জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রবিবার ঢাকায় সংসদ ভবনের এলডি হলে এ বৈঠক হয়। গত ২০ মার্চ সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবগুলোর ওপর জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে মতামত জমা দেয় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। সে পরিপ্রেক্ষিতে ২৬ এপ্রিল দলটির সঙ্গে আলোচনায় বসে কমিশন। সেদিনের অসমাপ্ত বিষয়গুলো নিয়ে গতকাল বর্ধিত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
সংস্কার কমিশনের প্রসেস এবং ইস্যুতে দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি নয় দেশ ও জাতীয় স্বার্থে সকলের কল্যাণ জামায়াতে ইসলামী বিবেচনা করছে বলে মন্তব্য করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেছেন, কোনো কোনো ইস্যুতে নানা সমস্যা দেখা যাচ্ছে। কিছুদিন আগে পাবনা আটঘরিয়া এলাকায় জামায়াতের কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ ও মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এখনও নির্বাচনের তারিখই হয়নি, কিন্তু জায়গা এলাকা দখলের প্রতিযোগিতা হচ্ছে। তাই আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, আগামী নির্বাচনও একেবারে সঠিক ও সুস্থ হওয়ার মতো পরিস্থিতি এখনো লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
সংস্কার ইস্যুতে দলের চেয়ে জাতীয় স্বার্থের বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে জামায়াত জানিয়ে মো. তাহের বলেন, সংস্কার কমিশনের প্রসেস এবং ইস্যুতে দলীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে নয় দেশের স্বার্থে জাতীয় স্বার্থে সকলের কল্যাণে জামায়াতে ইসলামী বিবেচনা করছে। এ কারণেই আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে যেগুলো উত্তম হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে সেখানে প্রয়োজনে আমরা আমাদের মত চেঞ্জ করে ঐক্যমত্য পোষণ করেছি। আমরা যখনই বুঝতে পেরেছি আমাদের যে সিদ্ধান্ত বা চিন্তা তার চেয়ে আরো বেটার হতে পারে দেশ ও জাতির জন্য। তখনই আমরা পরিবর্তন আনছি। কারণ একটাই আমাদের লক্ষ্য কিন্তু দলীয় নয় জাতীয় অর্জন। তিনি বলেন, গত আলোচনার পর ইতোমধ্যেই দেশে অনেকগুলো ঘটনা ঘটছে। এবং কারো কারো বিবেচনায় বিশ্লেষণ হচ্ছে এর পেছনেও দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র আছে এবং সেই ষড়যন্ত্রের বহিঃপ্রকাশই হচ্ছে নানামুখী এসব আনরেস্ট তৈরি করার একটি প্রক্রিয়া। আমরা এ ধরনের ষড়যন্ত্রের নিন্দা জ্ঞাপন করছি। তিনি বলেন, সরকারের প্রতি আমাদের অনুরোধ থাকবে, তারা যেন আরো দৃঢ়তা এবং সঠিকতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করে। সরকারের সমস্ত পজিটিভ কাজে জামায়াতে ইসলামীর সমর্থন থাকবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
জামায়াতের এ শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেন, সমস্ত রিফর্ম কমিটির মাধ্যমে আমরা যে বিষয়গুলো বের করে আনার চেষ্টা করছি, আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে আগামী নির্বাচন। নির্বাচন যেন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়, সন্ত্রাসমুক্ত হয় এটি আমাদের প্রধান লক্ষ্য। কারণ আজকে বাংলাদেশ যেখানে এসে দাঁড়িয়েছে, তার জন্য সবচেয়ে বেশি অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে গত তিনটি নির্বাচনের নামে প্রহসন। বাংলাদেশকে যদি এথেকে বেড়িয়ে আসতে হয়, একেবারে একটি গ্রহণযোগ্য সুষ্ঠু অবাধ জাতীয় নির্বাচনই এর সমাধান। তিনি বলেন, আমরা দেখছি নির্বাচনের ব্যাপারে খুবই স্পষ্ট একটি তারিখ বা টাইমলাইন না থাকার কারণে রাজনৈতিক দল গুলোর ভিতরেও নানারকম অস্থিরতা কাজ করছে। এজন্য আমি জাতীয় ঐক্যমুক্ত কমিশনের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাতে চাই, আপনারা অনেক পরিশ্রম করছেন সেজন্য ধন্যবাদ। আপনার টানা আলোচনা করে যাচ্ছেন। তবে আমি মনে করি এখানে খুব বেশি সময় না নিয়ে আমাদেরকে একটি ঐক্যমতে পৌঁছাতে হবে।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং জাতীয় নির্বাচনের জন্য যে সমস্ত ইস্যু গুরুত্বপূর্ণ সেগুলোকে গুরুত্ব দিয়েই একটা সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা দরকার। এবং এরপরে যত শিগগিরি সম্ভব নির্বাচন আয়োজন করা দরকার।
ঐক্যমত্য কমিশনের আলোচনায় উপস্থিত নির্বাচন সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যানের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাহের বলেন, আমাদের এমন একটি ব্যবস্থা করা উচিত যে ব্যবস্থায় নির্বাচন সুষ্ঠু হবে সঠিক হবে। এটার জন্য যা যা করা দরকার যদি শক্ত হতে হয় তাহলে শক্ত হতে হবে। কারণ নির্বাচন হতে হবে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য।
নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা কিছুটা প্রশ্নবোধক মনে হচ্ছে উল্লেখ করে তাহের বলেন, কিছু কিছু ঘটনায় নির্বাচন কমিশন সঠিক সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ নিতে পারছে না। সেক্ষেত্রেও সরকারকে অনুরোধ করবো, বিষয়টি যেন খেয়ার রাখা হয়।
দুর্নীতি রোধে কাজ করা প্রতিষ্ঠান দুদক অনেকটা দুর্নীতিগ্রস্ত। এটা সব মানুষের কাছে চিহ্নিত বলে মন্তব্য করে মো. তাহের বলেন, আমরা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ওপর নজরদারির জন্য জন্য ওয়াচডগের মতো কাজ করবে এমন একটা কাউন্সিল গঠনে প্রস্তাব করেছি। সেখানে একটা টাস্কফোর্স থাকবে। সেই টাস্কফোর্স দুর্নীতির ওপর তদন্ত করবে এবং যারা দোষী তাদের চিহ্নিত করবে। তারা প্রাথমিকভাবে জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনতে পারবে।
ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেন, আজ জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনার প্রথম ধাপে বেশ কয়েকটি বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। দুর্নীতি রোধে কাজ করা প্রতিষ্ঠান দুদক কমিশনের ওপরে আলোচনা হয়েছে। দুদকের ওপরে নজরদারির জন্য ওয়াচডগের মতো কাজ করবে এমন একটা কাউন্সিল গঠনে আমরা প্রস্তাব করেছি। সেখানে একটা টাস্কফোর্স থাকবে। সেই টাস্কফোর্স দুর্নীতির ওপর তদন্ত করবে এবং যারা দোষী তাদের চিহ্নিত করবে। তারা প্রাথমিকভাবে জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনতে পারবে। যদি সে চাকরিজীবী হয় তবে তাকে সাসপেন্ড করা। অর্থাৎ দুর্নীতি দমন কমিশনের ওপরেই যেন ওয়াচডগের মতো কাউন্সিল বা টাস্কফোর্স থাকে। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনও আমাদের সঙ্গে একমত হয়েছে। এ ব্যাপারে কমিশনও সুপারিশ করবে বলে জানিয়েছে।
তাহের বলেন, আমরা আরেকটি বিষয়ে প্রস্তাব করেছি সেটা হচ্ছে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ। আমাদের দেশকে স্বৈরাচার বা ফ্যাসিবাদ মুক্ত করতে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। একজনের হাতে যেন সব ধরনের ক্ষমতা কুক্ষিগত না হয়। ‘আমরা প্রস্তাব করেছি যে, যে কোনো একজন ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী হলে তিনি দলের প্রধান থাকতে পারবেন না। অর্থাৎ যিনি প্রধানমন্ত্রী থাকবেন তিনি দলের প্রধান থাকতে পারবেন না, আবার ?যিনি দলের প্রধান তিনি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না।’
এ ধরনের উদাহরণ বহু দেশে আছে উল্লেখ করে তাহের বলেন, আমাদের পাশের দেশ ভারত, সেখানেও এ ধরনের প্র্যাকটিস আছে। সোনিয়া গান্ধী যখন কংগ্রেসের সভাপতি তখন মনমোহন সিং ছিলেন রাষ্ট্রের প্রধান। আজ যে মোদি সাহেব প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আছেন, তিনি কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হলেও দলের প্রধান আরেকজন। অন্যদিকে আমেরিকাতেও যদি দেখেন সেখানকার প্রেসিডেন্ট কিন্তু রিপাবলিকান দলের প্রধান না। সুতরাং সারা দুনিয়াতে ব্যালেন্স অব পাওয়ারটা আছে। আমরা এ প্রস্তাবটা করেছি। যাতে করে একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী ও পার্টির প্রধান হতে না পারেন।
জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, এর আগের আলোচনায় আমরা বেশ কিছু বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছিলাম। আজ আমরা আরও বিস্তারিত আলোচনা করেছি। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনও আমাদের সঙ্গে একমত হয়েছে যে একজন ব্যক্তি দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। অর্থাৎ দশ বছরের বেশি একজন ব্যক্তি তার পুরো জীবনে প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না। এতে করে ক্ষমতার ভারসাম্য তৈরি হবে। তিনি এমন কিছু হয়ত করবেন না যা তাকে নিগৃহীত বা জনগণের সামনে প্রশ্নবিদ্ধ করবে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের জন্য টাস্কফোর্সে কারা থাকবেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা নিয়ে এখনো আমরা বিস্তারিত কিছু বলিনি। যেহেতু এটা প্রশাসনিক বিষয়। আমরা এটা প্রস্তাব করেছি।
তাহের বলেন, আপনারা জানেন গত ১৫ বছর যে নির্বাচন কমিশন ছিল তার মূল দায়িত্ব ছিল সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। কিন্তু তারা সেটা করেনি বা করতে পারেনি। এর কারণ হচ্ছে আমাদের বিদ্যমান আইনে নির্বাচন কমিশনের কমিশনারদের ত্রুটিবিচ্যুতি বা তাদের ভুল-ভ্রান্তির জন্য খুব বেশি শাস্তির কোনো সিস্টেম ছিল না।
তিনি বলেন, আমরা এবার বলেছি নির্বাচন কমিশনারদের চাকরিকালীন সময়ে ত্রুটিবিচ্যুতির জন্য জুডিশিয়াল কাউন্সিল যেন তদন্ত ও শাস্তি নিশ্চিত করতে পারে। তাদের চাকরির মেয়াদ যখন শেষ হয়ে যাবে বা চাকরি চলে যায় তখন তারা আর আইনের আওতায় থাকেন না। আমরা এবার প্রস্তাব করেছি, আইনের সংশোধনী এনে যেন তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা যায়। ভবিষ্যতে নির্বাচন কমিশন থেকে অবসরে গেলেও তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। সেজন্য নির্বাচন কমিশন আইনের সংশোধনী আনা দরকার। এই তিনটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আমরা আজ কথা বলেছি। এই তিনটি বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনও আমাদের সঙ্গে একমত হয়েছে।
জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, আমরা নীতিগতভাবে একমত। তবে যে ফরমেটটা দেওয়া হয়েছে সেখানে কিছু সংশোধনী আমরা এনেছি। মূলত প্রধান বিচারপতি ও রাষ্ট্রপ্রধানকে তারা প্রস্তাব করেছিলেন বোর্ডের ভেতরে রাখার বিষয়ে। আমরা বলেছি, না, তাদের বাইরে রাখতে হবে। কারণ দেশে যদি কোনো ক্রাইসিস তৈরি হয় তাহলে সেটার সমাধানের জন্য মানুষ যাবে কোথায়। এক্ষেত্রে তো সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ও রাষ্ট্রপতি ক্রাইসিস ফেস করবেন। সেজন্যই তাদের আমরা জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের বাইরে রাখতে বলেছি।
দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন একটি জাতীয় সনদের দিকে অগ্রসর হতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। গতকাল রবিবার ঢাকায় সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর বর্ধিত আলোচনার শুরুতে অধ্যাপক আলী রীয়াজ এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘জাতীয় সনদ তৈরির লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনা দু-একদিনের মধ্যে শেষ করে শিগগিরই। দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা শুরু করবে কমিশন।’ প্রাথমিক পর্যায়ে যেসব বিষয়ে মতভিন্নতা থাকবে, দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনায় সেসব বিষয়ে ঐকমত্যের লক্ষ্যে অগ্রসর হতে পারবেন বলে বিশ্বাস করেন তিনি। অনেক রক্ত ও প্রাণের বিনিময়ে আলোচনার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে আলী রীয়াজ বলেন, ‘যাদের আত্মদানে এই সুযোগ তৈরি হয়েছে, তাদের প্রতি আমাদের দায় আছে। এ দায় শুধু জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের নয়; বরং বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক শক্তি, সুশীল সমাজ এবং সামাজিক শক্তিগুলোরও এ দায় রয়েছে।’
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় বৈঠক জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন কমিশন সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান।
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের নেতৃত্বে দলটির পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি(ভারপ্রাপ্ত) এ টি এম মাসুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, ড. হামিদুর রহমান আযাদ, অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য, কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ ও বিশিষ্ট আইন জীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।