ে ইসি: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধনের ব্যাপারে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ যে রায় দেবেন তা বাস্তবায়ন করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসির আইনজীবী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা হাইকোর্টে যা বলেছি আপিল বিভাগেও আমাদের পজিশন একই। আমরা এ বিষয়ে (জামায়াতের নিবন্ধন) আবেদন যাচাই-বাছাই করছিলাম। সেই অবস্থায় হাইকোর্ট হস্তক্ষেপ করায় পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে পারিনি। এখন আমরা আপিল বিভাগের রায়ের জন্য অপেক্ষা করছি। আপিল বিভাগে যা রায় হবে সেটাই বাস্তবায়ন করব।

জামায়াতের প্রতীকের বিষয়ে তিনি বলেন, ২০১৬ সালে সুপ্রিমকোর্টের ফুলকোর্ট সভাতে একটা সিদ্ধান্ত হয়েছিল। দাড়িপাল্লা প্রতীক, সেটা সুপ্রিমকোর্টের প্রতীক। সেটা অন্য কাউকে বরাদ্দ দেওয়া যাবে না। সিদ্ধান্তটা নির্বাচন কমিশনকে পাঠানো হয়। তখন দাড়িপাল্লা প্রতীকটা প্রতীকের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। এখন জামায়াতে ইসলামী বিষয়টা সামনে এনেছে। এটা যেহেতু ফুলকোর্টের সিদ্ধান্ত ছিল। আপিল বিভাগ বলছে- এই মামলায় ফুলকোর্টের সিদ্ধান্তে হাত দিতে পারব না।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত