ঢাকা সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ৯ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

অনিশ্চিত ইশরাকের শপথ

অনিশ্চিত ইশরাকের শপথ

বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র ঘোষণা করে গত ২৭ মার্চ রায় দেন ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল। রায়ের পর ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে ২৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। মেয়র হিসেবে ইশরাকের শপথের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশন থেকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়ার পরও কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় গত বুধবার থেকে তার সমর্থকরা নগর ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন শুরু করেন। আন্দোলনকারীরা বলছেন, যত দিন না ইশরাক হোসেনকে শপথ পড়ানো হবে, তত দিন তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। এরইমধ্যে ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার পথে ১০টি অন্তরায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। গতকাল সোমবার দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডি থেকে এসব বাধার কথা তুলে ধরেন জুলাই আন্দোলনের সম্মুখসারির এই যোদ্ধা। আসিফ মাহমুদের এমন মন্তব্যে ইশরাক হোসেনের মেয়র পদে শপথ নেওয়াটা এখন অনিশ্চিত হয়ে গেল। তবে, ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনও বলেছেন, হাসিনারেও বলছিলাম কবরটা ঠিক করাই আছে আল্লাহর হুকুম থাকলে সেখানেই হবে ইনশাআল্লাহ। লড়াই শেষ হয় নাই। হয় দাবি আদায় করব না হয় আল্লাহর নির্ধারিত স্থানে মাটির নিচে শায়িত হবো। গণতন্ত্রের সঙ্গে, জনগণের ভোটের অধিকারের সঙ্গে এক চুল ছাড় হবে না।

এদিকে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান কার্যালয় নগর ভবনের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে গতকাল সোমবারও বিক্ষোভ করেছেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের সমর্থকরা। সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টার কিছু আগে পর্যন্ত গুলিস্তান মাজার এলাকায় সড়কের একপাশ বন্ধ করে বিক্ষোভ করেন ইশরাকের সমর্থকরা। ট্রাক এবং দড়ি দিয়ে সড়ক বন্ধ করে অবস্থান নেন তারা। একপর্যায়ে আন্দোলনকারী উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের কুশপুত্তলিকা দাহ করে। আন্দোলনের ফলে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয় গুলিস্তান সদরঘাট সড়কে। সরেজমিন দেখা যায়, গুলিস্তান মাজার থেকে পুলিশ হেডকোয়ার্টার পর্যন্ত এলাকা দখলে রাখেন ইশরাকের সমর্থকরা। নগর ভবন থেকে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত বিভিন্ন পয়েন্টে বসানো মাইকে চলে স্লোগান। ছোট ছোট মিছিল বের হয়। নগর ভবনের প্রধান ফটকের সামনে সংগীত পরিবেশন করা হয়।

‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে গতকাল ষষ্ঠ দিনের মতো নগর ভবনের সামনে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন ইশরাকের সমর্থকরা। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত আবারও নগর ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দিয়েছেন সাবেক সচিব মশিউর রহমান। ইশরাকের সমর্থকদের দাবি, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার কারণেই আদালতের রায় ও নির্বাচন কমিশনের গেজেট প্রকাশের পরও ইশরাক শপথ নিতে পারছেন না। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অস্থায়ী দপ্তর নগর ভবনেই থাকায় সেখানে দাপ্তরিক কাজ করেন উপদেষ্টা। তবে ইশরাকপন্থিদের টানা আন্দোলনের কারণে কয়েক দিন তিনি সেখানে যাননি।

বিক্ষোভকারীরা বলছেন, যত দিন না ইশরাক হোসেনকে শপথ পড়ানো হবে, তত দিন তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। এদিকে ইশরাকের পক্ষে মামলার রায় ও নির্বাচন কমিশনের আপিল না করার বিষয়ে কোনো আইনি জটিলতা আছে কি না, সে সম্পর্কে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় গত বৃহস্পতিবার আইন ও বিচার বিভাগে চিঠি দিয়েছে।

ইশরাককে শপথ না পড়ানো ১০ জটিলতা জানালেন আসিফ মাহমুদ : বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়ার পথে ১০টি অন্তরায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। গতকাল সোমবার দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডি থেকে এসব বাধার কথা তুলে ধরেন জুলাই আন্দোলনের সম্মুখসারির এই যোদ্ধা।

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ লেখেন, ‘প্রথমত, আর্জি সংশোধন অবৈধ মর্মে হাইকোর্টের রায় ভায়োলেট করে নির্বাচন কমিশন ট্রাইব্যুনাল এই রায় প্রদান করেছে। দ্বিতীয়ত, নির্বাচন কমিশন শুনানিতে অংশগ্রহণ না করায় একপাক্ষিক রায় হয়েছে এবং পরবর্তীতে কমিশন আপিলও করেনি।

তৃতীয়ত, আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়া হলেও মতামত দেওয়ার আগেই এবং একইসঙ্গে দুইজন নাগরিকের পাঠানো লিগ্যাল নোটিশ উপেক্ষা করে রাত ১০টায় গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন।

আসিফ লেখেন- চতুর্থত, এ মামলায় স্থানীয় সরকার বিভাগ পক্ষভুক্ত ছিল না এবং রায়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রতি কোনো নির্দেশনার উল্লেখ নেই। পঞ্চমত, শপথ না দেওয়ার কারণে নির্বাচন কমিশন স্থানীয় সরকার বিভাগকে বিবাদী করে রিট পিটিশন দায়ের করা হয়েছে, যা এখনও বিচারাধীন।

উপদেষ্টা লেখেন- ষষ্ঠত, বরিশাল সিটি কর্পোরেশনসংক্রান্ত মামলায় আর্জি সংশোধনসংক্রান্ত হাইকোর্টের রায়কে আমলে নিয়ে খারিজ করেছে ট্রাইব্যুনাল। ফলে ট্রাইব্যুনালের দ্বিমুখী অবস্থান বোধগম্য হচ্ছে না। সপ্তম, মেয়াদসংক্রান্ত জটিলতা দেখা দিয়েছে; কতদিন মেয়র থাকবেন বা আদৌ মেয়াদ আছে কি না তা স্পষ্ট নয়।

আসিফ আরও লেখেন- অষ্টম, নির্বাচন কমিশনের চিঠিতে ‘কোনো প্রকার আইনি জটিলতা না থাকলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ’ এর কথা বলা হয়েছে। স্পষ্টতই বিতর্কিত রায়, স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রতি কোনো নির্দেশনা না থাকা, লিগ্যাল নোটিশ এবং রিট পিটিশন বিচারাধীন থাকাসংক্রান্ত আইনি জটিলতা রয়েছে। নবম, এই জটিলতা নিরসনে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়া হয়েছে। দশম, আওয়ামী আমলের অবৈধ নির্বাচনগুলোকে বৈধতা দেওয়ার প্রশ্নও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। রাজনৈতিক দলগুলো যদি স্বীকার করে যে, আওয়ামী আমলের নির্বাচনগুলো বৈধ, তবে সরকারের জন্য এসব প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে না।

উপদেষ্টা বলেন, উচ্চ আদালতে বিচারাধীন এবং উপরোল্লিখিত জটিলতা নিরসন না করা পর্যন্ত শপথ গ্রহণ সম্ভব নয়। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে বরং গায়ের জোরে আদায় করার উদ্দেশ্যেই নগর ভবন বন্ধ করে মহানগর বিএনপি এই আন্দোলন চালাচ্ছে। ফলে সিটি কর্পোরেশনের দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত হওয়াসহ জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। এসব জটিলতা নিরসন হলে স্থানীয় সরকার বিভাগের শপথ দিতে কোনো সমস্যা নেই।

আসিফ বলেন, তবে ব্যক্তিগতভাবে আমার বিরুদ্ধে ইশরাক হোসেনের এই আক্রমণাত্মক ও অপমানজনক কার্যক্রমের কোনো কারণ খুঁজে পেলাম না! আবার কেউ বলবেন না যে, এটা সাধারণ জনগণ করছে, কারণ বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন গ্রুপের নির্দেশনা এবং গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী দলীয় নেতাকর্মীরাই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।

হয় দাবি আদায় করব না হয় মাটির নিচে শায়িত হবো- ইশরাক : জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম ইশরাক হোসেনের সমালোচনা করেছেন। সারজিসের সমালোচনার প্রেক্ষপটে গতকাল সোমবার বিকালে ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি এ মন্তব্য করেন। ইশরাক হোসেনের পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো- ‘মেয়র ফেওর কিছু না। অন্তর্বর্তী সরকারের কতিপয় ব্যক্তির অন্তরে ক্ষমতার লোভ ও এটি চিরস্থায়ী করার কুৎসিত সত্যটা বের করে আনাটাই ছিল মুখ্য উদ্দেশ্য।

হাসিনারেও বলছিলাম কবরটা ঠিক করাই আছে আল্লাহর হুকুম থাকলে সেখানেই হবে ইনশাআল্লাহ। লড়াই শেষ হয় নাই। হয় দাবি আদায় করব না হয় আল্লাহর নির্ধারিত স্থানে মাটির নিচে শায়িত হবো। গণতন্ত্রের সঙ্গে, জনগণের ভোটার অধিকারের সঙ্গে এক চুল ছাড় হবে না।

অনেক সমালোচনা মাথা পেতে নিয়েছি, পিতা-মাতা তুলে গালাগালও চুপ করে সহ্য করে গিয়েছি। কারণ একটাই, এদের চেহারা উন্মোচন করতে হবে গণতন্ত্রের স্বার্থে, জনগণের ভোটার অধিকারের স্বার্থে। সর্বশক্তি দিয়ে এরা ঢাকায় বিএনপির মেয়র আটকানোর চেষ্টার মধ্য দিয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচনে কি ভূমিকা পালন করবে তা ক্লিন-কাট বুঝিয়ে দিল।

কোনো কথা চলবে না, যারা নিরপেক্ষতা শুধু বিসর্জন দিয়েছে নয়, বরঞ্চ একটি দলের প্রতিনিধির কাজ করেছে তাদের অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। এরা হাসিনার মতোই বিচারকদের হুমকি দিয়েছে। নির্বাচন কমিশনকে চ্যালেঞ্জ করছে। উচ্চ আদালতে হস্তক্ষেপ করেছে। এবং আমলাতন্ত্র হাসিনার দোসরদের সঙ্গে নিয়ে লম্বা কুচক্র পরিকল্পনা করছে। একদিন এদের সবার নাম পরিচয় প্রকাশ পাবে।

কর্মীদের দিয়ে উপদেষ্টা আসিফকে আক্রমণ ও অপমান করাতে পারেন না- ইশরাককে সারজিস: গতকাল সোমবার বিকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে ইশরাক হোসেনের সমালোচনা করে সারজিস আলম লিখেন, ‘ইশরাক ভাইকে আমি চিনতাম সাদেক হোসেন খোকার ছেলে হিসেবে। যেদিন হাসিনার পুলিশের হাত থেকে বুক চিতিয়ে নিজের কর্মীকে ছিনিয়ে আনলেন সেদিন থেকে ইশরাক ভাইকে আমি তার পরিচয়ে চিনি, রাজনীতিবিদ হিসেবে চিনি। তার সঙ্গে একাধিকবার কথা হয়েছে। গতানুগতিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব কিংবা বাংলাদেশের পার্সপেকটিভে বিএনপির মতো বড় রাজনৈতিক দলের অন্য দশজন নেতার মতো গতানুগতিক চিন্তাধারার মনে হয়নি।

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের কথা চিন্তা করে না হোক, অভ্যুত্থানের সামনের সারির আপসহীন একজন নেতৃত্ব ও যোদ্ধার কথা চিন্তা করে হলেও তার স্থানীয় কিছু কর্মীর মাধ্যমে তিনি আসিফ মাহমুদকে এভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণ করাতে পারেন না, অপমানিত করাতে পারেন না, গালাগাল করাতে পারেন না, বাবা-মা তুলে কথা বলাতে পারেন না। এটা কখনওই রাজনৈতিক শিষ্টাচারপন্থি নয়। পরোক্ষভাবে এই দায় তার উপরেও বর্তায়।

তিনি অনেক ক্ষেত্রেই সত্যটাকে অকপটে স্বীকার করেন, ইভেন সেটা দলের বক্তব্যের সঙ্গে না মিললেও। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে এই প্রজন্মের যারা আছেন তাদের থেকে সময়ের, জনগণের এবং আমাদের প্রত্যাশাটা অন্যদের তুলনায় বেশি। ইশরাক ভাই তাদের মধ্যে অন্যতম।

বিএনপি তাদের জায়গা থেকে অসংখ্যবার বলেছে এবং এটাই সত্য যে, বিগত তিনটা জাতীয় নির্বাচন এবং অন্য স্থানীয় নির্বাচনগুলো ছিল একপাক্ষিক, প্রশ্নবিদ্ধ এবং অবৈধ। যে নির্বাচন অবৈধ, সেই নির্বাচনের মেয়র আমি কীভাবে হতে চাই? সেটা কীভাবে বৈধ হয়? তাহলে তো সেই নির্বাচনকে আমি বৈধতা দিয়ে দিচ্ছি।

তাহলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে শুধু ইশরাক ভাই কেন, সব জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, সিটি কর্পোরেশন, ওয়ার্ড এবং সংসদীয় আসনে সবাইকে তাদের জায়গা ফিরিয়ে দেওয়া উচিত। মেয়র হয়ে সাময়িক ক্ষমতার ব্যবহার করা, সুযোগ-সুবিধা ভোগ করা; এসবের দিকে তাকিয়ে সামান্য কয়েক দিনের জন্য একটা চেয়ারে বসে অবৈধ নির্বাচনগুলো ইশরাক ভাই যদি বৈধতা দেন তাহলে এটি তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে একটি কালো দাগ হয়ে থাকবে।

আমি বিশ্বাস করি তিনি তার গ্রহণযোগ্যতা এবং জনপ্রিয়তায় এই মাইলস্টোনগুলো ধীরে ধীরে অর্জন করে নিতে পারবেন। কিন্তু সাময়িক প্রাপ্তির আশায় অবৈধ নির্বাচনের সো-কল্ড বৈধ মেয়র হিসেবে বসে তিনি তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে এত বড় একটি দাগ লাগাবেন কি না সেই সিদ্ধান্ত তাকেই নেওয়া উচিত।

একটি বিষয় বিচারাধীন প্রক্রিয়ায় থাকাকালীন স্থানীয় নেতাকর্মীদের দিয়ে নগর ভবনের সামনে এর চেয়ে কয়েকগুণ বড় বিক্ষোভ কিংবা অবস্থান কর্মসূচি এখন যেমন করছেন, আগামীতেও তিনি করতে পারবেন। সেই তুমুল জনপ্রিয়তা তার আছে। কিন্তু এই জনপ্রিয়তাকে তিনি অপরাধের বৈধতা উৎপাদনে ব্যবহার করতে পারেন না। তার সঙ্গে এটা যায় না।

যারা আগামী প্রজন্মকে পথ দেখাবে বলে আমরা বিশ্বাস করি তারাই যদি বিগত অবৈধ নির্বাচনগুলো বৈধতা দেওয়ার জন্য নিজেদের সক্ষমতার অপব্যবহার করে তাহলে এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিক্রমায় ঐতিহাসিক দায় তৈরি করবে। ইশরাক ভাই সেই দায় সারাজীবনের জন্য বহন করবেন কি না সেই সিদ্ধান্ত তাকেই নিতে হবে।

আমরা তাকে ব্যক্তিত্বের আনকম্প্রোমাইজ জায়গা থেকে যে উচ্চতায় প্রত্যাশা করি, এসব গতানুগতিক কালচার পলিটিক্সের কারণে সেটা তিনি নির্দ্বিধায় হারাবেন। রাজনৈতিক দীর্ঘ পথচলার প্রারম্ভেই ক্ষমতার সঙ্গে নীতির নেগোসিয়েশন সাদেক হোসেন খোকার উত্তরসূরির মানায় না, ইশরাক ভাইয়ের মানায় না।’

প্রসঙ্গত, টানা ষষ্ঠ দিনের মতো ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র পদে ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করছে আন্দোলনকারীরা। এদিকে সোমবার তারা নগর ভবন ব্লকেড কর্মসূচি পালন করছেন। এসময় ভবনের মূল ফটক আটকে রাখেন তারা। যার কারণে ডিএসসিসির সব ধরনের সেবা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত