ঢাকা শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

তিস্তার পানি বাড়ায় ভারতে রেড অ্যালার্ট, বাংলাদেশে সতর্কবার্তা

* সিলেটে নদ-নদীর পানি বাড়ছে, তলিয়ে গেছে গোয়াইনঘাট রাধানগর সড়ক * হাতিয়ায় ঝড়ে শতাধিক কাঁচা ঘর ও ৬৩ কিলোমিটার সড়কের ক্ষতি * দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ৪৬ ঘণ্টা পর লঞ্চ চলাচল শুরু * নদীর স্রোতে ভেসে যাওয়া বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার
তিস্তার পানি বাড়ায় ভারতে রেড অ্যালার্ট, বাংলাদেশে সতর্কবার্তা

সিকিমে টানা ভারি বৃষ্টির মধ্যে তিস্তা নদীর পানি বিপজ্জনকভাবে বাড়তে থাকায় ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করেছে ভারতের আবহাওয়া দপ্তর। বন্যা ও ভূমিধসের আশঙ্কায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে সিকিম রাজ্যের মাঙন, গ্যালশিং ও সোরেং জেলায়। সিকিম হিমালয়ের চিতামু হ্রদ থেকে সৃষ্টি নদী তিস্তা ভারতের সীমানা পেরিয়ে নীলফামারী জেলার কালীগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ফলে তিস্তার উজানে বন্যা দেখা দিলে তার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়ে। বাংলাদেশের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলেছে, রংপুর বিভাগে তিস্তার সঙ্গে ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি আগামী তিন দিন বাড়তে পারে এবং তিস্তার পানি বিপৎসীমায় প্রবাহিত হতে পারে। উজানে ভারি বৃষ্টির প্রভাবে সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগেও নদ-নদীর পানি আগামী দুই দিন বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস এসেছে।

ভারতের পত্রিকা ইকনোমিক টাইমস লিখেছে, গতকাল শনিবার সকালে বালুওয়াখানি, গ্যাংটক থেকে পাওয়া ‘নাওকাস্ট’ সতর্কবার্তায় সকাল ৬টা ১৫ মিনিট থেকে দুই থেকে তিন ঘণ্টা ভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়। গ্যাংটকের জেলা প্রশাসকের জারি করা জরুরি এক ঘোষণায় বলা হয়, জনসাধারণকে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হচ্ছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিয়মিত হালনাগাদ তথ্য জানাবে। স্থানীয় প্রশাসনের তরফে জানানো হয়, মাঙন জেলায় রেড অ্যালার্ট জারির পরিপ্রেক্ষিতে গ্যাংটকের অন্তর্গত দিকচু থেকে সিংতাম পর্যন্ত তিস্তা নদী অববাহিকায় বন্যার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। সে কারণে তিস্তা নদীর অববাহিকায় কর্মরত মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখতে গ্যাংটক জেলার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তাকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জরুরি কোনো পরিস্থিতি ঘটলে জেলা নিয়ন্ত্রণ কক্ষে বা সংশ্লিষ্ট জেলা প্রধানদের সঙ্গে তাৎক্ষণিক যোগাযোগ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কর্মকর্তাদের। উজানে ভারি বৃষ্টির প্রভাবে সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের নদীর পানি আগামী দুই দিন বাড়তে পারে বলে আভাস দিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান বলেন, সিলেট বিভাগের নদীর পানি এখনও বাড়ছে। উজানে ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে সিলেট ও মনসিংহ বিভাগের নদীর পানি আগামাী দুই দিন বিপৎসীমা অতিক্রমের সম্ভাবনা রয়েছে। তৃতীয় দিন থেকে কমতে পারে। চট্টগ্রাম বিভাগের নদীগুলোর পানি কাল থেকে কমতে পারে। বন্যার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের সারিগোয়াইন, যাদুকাটা, ধলাই, সোমেশ্বরী ও মনু নদীর পানি আগামী দুইদিন বেড়ে

বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। এই সময় সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা ও মৌলভীবাজার জেলায় নদীসংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরির ঝুঁকি রয়েছে।

সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি বাড়ছে, এ পরিস্থিতি আগামী দুই দিন অব্যাহত থাকতে পারে। পরের দিন কমে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। রংপুর বিভাগের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি আগামী তিন দিন বাড়তে পারে এবং তিস্তার পানি সতর্কসীমায় প্রবাহিত হতে পারে। পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম বিভাগের গোমতী, মুহুরী, ফেনী, হালদা, সাঙ্গু, মাতামুহুরী নদীর পানি স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং পরের দুই দিন কমতে পারে। গঙ্গা-পদ্মা অববাহিকায় নদীর পানি পাঁচ দিন বাড়তে পারে; তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। ব্রহ্মপুত্র-যমুনা অববাহিকার নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হলেও আগামী পাঁচ দিন বাড়তে পারে। তবে বিপৎসীমার নিচেই থাকার আভাস মিলেছে।

সিলেটে নদ-নদীর পানি বাড়ছে, তলিয়ে গেছে গোয়াইনঘাট-রাধানগর সড়ক : সীমান্তের ওপারে ভারতে গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সিলেটের নদ-নদীতে পানি বাড়ছে। পাশাপাশি সিলেটেও চলছে থেমে থেমে বৃষ্টি। তবে কোনো নদ-নদীর পানি এখনও বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি। এদিকে গতকাল শনিবার সকালে গোয়াইনঘাট উপজেলার গোয়াইনঘাট-রাধানগর সড়কের অংশবিশেষ পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে ওই সড়ক দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যান চলাচল করছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, জেলার প্রধান দুই নদী সুরমা, কুশিয়ারাসহ সব ক’টি নদ-নদীর পানি বাড়ছে। সারি-গোয়াইন ও ধলাই নদের পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে আজ সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে ৪১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এটাই সতর্কবার্তা। ভারতে বৃষ্টি হলেই পাহাড়ি ঢল সীমান্তের নদ-নদী দিয়ে সিলেটে আসে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলার নিম্নাঞ্চলে দ্রুত পানি বাড়ছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলেও পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কা আছে। গোয়াইনঘাট উপজেলার পর্যটনকেন্দ্র জাফলং ও বিছনাকান্দি এবং কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পর্যটনকেন্দ্র সাদা পাথর পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এসব স্থানে পর্যটকদের ভ্রমণ করতে না যাওয়াটাই ভালো বলে স্থানীয় লোকজন পরামর্শ দিয়েছেন।

গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রতন কুমার অধিকারী গতকাল বেলা একটার দিকে জানান, উপজেলার গোয়াইনঘাট-রাধানগর সড়কের নিচু অংশের অংশবিশেষ প্লাবিত হয়েছে। তবে বৃষ্টি কমে এলেই পানি নেমে যাবে। এখনও উপজেলার কোনো এলাকা প্লাবিত না হলেও তারা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন। পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় কিছু কিছু এলাকায় পানি বাড়ছে।

জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, পানি বৃদ্ধি পেলেও কারও পানিবন্দি অবস্থায় থাকার খবর পাওয়া যায়নি। স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রেখেছে; পাশাপাশি জনসাধারণকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। এছাড়া পর্যাপ্ত পরিমাণে শুকনা খাবারের মজুত রাখা হয়েছে।

কোম্পানীগঞ্জের ইউএনও আজিজুন্নাহার বলেন, গতকালের চেয়ে আজ পানি কিছুটা কমেছে। নিম্নাঞ্চলে পানি থাকলেও কোনো গ্রাম বা এলাকা প্লাবিত হয়নি। উপজেলায় ৩৫টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তবে এসব আশ্রয়কেন্দ্রে এখনও কারও আশ্রয় নেওয়ার প্রয়োজন পড়েনি। আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেটের সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে গতকাল সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে ১৩২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। পরে গতকাল সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ১ মিলিমিটার এবং সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এ বৃষ্টি এখনও অব্যাহত।

এদিকে আকস্মিক অতিবৃষ্টির কারণে সিলেট নগরের বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতা নিরসনে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে জরুরি যোগাযোগের জন্য কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে বলে এক অফিস আদেশে জানিয়েছেন সিটি কর্পোরেশনের সচিব আশিক নূর। অফিস আদেশে বলা হয়, সিটি কর্পোরেশনের দ্বিতীয় তলার ২০৫ নম্বর কক্ষে এ কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়। এ কক্ষের দায়িত্বে আছেন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আলী আকবর। তার মুঠোফোন নম্বর: ০১৭১১৯০৬৬৪৭। এছাড়া জলাবদ্ধতা নিরসনে সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে থাকবেন প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান ও প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ একলিম আবদীন।

সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও ওয়ার্ড সচিবদের নিজেদের অধিক্ষেত্রে অবস্থান করে সংশ্লিষ্ট এলাকা পরিদর্শনের পাশাপাশি জলাবদ্ধতা নিরসনে দ্রুততম সময়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যও অফিস আদেশে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

গতকাল শনিবার বেলা দেড়টার দিকে যোগাযোগ করলে সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বলেন, তিনি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে গোয়াইনঘাট উপজেলায় যাচ্ছেন। গতকাল কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় গিয়েছিলেন। তবে সিলেটে কোনো নদ-নদীর পানি এখনো বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি। স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।

হাতিয়ায় ঝড়ে শতাধিক কাঁচা ঘর ও ৬৩ কিলোমিটার সড়কের ক্ষতি : সাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় ঝড়-বৃষ্টিতে শতাধিক কাঁচা ঘর, ৭০টি দোকান ও অন্তত ৬৩ কিলোমিটার কাঁচা-পাকা সড়কের ক্ষতি হয়েছে। গতকাল শনিবার হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় জানিয়েছে, টানা ভারি বর্ষণ ও জোয়ারের পানিতে নিঝুম দ্বীপ, চর ঈশ্বর, নলচিরা, সুখচর, তমরদ্দি, সোনাদিয়াসহ নয়টি ইউনিয়নে ১২৫টি কাঁচা ঘর ও ৭০টি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া ৭০টি গবাদি পশু, ৫৭ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক, ছয় কিলোমিটার পাকা সড়ক, তিনটি কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেইসঙ্গে জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে ৭৩টি পুকুরের মাছ। হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আলাউদ্দিন বলেন, ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ২০০ পরিবারকে সরকারিভাবে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। আজও ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন ইউনিয়ন শুকনো খাবার বিতরণ করা হবে। এজন্য এক লাখ টাকা সরকারি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া নিঝুম দ্বীপের জন্য সরকারিভাবে ৫০০ বস্তা শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে; যা হাতে পেলে দ্রুত সেখানে নিয়ে বিতরণ করা হবে বলে জানান তিনি। সেইসঙ্গে সব এলাকায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে জিআর চাল ও ঘর মেরামতের জন্য ঢেউটিন বরাদ্দ দেওয়া হবে বলে জানান ইউএনও। সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে এবং ব্যক্তি উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করা হচ্ছে বলে জানান আলাউদ্দিন।

তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়া

বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ বিতরণ সময় এবং বিভিন্ন মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তদের বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে বাদ পড়াদের তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে।

দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ৪৬ ঘণ্টা পর লঞ্চ চলাচল শুরু : বৈরী আবহাওয়ার কারণে ভারি বৃষ্টি হওয়ায় ৪৬ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল পৌনে ৭টার দিকে লঞ্চ চলাচল শুরু হয়। গত বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে দুর্ঘটনা এড়াতে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ।

দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটের ম্যানেজার নুরুল আনোয়ার মিলন বলেন, ‘বৈরী আবহাওয়ার প্রভাব কেটে যাওয়ায় প্রায় ৪৬ ঘণ্টা পর দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে। বর্তমানে এই নৌপথে ২০টি লঞ্চ চলাচল করছে।’ বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাটের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন জানান, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বৈরী আবহাওয়ার কারণে চার ঘণ্টা ফেরি বন্ধ থাকার পর চলাচল শুরু হয়েছিল। দৌলতদিয়া প্রান্তে কোনো যানবাহনের সিরিয়াল নেই। ঘাটে আসামাত্রই সেগুলো ফেরিতে উঠতে পারছে। বর্তমানে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ছোট-বড় ১২টি ফেরি যাত্রী ও যানবাহন পারাপার করছে।

নদীর স্রোতে ভেসে যাওয়া বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার : খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার বাবুছড়া ইউনিয়নের মাইনি নদীর স্রোতে ভেসে যাওয়া এক বৃদ্ধের মরদেহ প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল ৭টা ১০মিনিটে রাঙামাটি ফায়ার স্টেশনের ডুবুরি দলের অফিসার সিদ্দিকুর রহমানের নেতৃত্বে একটি ডুবুরি দল ঘটনাস্থল থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরের কার্টুরুং ছড়া থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন দীঘিনালা থানার ওসি মোহাম্মদ জাকারিয়া। ওসি জানান, তড়িৎ চাকমা গতকাল সকাল আনুমানিক ৮টায় নদীতে ভেসে আসা কাঠ ধরতে গিয়ে প্রবল স্রোতে ভেসে যান।

স্থানীয়রা খোঁজ করেও তাকে উদ্ধার করতে পারেনি। এর আগে, জেলার লক্ষ্মীছড়িতে খালে মাছ ধরতে গিয়ে পানির স্রোতে ভেসে নিখোঁজ উক্রাচিং মারমার (১৯) মরদেহ স্থানীয়দের সহায়তায় গত শুক্রবার বিকালে উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স। কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় ঘটনাস্থল থেকে ৫০ মিটার দূরে খাল থেকে লাশটি উদ্ধারের কথা জানান লক্ষ্মীছড়ি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সাব অফিসার (ভারপ্রাপ্ত কমকতা) রফিক আহমদ। উদ্ধারের পর পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ ঘটনায় লাশ সৎকারের জন্য উপজেলা নির্বাহী কমকর্তা সেতু বড়ুয়ার মাধ্যমে পরিবারের লোকজনকে ২৫ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত