ঢাকা শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

সংস্কার ও বিচারে অগ্রগতি হলে ফেব্রুয়ারিতেই ভোট

সংস্কার ও বিচারে অগ্রগতি হলে ফেব্রুয়ারিতেই ভোট

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে আগামী রোজার আগেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তাব করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা গেলে ২০২৬ সালে রোজার আগের সপ্তাহে নির্বাচন করা সম্ভব। সেক্ষেত্রে সংস্কার ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে বিচার প্রক্রিয়া চলছে তার দৃশ্যমান অগ্রগতির প্রয়োজন হবে। গতকাল শুক্রবার যুক্তরাজ্যের লন্ডনের ডরচেস্টার হোটেলে স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় (বাংলাদেশ সময় বেলা ২টা) বৈঠকটি শুরু হয়। সকাল সাড়ে ১০টায় (বাংলাদেশ সময় বেলা সাড়ে ৩টা) বৈঠক শেষ হয়। বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টায় যৌথ ব্রিফিং হয়। এতে ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, অত্যন্ত সৌহার্দ্যমূলক পরিবেশে অধ্যাপক ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। তারেক রহমান প্রধান উপদেষ্টার কাছে আগামী বছরের রমজানের আগে নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রস্তাব করেন। দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াও মনে করেন, ওই সময় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে ভালো হয়। প্রধান উপদেষ্টা বলেন যে, তিনি আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছেন। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা গেলে ২০২৬ সালের রমজান শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহেও নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে সেই সময়ের মধ্যে সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতি অর্জন করা প্রয়োজন হবে। তারেক রহমান প্রধান উপদেষ্টার এ অবস্থানকে স্বাগত জানান এবং দলের পক্ষ থেকে তাকে ধন্যবাদ জানান। প্রধান উপদেষ্টাও তারেক রহমানকে ফলপ্রসূ আলোচনার জন্য ধন্যবাদ জানান।

এদিকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেড় ঘণ্টার বৈঠক শেষে দুই পক্ষের প্রতিনিধিরা তাদের সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন। গতকাল শুক্রবার লন্ডনে বৈঠক-পরবর্তী যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বৈঠকের আলোচনায় তারা সন্তুষ্ট হয়েছেন। বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টায় ওই হোটেলেই যৌথ সংবাদ সম্মেলন হয়। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন। লিখিত বিবৃতি পড়ে শোনানোর পর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, সাতটি প্রশ্ন নেওয়া হবে। আপনারা জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে প্রশ্নগুলো করবেন। এরপর প্রশ্নোত্তর পর্ব শুরু হয়। এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, অধ্যাপক ড. ইউনূসের সঙ্গে তারেক রহমানের বৈঠকে জুলাই সনদ নিয়ে কোনো কথা হয়েছে কি না। এ প্রশ্নের উত্তর দেন বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘জুলাই সনদ নিয়ে তো এরইমধ্যে আলোচনা চলছে দেশে এবং এ ব্যাপারে আমাদের মধ্যে এরইমধ্যে সিদ্ধান্ত আছে যে, ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই সনদ হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সংস্কারের ব্যাপারেও একই উত্তর আমাকে দিতে হয় যে, ঐকমত্যের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা সংস্কার ও জুলাই সনদ দুটোই করব। সবার ঐকমত্যের পরিপ্রেক্ষিতে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এবং আমি নিশ্চিত, খুব কম সময়ের মধ্যে আমরা সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারব। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সম্পূরক প্রশ্নেরও জবাব দেন আমীর খসরু। তিনি বলেন, ‘ঐকমত্য যেখানে হবে, স্বাভাবিকভাবে ঐকমত্যের পরিপ্রেক্ষিতে যে সিদ্ধান্ত হবে, স্বাক্ষরিত তো হবেই, না হওয়ার কোনো কারণ তো নেই।

নির্বাচনের তারিখ ও তারেক রহমানের ফেরা প্রসঙ্গে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, নির্বাচনের একটি সঠিক তারিখ নির্ধারণে আসলে সমস্যাটা কোথায়? এ প্রশ্নের উত্তর দেন নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান। তিনি বলেন, ‘এর কোনো সমস্যাই নেই। আমরা কোনো সমস্যা দেখছি না, কেউ দেখলে পরে এটা ভুল দেখছেন। নির্বাচনের সম্পর্কে আজকে যৌথ বিবৃতিতে আমরা বলে দিয়েছি দুইপক্ষই এবং আমরা আশা করব, নির্বাচন কমিশন শিগগিরই একটা তারিখ ঘোষণা করবে। বৈঠকে কি শুধু নির্বাচন নিয়েই কথা হয়েছে, নাকি দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ ও অন্যান্য বিষয় নিয়েও কথা হয়েছে এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নে বিএনপি নেতা আমীর খসরু বলেন, ‘সব বিষয়ে আলোচনা তো হবে, স্বাভাবিক। আমরা তো নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে সামনের দিকে এগোচ্ছি। সবাই আমরা চাই, দেশ গড়ার যে প্রত্যয় আমরা নিয়েছি, আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে সেই কাজটা করব।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ গড়ার যে প্রত্যয় নিয়ে আমরা সবাই ঐকমত্যে এসেছি, শুধু নির্বাচনের আগে নয়, নির্বাচনের পরও সেটা আমরা সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাব।’

একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, সংস্কার নিয়ে যে দীর্ঘ আলোচনা হচ্ছিল, সেই সংস্কার বিষয়ে বিএনপির বা তারেক রহমান সাহেবের পক্ষ থেকে আপনারা কীভাবে রিঅ্যাক্ট (প্রতিক্রিয়া) করেছেন? বিএনপির সিনিয়র নেতা আমীর খসরু বলেন, সংস্কার নিয়ে বর্তমান সরকারের যে একটা বিশাল রূপরেখা তৈরি হয়েছে, একটা বিশাল তালিকা, সেই তালিকা নিশ্চয়ই আজকে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করা হয়েছে। সংস্কার বিষয়ে আপনাদের মতামত কী? বিএনপি কীভাবে সেটাকে গ্রহণ করছে? এ প্রশ্নের উত্তরে আমীর খসরু বলেন, ‘এটা তো পরিষ্কার। এখানে না বোঝার কোনো কারণ নেই। বিষয়টা হচ্ছে সংস্কার। প্রধান উপদেষ্টা সাহেব, তারেক রহমান সাহেব আমরা সবাই একই কথা বলছি, যে বিষয়গুলোতে তো ঐকমত্য হবে, সেগুলোই তো সংস্কার হবে, তাই না?’

তিনি আরও বলেন, ‘সংস্কারের বিষয় তো একটা চলমান প্রক্রিয়া। এমন না যে সব সংস্কার এখনই শেষ হয়ে যাবে। নির্বাচনের আগেও কিছু সংস্কার হবে, যেখানে ঐকমত্য হবে আর নির্বাচনের পরও সংস্কার অব্যাহত থাকবে। কারণ, আমরা যে দেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়েছি, সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা সবাই অনুভব করছে। সুতরাং আগে-পরে সংস্কার চলতে থাকবে। এরপর আরেকজন সাংবাদিক জানতে চান, তারেক রহমান দীর্ঘদিন ধরে এখানে (লন্ডন) অবস্থান করছেন এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাও বলেছেন, তার দেশে ফিরতে কোনো বাধা নেই। তার এ ব্যাপারে বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না বা তিনি কবে দেশে ফিরতে পারেন? এ প্রশ্নের উত্তর দেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে আলোচনার কোনো প্রয়োজনীয়তা আছে বলে আমরা মনে করি না। তারেক রহমান সাহেব যখনই ইচ্ছা দেশে ফিরে যেতে পারবেন। সুতরাং এটার সিদ্ধান্ত তিনি নেবেন, সময়মতো।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, তার সময়ে, অর্থাৎ নির্বাচনের আগেই শেখ হাসিনার হত্যাযজ্ঞের বিচারপ্রক্রিয়া তিনি শেষ করতে চান এবং পরে তাকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন এমন কথা উল্লেখ করে একজন সাংবাদিক সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন করেন, এ ব্যাপারে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে কি না এবং যদি সেটা হয়ে থাকে, তাহলে এই নির্বাচনের রূপরেখার সঙ্গে এটা কোনো প্রভাব ফেলবে কি না? এর জবাবে নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান বলেন, ‘যৌথ বিবৃতিতে এর উত্তর দেওয়া আছে। সংস্কার এবং বিচার দুই বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতির কথা বলা হয়েছে এবং আমরা মোটামুটি কনফিডেন্ট (আত্মবিশ্বাসী) যে এই অগ্রগতি আমরা নির্বাচনের আগেই দেখতে পাব।’ খলিলুর রহমানের কথার সঙ্গে আমীর খসরু একটি বাক্য যুক্ত করেন, ‘সম্পন্ন করা যাবে। এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপি নির্বাচন কমিশনের সংস্কার ছাড়া নির্বাচনে যাবে না বলে ঘোষণা করেছে। এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না? এ প্রশ্নের উত্তরে বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ বলেন, ‘এ ব্যাপারে এখানে আলোচনার কোনো সুযোগ আছে বলে আমি মনে করি না।’ এ প্রশ্নে নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানও কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘এটা তাদের (এনসিপি) জিজ্ঞেস করুন। প্রত্যেকটি দলের নিজস্ব মতামত আছে। তবে আমরা সবাইকে নিয়ে নির্বাচনটা করতে চাচ্ছি।’

আরেকজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, তাহলে কি আমরা বলতে পারি যে, এপ্রিলে ঘোষিত যে নির্বাচনের রূপরেখা, সেখান থেকে সরকার কিছুটা সরে আসতে চাচ্ছে বা আসবে? এর উত্তরে নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান বলেন, ‘যৌথ ঘোষণায় এই বিষয়টি সুস্পষ্টই বলা আছে। আপনারা শুনেছেন। যদি সব কাজ সময়মতো আমরা করতে পারি এবং বিচার ও সংস্কারের ব্যাপারে পর্যাপ্ত অগ্রগতি হয়, তাহলে নিশ্চয়ই সেটা করা যেতে পারে।’ খলিলুর রহমানের এ উত্তরের সঙ্গে আমীর খসরু তার কিছু কথা যুক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘বৈঠকটা প্রথমে আমাদের দুই সাইডের ডেলিগেশনের (প্রতিনিধিদল) সঙ্গে হয়েছে এবং পরে তারা দুজন (অধ্যাপক ইউনূস ও তারেক রহমান) ওয়ান-টু-ওয়ান দীর্ঘ সময় আলোচনা করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে শেষ প্রশ্ন ছিল, ‘আপনারা কি সন্তুষ্ট?’ এ প্রশ্নের উত্তর সমস্বরে দেন খলিলুর রহমান ও আমীর খসরু মাহমুদ। দুজনই বলেন, ‘নিশ্চয়ই সন্তুষ্ট।’ এর সঙ্গে আমীর খসরু বলেন, ‘আমরা তো বলছি নির্বাচনের আগে নয়, নির্বাচনের পরও নতুন বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’ সংবাদ সম্মেলনের শেষবাক্যে খলিলুর রহমান বলেন, ‘সন্তুষ্ট না হলে তো যৌথ ঘোষণা আসার কথা নয়।’

এর আগে, বৈঠক শেষে পার্ক লেনের হোটেল থেকে তারেক রহমানকে হাসিমুখে বের হতে দেখা গেছে। আনুষ্ঠানিকভাবে বৈঠক শুরু হওয়ার আগে দুই শীর্ষ ব্যক্তিত্ব নিজেদের মধ্যে কুশল বিনিময় করেন। এক পর্যায়ে তারেক রহমান প্রধান উপদেষ্টার কাছে জানতে চান আপনার শরীর কেমন? জবাবে তিনি বলেন, ‘এই তো চলছে টেনেটুনে!’ এরপর মা বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে সালাম পৌঁছে দেন তারেক রহমান।

জবাবে ড. ইউনূস বলেন, ‘আপনার আম্মাকেও আমার সালাম দেবেন।’ পরে দুজন লন্ডনের আবহাওয়া নিয়ে কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আজকের এখানকার আবহাওয়াটা চমৎকার।’ তারেক রহমানও তার কথায় সায় দেন। এরপর ফটোসেশন শেষে আনুষ্ঠানিক বৈঠক শুরু হয় তাদের মধ্যে। এরও আগে, বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টার কিছু আগে ডরচেস্টার হোটেলে পৌঁছান তারেক রহমান। তাকে সেখানে স্বাগত জানান অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমসহ অন্যরা।

ড. ইউনূসকে যে উপহার দিলেন তারেক রহমান : অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সেই বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টাকে তিনটি উপহার দিয়েছেন তিনি। সেখানে একটি কলম ও দুইটি বই ছিল। গতকাল বৈঠকের মধ্যে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের জন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান উপহারগুলো তুলে দেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ফেসবুকে এক পোস্টে তা জানিয়েছেন। পোস্টে দেখা যায়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান শুভেচ্ছা উপহার হিসেবে একটি ফাউন্টেন পেন, Greta thunberg-এর ‘No one is to small to make a difference’ এবং ‘nature mattersÕ- Edited by Mona Arshi and karen mccarthy woolf বই দুটি রয়েছে।

নির্বাচন এগিয়ে আনার বার্তা দেশের গণতন্ত্রের জন্য সুসংবাদ -মির্জা ফখরুল : লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকটি সত্যিকার অর্থে একটি টার্নিং পয়েন্টে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এই বৈঠকে পর একটি যৌথ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সেখানে পরিষ্কার করে বলা হয়েছে- দুই নেতার বৈঠকটি অত্যন্ত সৌহার্দপূর্ণ হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে উপস্থিতি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব। মির্জা ফখরুল বলেন, বৈঠকের আলোচনা বিষয়গুলোর মধ্যে প্রধান ছিল আগামী নির্বাচনের ইস্যু। সেখানে তারেক রহমানের প্রস্তাব ছিল, আগামী এপ্রিলে নির্বাচনের যে তারিখ ঘোষণা করা হয়েছিল, সেটা উপযুক্ত সময় নয় বিধায় এগিয়ে নিয়ে আসা। সেখানে জাতি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে লক্ষ্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা সম্মত হয়েছেন, তারা ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে আগামী নির্বাচনের সময়সীমা নির্ধারণ করেছেন।

ব্রিফিংয়ের পরে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, এই বৈঠকে আগামী রমজানের আগেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে যে ফলপ্রসূ ঐকমত্য হয়েছে, তা অনিশ্চয়তা কাটিয়ে দেশের মানুষের জন্য এনেছে স্বস্তির বার্তা, নতুন আশার আলো। তিনি বলেন, পুরো বাংলাদেশের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির সংযোগ ঘটিয়ে এপ্রিলের মতো অনাকাঙ্ক্ষিত সময় থেকে সরে এসে নির্বাচনের জন্য একটি যৌক্তিক সময়সীমা নির্ধারণের জন্য প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ। তিনি জনগণের প্রত্যাশা উপলব্ধি করে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন- যা নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সবার আগে বাংলাদেশ- এই নীতিকে হৃদয়ে ধারণ করে তারেক রহমান বরাবরের মতোই প্রমাণ করেছেন, তার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেশের স্বার্থ, সার্বভৌমত্ব ও স্থিতিশীলতা। মির্জা ফখরুল আরও বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, বৃহত্তম রাজনৈতিক দল ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের এই সৌহার্দ্য ও সহমতের মধ্য দিয়ে জয় হবে গণতন্ত্রের, জয় হবে বাংলাদেশের, জয় হবে জনগণের। এখন প্রত্যাশা, অন্তর্বর্তী সরকার নিজ অবস্থান অটুট রেখে আগামী রমজানের আগেই নির্বাচন আয়োজনের সর্বাত্মক প্রস্তুতি শুরু করবে।

প্রসঙ্গত, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে শুরুতে আগামী ডিসেম্বর থেকে পরবর্তী জুনের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলা হয়। কিন্তু বিএনপির পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট করে ডিসেম্বরের মধ্যেই ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের দাবি তোলা হয়। সবশেষ নিজেদের অনড় অবস্থান আরও পরিষ্কার হয় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ডিসেম্বরেই নির্বাচন হতে হবে এমন বক্তব্যে। অবশ্য সম্প্রতি সরকারের পক্ষ থেকে এপ্রিলে নির্বাচনের কথা বলায় ভোটের সময় নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে কিছুটা উত্তাপ্ত ছড়ায়। লন্ডনে ড. ইউনূস-তারেকের বৈঠকে সেই উত্তাপ কিছুটা কমবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত