ঢাকা শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

এক চাকায় বিমান অবতরণ রক্ষা পেলেন ৭১ যাত্রী

এক চাকায় বিমান অবতরণ রক্ষা পেলেন ৭১ যাত্রী

কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের পর চাকা খুলে পড়া বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের উড়োজাহাজটি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপদে অবতরণ করেছে। গতকাল শুক্রবার এ ঘটনা ঘটে। বিমানের ‘বিজি-৪৩৬’ ফ্লাইটটিতে ৭১ জন যাত্রী ছিলেন। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক রাগিব সামাদ জানান, গতকাল দুপুর ১টা ৩৫ মিনিটে কক্সবাজার থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসে বিমানের ফ্লাইটটি। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসার পথে বাম পাশের ল্যান্ডিং গিয়ার চাকায় সমস্যার দেখা দেয়। বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে কন্ট্রোল টাওয়ারকে জানানো হলে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। পরে ফ্লাইটটি ২টা ২২ মিনিটে ঢাকায় নিরাপদে অবতরণ করে।

বিমানের যাত্রী ও ক্রুরা সবাই সুস্থ ও নিরাপদে বিমান থেকে নামতে পেরেছেন উল্লেখ রাগিব সামাদ আরও বলেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অন্যান্য বিমান চলাচল স্বাভাবিক ছিল।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ফ্লাইটটি পরিচালনা করছিলেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পাইলট ক্যাপ্টেন বিল্লাহ। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) এবিএম রওশন কবীর জানান, পাইলট প্রথম চেষ্টাতেই দুপুর ২টা ২২ মিনিটে ফ্লাইটটি নিরাপদে অবতরণে সক্ষম হয়েছেন। যাত্রীরা সবাই নিরাপদ ও অক্ষত ছিলেন। সবাইকে প্লেন থেকে নামানো হয়।

ফ্লাইট পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন ক্যাপ্টেন জামিল বিল্লাহ, যার প্রায় আট হাজার ঘণ্টা ওড়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে। তার সঙ্গে ছিলেন ফার্স্ট অফিসার জায়েদ। পাইলট ঘটনার গুরুত্ব বুঝে তাৎক্ষণিক বিষয়টি জানান শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল সেন্টারে। শাহজালাল বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম বলেন, এরপর আমরা ফ্লাইটটি ইমার্জেন্সি ঘোষণা করি। তারপর ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি, ইমার্জেন্সি প্রটোকলসহ সব ব্যবস্থা নেওয়া হয় রানওয়েতে। এর মধ্যে দুপুর ২টা ২০ মিনিটের দিকে ফ্লাইটটি নিরাপদে অবতরণ করে।

কক্সবাজার বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক গোলাম মোর্তজা বলেন, রানওয়ে ছাড়ার পরেই বিমানের পেছনের একটি চাকা খুলে নিচে পড়ে যায়। পরে চাকাটি পাওয়া যায় কক্সবাজার শহরের সমিতি পাড়ায়। উড়োজাহাজটি ছিল কানাডার তৈরি ড্যাশ-৮ ৪০০ মডেলের। ওই ফ্লাইটে ৭১ জন যাত্রী এবং দুইজন ক্রু ছিলেন। চাকা খুলে কী ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়, সেই প্রশ্নে এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ এ টি এম নজরুল ইসলাম বলেন, এসব উড়োজাহাজের ল্যান্ডিং গিয়ারের একেক দিকে দুইটা করে চাকা থাকে। দুইটার মধ্যে এক্সটারনাল সাইডের একটা চাকা পড়ে গিয়েছিল। এই চাকা পড়ে যাওয়ার পরও ল্যান্ড করা যায়। তবে সতর্কতা ও দক্ষতার সঙ্গে করতে হয়। এটা প্রশিক্ষণেরই একটা অংশ। এখানে পাইলট সতর্কতার সঙ্গেই অবতরণ করেছেন।

তিনি আরও বলেন, যাত্রা শুরুর আগে ‘প্রি-ফ্লাইট ইন্সপেকশন’ হয়। হয়ত চাকাটা সম্প্রতি বদলানো হয়েছে। সেসময় সব কিছু ঠিকঠাক লাগানো হয়েছে কিনা, সেটা দেখতে হবে। অনেক কিছুই হতে পারে। ম্যাটেরিয়াল ফেইলিওর হতে পারে। তারপরও আমি মনে করি, এটাতে হিউম্যান গাফিলতি কিছুটা হলেও ছিল। আমি মনে করি, এ ঘটনার তদন্ত হওয়া উচিত।

বিমানের জনসংযোগ শাখার মহাব্যবস্থাপক এ বি এম রওশন কবীর বলেন, এ ঘটনায় বিমানের চিফ অব সেইফটি ক্যাপ্টেন এনাম তালুকদারকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত