চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আওয়ামী লীগের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। গতকাল রোববার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এদিন ১৩৫ পৃষ্ঠার এবং অভিযোগ প্রমাণে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত, দালিলিক প্রমাণসহ ভিডিও অডিও কলের বিস্তারিত উল্লেখ করে মোট ৮ হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র ট্রাইব্যুনালে দাখিল করেন। সাক্ষী করা হয়েছে ৮১ জনকে। এই বিচারকাজ সারা বিশ্বকে দেখাতে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ট্রাইব্যুনালের শুনানি সরাসরি টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়। এই মামলায় পুলিশের তৎকালীন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এর মধ্যে গ্রেপ্তার রয়েছেন। শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান পলাতক। ১৬ জুন এই মামলার তিন আসামিকে হাজির করার নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। তারপর এই ঘটনায় প্রথম বিবিধ মামলা হয় ট্রাইব্যুনালে। সেই বিবিধ মামলার ভিত্তিতে গতকাল আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। এখন ট্রাইব্যুনালে এটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়েছে। আনুষ্ঠানিক অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ এই তিনজনের বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়। গত ১২ মে এই মামলায় চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছিল ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। নিয়ম অনুযায়ী, ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা প্রথমে চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। এরপর চিফ প্রসিকিউটর সেই তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করেন এবং আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আকারে ট্রাইব্যুনালে দাখিল করেন। পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মোট তিনটি মামলা হয়। এর মধ্যে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। এছাড়া আওয়ামী লীগ শাসনামলের সাড়ে ১৫ বছরে গুম-খুনের ঘটনায় একটি মামলায় তাকে আসামি করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অপর মামলাটি হয়েছে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়।
ট্রাইব্যুনালের আমলে নেওয়া পাঁচটি অভিযোগ-
সুনির্দিষ্ট অপরাধ-১: ১৪ জুলাই ২০২৪ তারিখ গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আসামি শেখ হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে আসামি আসাদুজ্জামান খান কামাল ও আসামি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ তৎকালীন সরকারের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্ররোচনা, সহায়তা ও সম্পৃক্ততায় তাদের অধীন ও নিয়ন্ত্রণাধীন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও সশস্ত্র আওয়ামী সন্ত্রাসী কর্তৃক ব্যাপকমাত্রায় ও পদ্ধতিগতভাবে নিরীহ নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর আক্রমণের অংশ হিসেবে হত্যা, হত্যার চেষ্টা, নির্যাতন এবং অন্যান্য অমানবিক আচরণ করার অপরাধগুলো সংঘটনের প্ররোচনা, উসকানি, সহায়তা, সম্পৃক্ততা, অপরাধ সংঘটন প্রতিরোধে ব্যর্থতা, অপরাধ সংঘটনের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের শান্তি প্রদান না করা এবং ষড়যন্ত্র করার অপরাধ। যা আসামিদের জ্ঞাতসারে সংঘটিত।
সুনির্দিষ্ট অপরাধ-২: আসামি শেখ হাসিনা কর্তৃক ছাত্রজনতার ওপর হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের হত্যা করে নির্মূলের নির্দেশ এবং তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসামি আসাদুজ্জামান খান কামাল ও তৎকালীন আইজিপি আসামি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন কর্তৃক আসামি শেখ হাসিনার ওই নির্দেশ বাস্তবায়নে তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন এবং অধীন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নির্দেশনা দিয়ে কার্যকর করার মাধ্যমে অপরাধ সংঘটনের নির্দেশ প্রদান, সহায়তা, সম্পৃক্ততা এবং ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন করেছে, যা তাদের জ্ঞাতসারে কার্যকর করা হয়েছে।
সুনির্দিষ্ট অপরাধ-৩: আসামি শেখ হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্য এবং মারণাস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনরত ছাত্রজনতাকে হত্যার নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে আসামি আসাদুজ্জামান খান কামাল ও আসামি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ তৎকালীন সরকারের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্ররোচনা, সহায়তা ও সম্পৃক্ততায় তাদের অধীন ও নিয়ন্ত্রণাধীন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও সশস্ত্র আওয়ামী সন্ত্রাসী কর্তৃক ব্যাপকমাত্রায় ও পদ্ধতিগতভাবে নিরীহ নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর আক্রমণের অংশ হিসেবে গত বছরের ১৬ জুলাই রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে স্বল্প দূরত্ব থেকে সরাসরি নিরীহ নিরস্ত্র আন্দোলনকারী ছাত্র আবু সাঈদের বুক লক্ষ্য করে বিনা উসকানিতে একাধিক গুলি চালিয়ে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করার মাধ্যমে উল্লিখিত আসামিদের জ্ঞাতসারে এবং তাদের কর্তৃক অপরাধ সংঘটনের নির্দেশ, প্ররোচণা, উসকানি, সহায়তা, সম্পৃক্ততা এবং ষড়যন্ত্রসহ অন্যান্য অমানবিক আচরণ করার মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন।
সুনির্দিষ্ট অপরাধ-৪: আসামি শেখ হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্য এবং মারণাস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতাকে হত্যার নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে আসামি আসাদুজ্জামান খান কামাল ও আসামি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ তৎকালীন সরকারের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্ররোচনা, সহায়তা ও সম্পৃক্ততায় তাদের অধীন ও নিয়ন্ত্রণাধীন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও সশস্ত্র আওয়ামী সন্ত্রাসী কর্তৃক ব্যাপকমাত্রায় ও পদ্ধতিগতভাবে নিরীহ নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর আক্রমণের অংশ হিসেবে গত বছরের ৫ আগস্ট ঢাকা মহানগরীর চাঁনখারপুল এলাকায় আন্দোলনরত নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর তৎকালীন সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য কর্তৃক নিরীহ নিরস্ত্র ছয়জন ছাত্র-জনতাকে গুলি করে হত্যা করার মাধ্যমে উল্লিখিত আসামিদের জ্ঞাতসারে এবং তাদের কর্তৃক হত্যার নির্দেশ, প্ররোচনা, উসকানি, সহায়তা, সম্পৃক্ততা এবং ষড়যন্ত্র করার মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন।
সুনির্দিষ্ট অপরাধ-৫: আসামি শেখ হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্য এবং মারণাস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতাকে হত্যার নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে আসামি আসাদুজ্জামান খান কামাল ও আসামি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ তৎকালীন সরকারের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্ররোচনা, সহায়তা ও সম্পৃক্ততায় তাদের অধীন ও নিয়ন্ত্রণাধীন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও সশস্ত্র আওয়ামী সন্ত্রাসী কর্তৃক ব্যাপকমাত্রায় ও পদ্ধতিগতভাবে নিরীহ নিরস্ত্র ছাত্রজনতার ওপর আক্রমণের অংশ হিসেবে গত বছরের ৫ আগস্ট ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানার সামনে এবং আশপাশের এলাকায় আন্দোলনরত নিরস্ত্র ছাত্রজনতার ওপর তৎকালীন সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের কর্তৃক নিরীহ নিরস্ত্র ৬ ছাত্র-জনতাকে গুলি করে তাদের মধ্যে ৫ জনের মৃত দেহ এবং একজনকে জীবিত ও গুরুতর আহত অবস্থায় আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার অপরাধ। যা আসামিদের জ্ঞাতসারে সংঘটিত হয়েছে। উক্তরূপ হত্যার নির্দেশ, প্ররোচনা, উসকানি, সহায়তা, সম্পৃক্ততা, ষড়যন্ত্র এবং অন্যান্য অমানবিক আচরণের মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন। গত বছরের ৫ আগস্ট ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানাধীন আশুলিয়ায় ৬ জনকে গুলি করে হত্যা ও লাশ পোড়ানোর অপরাধের মাধ্যমে হত্যা, নির্যাতন, মৃত ও জীবিত অবস্থায় আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে আমানবিক আচরণ করার অপরাধগুলো সংঘটনের নির্দেশ, প্ররোচনা, উসকানি, সহায়তা, সম্পৃক্ততা এবং ষড়যন্ত্র।
ট্রাইব্যুনালে এ মামলা উপস্থাপন করা হয়েছে ‘চিফ প্রসিকিউটর বনাম আসামি শেখ হাসিনা গং’ মামলা হিসেবে। সূচনা বক্তব্যে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের নারকীয় বীভৎসতা বাংলাদেশ ও বিশ্ব বিবেককে স্তব্ধ করে দিয়েছিল। ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার উদগ্র বাসনা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার চূড়ান্ত অপব্যবহার করে ব্যাপকভিত্তিক ও পদ্ধতিগতভাবে আক্রমণের মাধ্যমে সংঘটিত নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞ ও সহিংসতা বাংলাদেশকে পরিণত করেছিল ৫৬ হাজার বর্গমাইল বিস্তৃত একটি বধ্যভূমিতে। আমরা এই বিচার শুরু করেছি জাতির ইতিহাসের সেই বেদনাদায়ক অধ্যায়ে সংঘটিত অপরাধের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে, যেখানে নিরস্ত্র, নিরীহ সাধারণ নাগরিক, বিশেষ করে তরুণ ছাত্র-যুবা, নারী ও শিশু, যারা একটি ন্যায়ভিত্তিক ভবিষ্যতের জন্য বৈষম্য ও কোটা পদ্ধতি নামক কুণ্ডপ্রথার অবসানের দাবিতে অহিংস ও ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনে অংশ নিয়েছিল।’০
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘চব্বিশের এই আন্দোলনে বৈষম্যবিরোধী ও সরকারের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণকারী অসংখ্য ‘নিরীহ, নিরস্ত্র ও সাধারণ মানুষ’ নির্বিচার হত্যাকাণ্ড ও ভয়াবহ সহিংতার শিকার হন। আসামিদের নির্দেশে ও তাদের নেতৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণে থাকা রাষ্ট্রীয় বাহিনী, রাজনৈতিক দল ও অঙ্গ সংগঠনের সদস্যদের দ্বারা সংঘটিত হয় হত্যা, অঙ্গহানি, গ্রেপ্তার, নির্যাতন, গুম, চিকিৎসা প্রদানে বাধা এবং মৃত ও জীবিত মানুষকে একত্রে পুড়িয়ে দেওয়ার মত ঘৃণ্য মানবতাবিরোধী অপরাধগুলো।’
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘উপস্থাপিত সাক্ষ্য-প্রমাণ এবং গণমাধ্যমে প্রকাশিত চিত্র বিশ্লেষণে দেখা যায়, এটি ছিল একটি কোঅর্ডিনেটেড এক্সটারমিনেশন প্ল্যান, যা ছিল বিস্তৃত ও সিসটেমেটিক। রাষ্ট্রের প্রশাসন যন্ত্র, পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা, অন্যান্য বাহিনীসমূহ এবং সরকারি দলের রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং তাদের অধীনস্থ সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠীসমূহ এই পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনে অংশগ্রহণ করে।’ চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘এ মামলা বিচারের জন্য প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে প্রত্যক্ষদর্শী ও জীবিত ভিক্টিমদের সাক্ষ্য, অপরাধ সংগঠনের সময় ধারণ করা ভিডিও, ড্রোন ও সিসিটিভি ভিডিও, আসামিদের টেলিফোন সংলাপের অডিও ক্লিপ, ডিজিটাল এভিডেন্সগুলোর ফরেনসিক রিপোর্ট, আসামিগণের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি, গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত তথ্য, ছবি এবং ভিডিও, জাতীয় আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রস্তুত করা রিপোর্ট এবং বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সংস্থা থেকে পাওয়া ‘অফিসিয়াল ডকুমেন্টস’ ট্রাইব্যুনালে জমা দিচ্ছে। এই বিচার কেবল অতীতের প্রতিশোধ নয়। এটি ভবিষ্যতের জন্য প্রতিজ্ঞা। আমরা প্রমাণ করতে চাই, একটি সভ্য সমাজ, যেখানে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন থাকবে- সেখানে গণহত্যা কিংবা মানবতাবিরোধী অপরাধ সহ্য করা হবে না। যে দেশে বিচার থাকবে, সেখানে কেউ আইনের ঊর্ধ্বে থাকতে পারে না, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে থাকবে না।