গাজায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে চলমান আগ্রাসনের জবাবে ইয়েমেনি হুথি আন্দোলন আরেকটি ইসরায়েল-বিরোধী অভিযান পরিচালনা করেছে। ইসরায়েলি সরকারের বেন গুরিওন বিমানবন্দরকে লক্ষ্য করে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে। গতকাল এক প্রতিবেদনে মেহের নিউজ এজেন্সি এ খবর জানিয়েছে। সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াহিয়া সারি পুনরায় নিশ্চিত করেছেন, ইসরায়েলি আগ্রাসন শেষ না হওয়া এবং গাজার অবরোধ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি ধর্মীয়, নৈতিক এবং মানবিক দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখবে ইয়েমেন। তিনি আরও প্রতিশ্রুতি দেন, সশস্ত্র বাহিনী ইয়েমেনের ওপর যে কোনো ইসরায়েলি আক্রমণের জবাব দেবে প্রতিশোধমূলক অভিযান চালাবে। যার মধ্যে আছে বেন গুরিওন বিমানবন্দরে হামলা।
ইয়াহিয়া সারি আরও বলেন, ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনী অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের গভীরে ইহুদিবাদী সত্তার বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান গতিতে প্রতিশোধমূলক অভিযান চালিয়ে যাবে। গাজা উপত্যকার ফিলিস্তিনিদের সাথে সংহতি প্রকাশ করে ইয়েমেনি বাহিনী তাদের প্রতিশোধমূলক অভিযান ত্যাগ করবে না, যতক্ষণ না চলমান আগ্রাসন বন্ধ হয় এবং কঠোর অবরোধ সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার করা হয়। গাজায় গণহত্যার যুদ্ধ তীব্রতর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইয়েমেনিরা গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক রুটগুলোতে কৌশলগত অবরোধ আরোপ করে। এর উদ্দেশ্য ছিল ইসরায়েলে সামরিক সরবরাহ সরবরাহে বাধা সৃষ্টি করা এবং গাজায় চলমান মানবিক জরুরি অবস্থার বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো।
এদিকে মার্কিন সমর্থিত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে মৌলিক দাবির প্রতিফলন ঘটেনি বলে অভিযোগ করেছে হামাস। তবে প্রস্তাবগুলো তারা এখনও যাচাই করে দেখছে। হামাস কর্মকর্তাদের বরাতে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।হামাসের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, সর্বশেষ প্রস্তাবটি যুদ্ধের অবসান ঘটানোসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে হামাসের মৌলিক দাবি পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। তারা প্রস্তাবটি আরও পর্যালোচনা করে সঠিক সময়ে জবাব দেবেন।
হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে গত বৃহস্পতিবার দাবি করা হয়, বিশেষ মার্কিন প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফের প্রস্তাবে ইসরায়েল সম্মত হয়েছে। তেল আবিব তাতে স্বাক্ষর করার পর প্রস্তাবটি হামাসের কাছে পেশ করা হয়। এখন ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীটির সিদ্ধান্তের অপেক্ষা করছে ওয়াশিংটন। যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে স্বাক্ষরের বিষয়ে ইসরায়েলি সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশ করা হয়নি। তবে বিভিন্ন সূত্রের বরাতে বিবিসির দাবি, বৃহস্পতিবার জিম্মিদের পরিবারের কাছে মার্কিন প্রস্তাবে সম্মতি দেওয়ার কথা বলেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের বরাতে দেশটির সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, চুক্তি অনুযায়ী ১০ জন জিম্মি এবং ১৮ জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করবে হামাস। বিনিময়ে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পাশাপাশি ইসরায়েলি কারাগারে থাকা ১২৫ জন ফিলিস্তিনিকে ছেড়ে দেবে তেল আবিব।